বুলবুল আহমেদ, নবীগঞ্জ হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ||
আমার অনেক বয়স অইছে। কত মানুষ সরকারর ভাতা পাইছইন। কেউ কেউ ভাতা পাইয়া মরি গেছইন। আমি কিতা ই বাংলাদেশের মানুষ নায়নি? আমার ভাতার টেকা দেও। বাক্কা দিন ঐ গেছে কম্বুটারে দরখাস্ত করছি, ভাতার টাকা পাইনা কেন? আইজকু ভাতার টেকা না লইয়া বাড়িত যাইতামনায়। আঞ্চলিক ভাষায় মনের আফসোস ও আবেগ নিয়ে কথাগুলো বলেছেন সরকারের ভাতা থেকে বঞ্চিত লালমতি বিবি। তিনি হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ৪নং দীঘলবাক ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মশিবপুর গ্রামের মৃত মতুল মিয়ার স্ত্রী। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি আসেন দীঘলবাক ইউনিয়নের কামারগাঁও বাজারস্থ স্থানীয় ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা মিসবাউর রহমানের কাছে। তিনি এসে তাকে আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, আমার অনেক বয়েস অইছে। আমার লগর কত মানুষ সরকারের ভাতা পাইছইন। অনেকই ভাতা লইয়া মরি গেছইন। আমি কিতা ই দেশের মানুষ নায়নি? আমার ভাতার টেকা দেও। বাক্কা দিন ঐ গেছে কম্পুটারে দরখাস্ত করছি তে ভাতার টেকা পাইনা কেন? আইজ ভাতার টেকা না লইয়া বাড়িত যাইতামনায়।
এ সংবাদ পেয়ে ঐ মহিলার সাথে একান্ত আলাপকালে তিনি বলেন, তার স্বামী মারা যাওয়ার পর ৩ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে দুর্বিসহ জীবন-যাপন করেন। ছেলেরা বিয়ে করে পৃথক পৃথকভাবে পরিবার নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। একমাত্র মেয়ে বিধবা হয়ে পিত্রালয়ে এসে তার কাঁধে পড়েছে। প্রায় পনেরও শতাংশ ভূমির ভিটেবাড়িতে দুইকক্ষ বিশিষ্ট টিনের ঘরে তার মেয়ে নাতী- নাতনীকে নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। আত্মীয়- স্বজন ও এলাকার বিত্তশালী লোকজন মাঝে মধ্যে সহযোগীতা করলে ও নুন আনতে পান্তা ফুড়ায় তাদের। এ ব্যাপারে ওই গ্রামের কয়েকজন প্রবীণ মুরব্বি বলেন, লালমতি বিবি একজন অসহায় মহিলা। তিনি সরকারের বিধবা-বয়স্ক ভাতা পাওয়ার যোগ্য।
এব্যাপারে দু,বারের স্থানীয় ইউপি সদস্য খালেদ হাসান দুলন বলেন, লালমতি বিবি একজন অসহায় মহিলা। কয়েক মাস পূর্বে ভাতার জন্য স্থানীয় ডিজিটাল সেন্টারে দায়িত্বপ্রাপ্ত উদ্যোক্তা মিসবাউর রহমানের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতার আবেদন করেছেন। তিনি ওয়েটিং তালিকায় আছেন। অপরদিকে, ওই এলাকার সচেতন মহলের লোকজনদেন দাবি সরকারের যে কোন একটি ভাতায় যেনো অসহায় লালমতি বিবির নাম অন্তর্ভূক্তি করা হয়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন