স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বিজিবির প্রতিটি সদস্যকে সুশৃঙ্খল ও স্মার্ট সৈনিক হিসেবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান। আজ বুধবার সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ দরবারে সকল পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের উদ্দেশ্যে একথা বলেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বাহিনীর সকল সদস্যের জন্য একটি বিশেষ দিন আজ। গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্যমন্ডিত এই বাহিনী আজ ২২৯ বছরে পদার্পণ করল।
প্রতিষ্ঠালাভের পর থেকে এ বাহিনী ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষা এবং সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি চোরাচালান রোধ, নারী-শিশু ও মাদক পাচার রোধসহ যেকোনো আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনে অত্যন্ত দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছে। স্বাধীনতার পর দেশগঠন এবং দেশ মাতৃকার সেবায় এ বাহিনীর অবদান অনস্বীকার্য। দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ যেকোনো দুর্যোগময় মুহূর্তে জনগণের সেবায় তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের স্থানীয় ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিশ্বস্ততা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে বিজিবি দেশবাসীর আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিজিবি মহাপরিচালক আরো বলেন, ২০১০ সালে বাহিনী পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় কমান্ডস্তর বিকেন্দ্রীকরণ করে নতুন নতুন রিজিয়ন, সেক্টর, ব্যাটালিয়ন ও বিওপি স্থাপন ও প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। উন্নয়নের ক্রমধারায় ৭৩টি আধুনিক কম্পোজিট বিওপি নির্মাণ এবং হেলিকপ্টার, এপিসি, এটিভি, এয়ার বোট, এটিজিডব্লিউসহ অত্যাধুনিক অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি সংযোজনের মাধ্যমে বিজিবি একটি বিশ্বমানের আধুনিক ত্রিমাত্রিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে জল, স্থল ও আকাশপথে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনে সক্ষম।
তিনি বিজিবির প্রতিটি সদস্য সততা, আনুগত্য, কর্তব্য নিষ্ঠা ও শৃঙ্খলা-এই চারটি গুণের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে ‘সবার আগে দেশ, এরপর বাহিনীর স্বার্থ, এরপর অধীনস্থ ও সহকর্মীদের স্বার্থ এবং সর্বশেষে নিজ স্বার্থকে বিবেচনায় রেখে বিজিবিকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এর আগে বুধবার যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজিবি দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে দিবসের কর্মসূচি অনুযায়ী ফজরের নামাজের পর পিলখানাসহ সারা দেশে বিজিবির সকল ইউনিটের মসজিদে বিজিবির অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর মহাপরিচালকের সচিবালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজিবির রেজিমেন্টাল পতাকা উত্তোলন এবং সকাল ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পিলখানাস্থ ‘সীমান্ত গৌরব’-এ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিজিবি মহাপরিচালক।
এরপর বেলা পৌনে ১১টায় পিলখানাস্থ সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবি মহাপরিচালক বিজিবি সদস্যদের বিশেষ দরবার গ্রহণ করেন। দরবার শেষে পদোন্নতি প্রাপ্ত ৪ জনকে অনারারী সুবেদার মেজর হতে অনারারী সহকারী পরিচালক এবং ২ জনকে অনারারী সহকারী পরিচালক হতে অনারারী উপপরিচালক পদে র্যাংক ব্যাজ পরানো হয়। পরে পিলখানায় আয়োজিত বিজিবি মহাপরিচালক সকল পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের সাথে প্রীতিভোজে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় বিজিবির সকল কর্মকর্তা, জুনিয়র কর্মকর্তা ও অন্যান্য পদবির সৈনিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন