যুদ্ধবিরতির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস রবিবার বলেছেন, গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি তিনি গাজার চিকিৎসাকর্মীদেরও প্রশংসা করেছেন, যাঁরা ক্রমবর্ধমান ভয়াবহ পরিস্থিতিতে তাঁদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় ডাব্লিউএইচওর মহাপরিচালক বলেছেন, ‘গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থার ধ্বংস একটি ট্র্যাজেডি।
আমরা এখনই যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছি।’
টেড্রোস বলেছেন, ‘নিরাপত্তাহীনতা এবং আহত রোগীদের প্রবাহের মুখে আমরা চিকিৎসক, নার্স, অ্যাম্বুল্যান্সচালক এবং আরো অনেককে জীবন বাঁচানোর জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে দেখছি।’
৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর গাজায় সর্বকালের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হয়। এর পর থেকে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্যসেবার অবস্থা সম্পর্কে শঙ্কা প্রকাশ করছে।
ইসরায়েলি পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে এএফপির তথ্য অনুযায়ী, হামাসের হামলায় ইসরায়েলে প্রায় এক হাজার ১৪০ জন নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। পাশাপাশি প্রায় ২৫০ জন জিম্মি হয়েছে, যাদের মধ্যে ১২৯ জন এখনো গাজায় জিম্মি রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
অন্যদিকে হামাস শাসিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গাজায় বিমান থেকে ব্যাপক বোমাবর্ষণসহ ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে ২০ হাজার ৪২৪ জন নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
এএফপি বলেছে, গাজার বিস্তীর্ণ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
২৪ লাখ মানুষ ইসরায়েলি অবরোধের কারণে পানি, খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের মারাত্মক ঘাটতি সহ্য করেছে। গাজার মূল ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ৯টি এখন আংশিকভাবে চালু রয়েছে, যার সব কয়েকটি দক্ষিণে অবস্থিত এবং সেখানে উপচে পড়া ভিড় রয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে সুরক্ষিত হাসপাতালগুলো যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বারবার ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হামাসের বিরুদ্ধে হাসপাতালের নিচে সুড়ঙ্গ নির্মাণ এবং মেডিক্যাল স্থাপনাগুলোকে কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ এনেছে। তবে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীটি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডাব্লিউএইচও হাসপাতাল, অ্যাম্বুল্যান্সসহ গাজায় স্বাস্থ্যসেবার ওপর ২৪৬টি আক্রমণ নথিভুক্ত করেছে, যার ফলে ৫৮২ জন মারা গেছে এবং ৭৪৮ জন আহত হয়েছে।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন