কানাডায় যে দুই বড় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সিলেটিদের

gbn

দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় ইউরোপের স্বপ্ন সিলেটিদেরই বেশি। গত বছর সাড়ে ৪ লাখেরও অভিবাসী নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় ইউরোপের দেশ কানাডায় যাওয়ার হিড়িক পড়ে সিলেটিদের। গত ৬ মাসে কয়েক হাজার ছাত্র-ছাত্রী, তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীসহ নানা বয়েসিরা সিলেট থেকে পাড়ি জমিয়েছেন। তবে বর্তমানে যারা যাচ্ছেন তাদের গিয়ে পড়তে হচ্ছে নানা সংকটে।

 

 

 


জানা গেছে, কানাডায় আবাসন সংকট পুরনো সমস্যা। এই অবস্থায় গত কযেক মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে যাওয়া রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসী সে দেশে অবস্থান করায় এ সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এছাড়া আগের মতো সহজেই মিলছে না কাজ। অভিবাসী বেড়ে যাওয়ায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রবেশে নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করছে কানাডা। এছাড়া বর্তমানে যেসব শিক্ষার্থী স্নাতক শেষ করে দেশটিতে অবস্থান করছেন- তাদেরকেও কাজের অনুমোদনপত্র (ওয়ার্ক পারমিট) দেওয়া হচ্ছে না। আর এমন পরিস্থিতিতে অনেকটা সংগ্রাম করে স্বপ্নের কানাডাতে টিতে থাকতে হচ্ছে সিলেটিদের।

 


বিশ্বের উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সামর্থ্যবান শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষাগ্রহণ ও বসবাসের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় দেশগুলোর মধ্যে কানাডা অন্যতম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতি বছর লাখ লাখ শিক্ষার্থী কানাডায় যান। যান সিলেটের শিক্ষার্থীরাও। গত কয়েক মাসে বেড়েছে এ যাওয়ার হার। কানাডার অর্থনীতির জন্যও এটি বেশ লাভজনক। প্রতিবছর বিদেশি শিক্ষার্থীদের আগমন সংক্রান্ত বিভিন্ন খাত থেকে গড়ে ১ হাজার ৬৪০ কোটি ডলার যোগ হয় দেশটির অর্থনীতি।

 

 


তবে সোমবার (২২ জানুয়ারি) কানাডার অভিবাসনমন্ত্রী মার্ক মিলার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সম্প্রতি কানাডায় বেশ কিছু সাইনবোর্ডসর্বস্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকারের কোনো যোগাযোগ নেই। এছাড়া শিক্ষা, ক্যাম্পাস, শিক্ষার্থীদের সুবিধাসংক্রান্ত সরকারের যেসব নীতিমালা রয়েছে, সেসবের কোনোটিই প্রতিষ্ঠানগুলো মানছে না এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও তারা অতিরিক্ত ফি রাখছে। এই প্রতারণাচক্র বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।’

 

 

তিনি আরও বলেন- গত বছর ২০২৩ সালে যত সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থীকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিলো, শতকরা হিসেবে এই সংখ্যা তার চেয়ে ৩৫ শতাংশ কম। তবে এই বিধিনিষেধ স্থায়ী নয়। আগামী ২ বছর পর্যন্ত এই ব্যবস্থা জারি থাকবে। আর চলতি (২০২৪ সাল) বছরে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৬০ হাজার শিক্ষার্থীকে প্রবেশ-অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কানাডা।

 


সাড়ে ৩ লাখ শিক্ষার্থীকে প্রবেশ-অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি সিলেটি তরুণ-তরুণীদের জন্য সুখবর হলেও সে দেশে আবাসন ও কাজ সংকট দেখা দেওয়ায় সদ্য যাওয়া সিলেটিরা পড়েছেন বিপাকে।

 

 


আরিফুল হক নামে সিলেটের এক যুবক শিক্ষাভিসায় গত মাসে গিয়েছেন কানাডায়। গিয়েই পড়েছেন আবাসন সংকটে। টরন্টো শহরে একটি মেসে থাকেন প্রতি মাসে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭০ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে। তিনি জানান- আর একটি পুরো বাসা ভাড়া নিলে গুনতে হয় ২ হাজার কানাডিয়ান ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার মতো। আর বাসা বলতে বুঝায়- একটি বেডরুম, একটি ছোট্ট রান্নাঘর ও একটি   বাথরুম। ফলে পরিবার নিয়ে সে দেশে যাওয়া সিলেটিরা থাকা নিয়ে বেশ বিপাকে আছেন।

 

 

 

মারুফ হাসান নামের দক্ষিণ সুরমার আরেকজন বলেন- এখন কানাডায় কাজ পাওয়া বেশ কষ্টকর। যেসব শিক্ষার্থী স্নাতক শেষ করেও এখানে অবস্থান করছেন তাদেরকে পর্যন্ত কাজের অনুমোদনপত্র (ওয়ার্ক পারমিট) দেওয়া হচ্ছে না। ফলে অনেককেই দেশ (বাড়ি) থেকে টাকা আনতে হচ্ছে। তবে ৩-৪ মাস কষ্ট করে থাকতে পারলে কাজের সুযোগ তৈরি হয় বা সন্ধান মিলে।

 

 


এই দুই সমস্যা ছাড়া তীব্র শীতেও অনেক সিলেটি কষ্টে আছেন বলে সেখানে থাকা কয়েকজন এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন