ভোটযুদ্ধে এবার মৌলভীবাজারের দুইটি আসনে আওয়ামী লীগের দুই নবীন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নেমেছেন। একজন হলেন, মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে নৌকার প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাফুফের পরিচালক। তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় থাকলেও অন্যজন একেবারে নতুন মুখ। তিনি হলেন, মৌলভীবাজার-৩ (সদর ও রাজনগর) আসনের নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান।
তবে স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত না থেকে নতুন মুখের এই প্রার্থী নৌকার মনোনয়ন নিয়ে আসায় শুরুতেই চমক দেখিয়েছেন। জেলা জুড়ে তিনি শুরু থেকেই সর্বমহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন।
মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে নৌকার প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। তাঁর বেড়ে উঠা ও রাজনীতি সিলেট কেন্দ্রীক। কুলাউড়া তাঁর নানাবাড়ি। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা এটাকে কাজে লাগিয়ে সফল হতে চাচ্ছেন। তিনি ইতিমধ্যে জেলার আওয়ামী লীগ নেতাদের সমর্থন নিয়ে মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর জনসংযোগে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নেছার আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রাধাপদ দেব সজল, যুবলীগ সভাপতি সৈয়দ রেজাউর রহমান সুমন, সহ-সভাপতি এডভোকেট গৌছ উদ্দিন নিক্সন, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সেলিম হকসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দেখা গেছে।
শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল চা শ্রমিকের উন্নয়ন, গত ১৫ বছরে কুলাউড়ার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ভোটাররা মনে করছেন তাঁকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীদের মোকাবেলা করতে হবে। ঘরের শত্রু বিভিষণ এই প্রবাদটি নির্বাচনে দেখা যেতে পারে। তবে যেহেতু তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক সে কারণে সবক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন।
অপরদিকে, মৌলভীবাজার-৩ (সদর ও রাজনগর) আসনের নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান শুরু থেকেই এক অদৃশ্য চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে কাজ করছেন। তাঁর সাথে জনসংযোগে প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী ও প্রয়াত সংসদ সদস্য আজিজুর রহমানের বলয়ের নেতাকর্মীরা কাজ করছেন। এছাড়া রাজনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শাহজাহান খাঁন, টেংরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান টিপু খাঁন ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সুব্রত পুরকায়স্থ রয়েছেন। অন্যদিকে সংরক্ষিত নারী সাংসদ সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা সায়রা মহসীন, জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি মুহিবুর রহমান তরপদার, মসুদ আহমদ, সৈয়দ নওশের আলী খোকন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালিক তরপদার সুয়েব, কেন্দ্রীয় যুবলীগের উপ মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দা সানজিদা শারমিন ও শুরু থেকেই জনসংযোগে রয়েছেন।
এই আসনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী মাঠে না থাকায় নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান অনেকটা নির্ভার রয়েছেন। নিজের বুদ্ধি, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত, কৌশল ও দক্ষতায় তিনি শক্ত কাউকেই প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নামতে দেননি। অনেককেই ধরাশায়ী করে বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।
যদিও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী মাঠে নেই তবুও মৌলভীবাজারের চারটি আসনের মধ্যে তিনিই একমাত্র প্রার্থী যিনি ভোটারদের সবচেয়ে বেশি উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাঠে কাজ করছেন। তিনি বিজয়ী হলে যদি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করেন তাহলে ভবিষ্যতে তিনি অনেক উদাহরণ তৈরি করতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এই দুই আসনে যদি এই দুই প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত হয় তাহলে দীর্ঘদিন পরে মৌলভীবাজারের আদি ঘরাণার রাজনীতির বাইরে নতুন দুইজনকে পাবে মৌলভীবাজারবাসী। যাদের হাত ধরে চলমান উন্নয়ন কাজসহ নতুন উন্নয়নের দেখা পাবে জনসাধারণ।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন