দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এই সময়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশে প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে সিলেট-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন বিশ্বনাথ পৌরমেয়র মুহিবুর রহমান। তবে এখনো প্রতীক বরাদ্দ না পাওয়ায় আনুষ্ঠানিক প্রচারণার সুযোগ না থাকলেও তাঁর পক্ষে ‘ট্রাক’ প্রতীকের পোস্টার ছাপিয়ে প্রচার শুরুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
যদিও এতে নিজের ‘সম্মতি’ নেই বলে জানিয়েছেন সিলেট-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে সিলেটভিউ-কে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
গত বছরের ২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত পৌরনির্বাচনে সিলেটের বিশ্বানাথে প্রথম পৌরমেয়র নির্বাচিত হন সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা ও দুইবারের উপজেলা চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জগ প্রতীক নিয়ে ৮ হাজার ৪৭৪ ভোট পেয়েছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফারুক আহমদ নৌকা প্রতীক নিয়ে পান ৩ হাজার ২৬৩ ভোট।
পৌরমেয়র নির্বাচিত হওয়ার ১ বছরের মাথায় তিনি সংসদ সদস্য প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসন থেকে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। তবে ইলেকশন কমিশনের ‘স্থানীয় সরকারে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা পদ ছেড়ে প্রার্থী হতে হবে’ এই নির্দেশনাকে অমান্য করে মেয়র পদে বহাল থেকে মুহিব মনোনয়ন কিনেন। ফলে যাচাই-বাছাইয়ে তাঁর প্রার্থিতা বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান। তবে নাছোড়বান্দা মুহিব প্রার্থিতা ফিরে পেতে ইলেকশন কমিশনে গত ১০ ডিসেম্বর আপিল করেন। পাঁচ দিন পর আপিলটি খারিজ করে দেয় ইসি।
এরপর প্রার্থিতা ফেরাতে হাইর্কোটের দ্বারস্থ হন মুহিবুর রহমান। গত ২০ ডিসেম্বর রিট শুনানির ধার্য্য তারিখে রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাটর্নি জেনারেল আমীর উদ্দিন অংশ নিয়ে রিটের বিরোধিতা করেন। পরে বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও ইকবাল করিম’র যৌথ বেঞ্চ রিটের আদেশের জন্যে ২৭ ডিসেম্বর পরবর্তী তারিখ ধার্য্য করেন। কিন্তু এর দুইদিন আগেই রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) রিটের আদেশ দেন হাইকোর্ট। আদেশে বিচারপতি মো. ইকবাল কবির এবং বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ মুহিবের প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
এদিকে, হাইকোর্ট মুহিবের প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দিলেও সেটি লিখিত আকারে এখনো জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে পৌঁছেনি। ফলে তাঁর আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নামার সুযোগ এখনো নেই। কিন্তু সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত থেকে বিশ্বনাথের বিভিন্ন স্থানে ‘ট্রাক’ প্রতীকসম্বলিত মুহিবুর রহমানের নির্বাচনি প্রচারণার পোস্টার সাটানো দেখা গেছে। এছাড়া বিভিন্ন গাড়িতেও লাগানো দেখা গেছে এমন পোস্টার।
এ বিষয়ে সিলেট-২ আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী বিশ্বনাথ পৌরমেয়র মুহিবুর রহমান সিলেটভিউ-কে বলেন- আমার কিছু কর্মী-সমর্থক এটি করেছেন। এতে আমার সম্মতি নেই। আমি গতকাল (সোমবার) রাতে তাদের এ বিষয়ে নিষেধ করেছি।
এ প্রসঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সার্বিক সমন্বয়ক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকালে সিলেটভিউ-কে বলেন- আমাদের কাছে এখনো উচ্চ আদালতের লিখিত আদেশ এসে পৌঁছেনি, তাই ওই প্রার্থীকে (মুহিব) প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- বরাদ্দের আগে প্রতীক দিয়ে পোস্টার ছাপিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা চালানোর কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন