পুরো ভারতজুড়ে মালদ্বীপ বয়কটের ডাক উঠেছে। রাজনীতিবীদ থেকে তারকা মুখ- এমনকি ভারতের সাধারণ মানুষও মালদ্বীপ বর্জনের ডাকে সুর মিলিয়েছেন। সবাই বলছেন, মালদ্বীপ নয়, ভারতীয়দের গন্তব্য হোক লাক্ষাদ্বীপ! বলিউড তারকা থেকে ক্রিকেট তারকাদের অনেকেই এ বিষয়ে সহমত প্রকাশ করেছেন।
সম্প্রতি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে মালদ্বীপের মন্ত্রীদের করা অবমাননাকর মন্তব্যের কারণে পুরো ভারতে চলছে ‘বয়কট মালদ্বীপ’ ট্রেন্ড।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লাক্ষাদ্বীপের মতো অন্যান্য ভারতীয় দ্বীপের প্রচারও শুরু করেছেন। সালমান খান থেকে শুরু করে অক্ষয় কুমার, কঙ্গনা রনৌত ও শ্রদ্ধা কাপুর পর্যন্ত অনেকেই ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমর্থনে পোস্ট শেয়ার করেছেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) নিজেদের মতামত জানাচ্ছেন।
সালমান খান পোস্ট করে লিখেছেন, ‘এটি দেখে খুব ভালো লাগছে যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লাক্ষাদ্বীপকে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন সৈকতে পরিণত করেছে। আর সব থেকে ভালো দিক হল এটি আমাদের নিজেদের।
’
অক্ষয় কুমার লিখেছেন, ‘মালদ্বীপের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে ভারতীয়দের উপর এমন ঘৃণ্য এবং বর্ণবাদী মন্তব্যের নিন্দা প্রকাশ করছি। এটি দেখে খুব বিস্মিত হলাম যে তাঁরা এমন একটি দেশ নিয়ে মন্তব্য করেছে যেখানকার সর্বাধিক সংখ্যক পর্যটক তাদের দেশে যায়। আমরা আমাদের প্রতিবেশী দেশের জন্য ভালো কিন্তু কেন আমরা এই ধরনের অপমান, ঘৃণা সহ্য করব? আমি মালদ্বীপে বহুবার গিয়েছি এবং সবসময় এটির প্রশংসা করেছি। কিন্তু আমাদের মর্যাদা সবার আগে।
আমরা অবশ্যই আমাদের নিজস্ব পর্যটনকে সমর্থন করবো।’
অভিনেত্রী কঙ্গনা রনৌত লিখেছেন, ‘বেশিরভাগ মানুষের জন্য পর্যটন কেবল বিলাসিতা নয়, এটি বরং প্রকৃতির সঙ্গে অন্বেষণ, সৌন্দর্যের উৎসের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করা এবং সর্বোপরি সৈকতের স্পর্শ উপভোগ করা। আপনাদের এত বর্বর এবং অশ্লীল বর্ণবাদী মন্তব্যের জন্য লজ্জা প্রকাশ করা উচিত।’
মালদ্বীপ নিয়ে হঠাৎ কেন ভারতীয়দের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া? ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোই বলছে, মালদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ছিলেন ভারতপন্থী। ইব্রাহিম মহম্মদ সোলির আমলে তাই দুই দেশের সুসম্পর্ক ছিল।
তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন মালদ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেসময় দুই দেশের মধ্যে এই মর্মে চুক্তি ছিল মালদ্বীপের জলসীমায় পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালাবে ভারতীয় নৌ সেনারা। এছাড়াও মালদ্বীপ ভারতীয় সেনাবাহিনী মোতায়েন ছিল। ১৯৬৫ সালে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকেই মালদ্বীপের প্রতি বারবার সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে ভারত। সেদেশের প্রতিরক্ষাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া থেকে বিশেষ আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা, মালদ্বীপের জন্য অনেক কিছুই করেছে ভারত। প্রতিবছর ভারতের বহু পর্যটক মালদ্বীপ ছুটি কাটাতে যান।
তবে পরিস্থিতি বদলে যায় মালদ্বীপের চীনপন্থী মোহাম্মদ মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর। তিনি স্থানীয়দের মধ্যে এই ধারণা ঢুকিয়ে দেন মালদ্বীপে প্রভাব বিস্তার করছে ভারত। এরপরই সেখানে ভারতীয়দের প্রতি বিদ্বেষ বাড়তে থাকে। এমনকি মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরানোরও দাবি ওঠে। এছাড়াও নানান ইস্যুতে দুই দেশের সম্পর্কের ক্রমাগত অবনতি হয়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন