স্বার্থের শুভেচ্ছা-অভিনন্দন!

আমাদের ভালোবাসা এখন মনের চেয়ে গাছের ডালে ঝোলে বেশি। সামনে প্রশংসা করা মানুষগুলোই আড়ালে বাঁশের ঝাড় তোলে। দেয়ার বেলায় একটা ফুটোও ভরে দিতে বাকি রাখে না।

রাজু আহমেদ।  কলাম লেখক।  |

ফেসবুক কেন্দ্রিক জন্মদিনের শুভেচ্ছা সংক্রান্ত প্রায় সবগুলো অভিনন্দন স্বার্থে টইটম্বুর! রাজনৈতিক নেতা কিংবা বড় ভাই, অফিসের বস কিংবা সিনিয়র, অচেনা হ্যাডম সম্মৃদ্ধ ব্যক্তি হয়তো জানেই না কোন স্বজন মঙ্গলালোকে জীবন ভরিয়ে দিলো! আপুদের শুভেচ্ছা-স্বাগতমের কিচ্ছা না হয় এ গল্পতে না টানি! তবে মাঝে মাঝে জীবনে নারী হয়ে না জন্মানোর বৈষম্যে মুষড়ে পড়ি!

 

আমাদের ভালোবাসা এখন মনের চেয়ে গাছের ডালে ঝোলে বেশি। সব অমুক-তমুক ভাই, উদীয়মান আওলাদ, পাড়াতো পিশো আর মুসলমানীর শিশুর দোয়া কামনা আর শুভেচ্ছা বিতরণে এ রাষ্ট্রে গ্রাফিক্স ডিজাইনের ব্যবসা দাঁড়ায়ে গেছে! আর কিছু হোক বা না হোক ব্যবসায়ীদের উপকার হইছে! দরিয়ার এ পাড় কাইত হয় তো অন্যপাড় জাগে! বিলকুল-হরদম!

 

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের কত শতাংশ ছেলেমেয়ে পাঠ্য বইয়ের বাইরে দু'টো গল্প আর তিনটে কবিতা আওড়ায় সে হিসাব মহাপ্রভূ রাখেন বোধহয়! হয়তো আগামীর পৃথিবীতে ওসব গপ্পো-সপ্পো কোন কাজে আসবে না! কিন্তু সংকীর্ণতায় মনটা যে বিষিয়ে উঠছে সে খবর ক'জন রাখি! ফেসবুক কেবল ত্বরিৎ ফল পেতে উদগ্রীব করাচ্ছে! কোন কঠিন বিষয়ের মোকাবেলা করতে হলেই জাতি তাতিয়ে ওঠে! এ জাতি কেবল তেলে চলছে! দুঃসময় মেকাবিলার জন্য রিজার্ভেও যে কিছু তৈল মজুদ রাখতে হয়-সে শিক্ষাটুকু এখানে অনুপস্থিত! শিক্ষার হালচাল সে কথাই বলে!

 

আজকাল অগ্রজ প্রজন্মের থেকে খুব আফসোস শুনি! সেদিনও যে সম্মান এখানে ছিল এদিনে তা নাই......নাই! সম্মান ধুঁয়ে জাতি পানি খাবে? তবে চঞ্চলতা আর বেয়াদবির মধ্যে যে জাতি ফারাক করতে পারে না সে অনুজদেরও একদিন অনুজ আসবে! সব কিছুর ব্যাস্তানুপাতিক হবে!আজকাল পশম ওঠার আগেই জল দোলা খায়! দিক-বিজয়ের ঘোড়া রেসের মাঠে খাবি খায়!  বড্ড প্রয়োজনে এখানে সেখানে জন্মাচ্ছে জীবনের রস! কৃত্রিম রসে কতোদিন কষ হবে?

 

সামনে প্রশংসা করা মানুষগুলোই আড়ালে বাঁশের ঝাড় তোলে। দেয়ার বেলায় একটা ফুটোও ভরে দিতে বাকি রাখে না। অর্জনের সংবাদে দাঁতমুখ খিঁচিয়ে বলে,শালা পাইলো কেমনে! আমার এক চোখ নিয়ে প্রভূ, পড়শীর দু'চোখ নাও-এমন আরাধনায় যে কতশত সন্ধ্যাবাতি সকাল বেলাতেও জীবন পোড়ায়-তার কি ইয়াত্তা আছ! সবাই কেবল অধীন থাকুক, পরাধীনতার ছাতা স্বাধীনতাই অগ্রগামী রাখে!

 

জীবন বুঝতে হলে সাবেক হন! সাধারণের কাতারে যতোক্ষনে না দাঁড়াবেন কিংবা দাঁড়াতে বাধ্য হবেন ততোদিনে  আসল সত্য বুঝবেন না; হয়তো খুঁজবেনও না! তবে সময় আপনার পাখনা ঠিক ঠিক কাটবে! হম্বি-তম্বি গর্তমূখী হবে! ক্ষমতার ছড়ি পোড়ানো শেষ হলে মাছিরাও ভয় পেতে ভুলে যায় আর মাঝিরাও ভাটায় নামে! কাজেই আগামী ভেবে আগাম প্রস্তুতিতে সম্মূখ মসৃণ হবে। কবি ও কবিতার ভবিষ্যত এ কথাই মানে!

 

 

মন্তব্যসমূহ (১)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন