বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য দুঃসংবাদ দিলো কানাডা

হাকিকুল ইসলাম খোকন ,সিনিয়র প্রতিনিধিঃ রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসীর আগমন এবং তার জেরে দিন দিন আবাসন সংকট তীব্র হতে থাকায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করছে কানাডা। এমনকি বর্তমানে যেসব শিক্ষার্থী স্নাতক শেষ করে দেশটিতে অবস্থান করছেন, তাদেরকেও কাজের অনুমোদনপত্র (ওয়ার্ক পারমিট) দেওয়া হচ্ছে না।কানাডায় যেতে আগ্রহীদের জন্য ‘দুঃসংবাদ’। দেশটির সরকার এক ঘোষণায় জানিয়েছে,এ বছর থেকে পড়তে ইচ্ছুক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের এখন থেকে ব্যাংকে আগের তুলনায় দ্বিগুণ অর্থ দেখাতে হবে। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন এই নিয়ম কার্যকর হবে। । দেশটির অভিবাসনমন্ত্রী মার্ক মিলার গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘কানাডায় পড়তে আসার ক্ষেত্রে যেসব শর্ত রয়েছে সেগুলোর সঙ্গে জীবনব্যয়ের বিষয়টি সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সমন্বয় করা হয়নি। এর ফলে কানাডায় আসা শিক্ষার্থীরা দেখতে পান সেখানে থাকার মতো পর্যাপ্ত অর্থ তাদের কাছে নেই। একারণেই নতুন এ পদক্ষেপ।’ দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১ জানুয়ারি থেকে কানাডা গমনে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জীবনব্যয় (কস্ট অব লিভিং) খরচ হিসেবে ব্যাংকে ২০ হাজার ৬৩৫ ডলার দেখাতে হবে। এর আগে ১০ হাজার ডলারের প্রমাণ দেখাতে হতো। ২০০০ সাল থেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জীবনব্যয় হিসেবে এই পরিমাণ অর্থ দেখাতে হতো। দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, জীবনব্যয়ের খরচ বেড়ে যাওয়ায় এটি দ্বিগুণ করা হলো। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিদেশি শিক্ষার্থীদের এই জীবনব্যয় খরচের সঙ্গে ভ্রমণ ও টিউশন ফিস তো থাকবেই। তাই দেশটিতে পড়তে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য এখন আরও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াল। তবে সরকারের এই নীতির কারণে গত কয়েক বছর ধরে বিদেশি শিক্ষার্থীদের আগমনের যে জোয়ার শুরু হয়েছে, তার জেরে ইতোমধ্যে দেশটিতে আবাসন সংকট শুরু হয়েছে। দিন দিন তীব্র হচ্ছে এই সংকট। সেই সঙ্গে সরকারের এই সিদ্ধান্তের সুযোগ নিচ্ছে কানাডার কিছু সাইনবোর্ড সর্বস্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সরকার নির্ধারিত মান (স্ট্যান্ডার্ড) না থাকা সত্ত্বেও তারা বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করছে। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্ক মিলার বলেন, ‘সম্প্রতি কানাডায় বেশ কিছু সাইনবোর্ড সর্বস্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকারের কোনো যোগাযোগ নেই এবং শিক্ষা, ক্যাম্পাস, শিক্ষার্থীদের সুবিধা সংক্রান্ত সরকারের যেসব নীতি বা মান রয়েছে, সেসবের কোনোটিই প্রতিষ্ঠানগুলো মানছে না শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও তারা অতিরিক্ত ফি রাখছে। এই প্রতারণা চক্র বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।’ ‘এছাড়া অতিরিক্ত অভিবাসীদের কারণে আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য পরিষেবা খাতেও চাপ বাড়ছে। দুই বছরের মধ্যে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে পরিবর্তন আসবে বলে আমরা মনে করছি।’ কানাডার বিদেশি শিক্ষার্থীদের অ্যাডভোকেসি সংস্থা কাসার পরিচালক ম্যাথুজ সালমাসি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করে বলেছেন, ‘বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রবেশাধিকার সীমিত না করে সরকারের উচিত ছিল শিক্ষা প্রশাসনকে শক্তিশালী এবং আবাসন সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।’ তবে টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশটির প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন