উত্তর কোরিয়ার সমরসজ্জা ও তাইওয়ানকে ঘিরে উত্তেজনার মতো কারণে এশিয়া মহাদেশে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বার্থের সংঘাত আরো ঘনীভূত হচ্ছে। বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে শীতল সম্পর্কের কারণে উচ্চ পর্যায়ে যথেষ্ট সংলাপের অভাব উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে তুলছে। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান ও চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই শুক্র ও শনিবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে মিলিত হচ্ছেন।
প্রায় দুই মাস আগে সান ফ্রান্সিসকোয় এপেক শীর্ষ সম্মেলন চলাকালানী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসার প্রায় দুই মাস পর আবার উচ্চ পর্যায়ে দুই দেশের বৈঠক হচ্ছে।
বাইডেন ও শি দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে হটলাইন চালু করা এবং সামরিক পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছিলেন। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন উইলসন বলেন, সুলিভান ও ই সেই কৌশলগত যোগাযোগ এবং দায়িত্বশীলভাবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক চালু রাখার উদ্দেশ্যে মিলিত হচ্ছেন।
এদিকে ওয়াং ইর ব্যাঙ্কক সফরের সময়ে চীনের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সুন ওয়াইডংয়ের নেতৃত্বে এক চীনা প্রতিনিধিদল উত্তর কোরিয়া সফর করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বেড়ে চলা উত্তেজনার প্রেক্ষিতে পিয়ংইয়ং চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরো নিবিড় করার উদ্যোগ নিচ্ছে।
গত সেপ্টেম্বর মাসে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন রাশিয়ায় গিয়ে সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার ঘাটতি পূরণ করতে সে দেশকে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করে কিম নিজের অবস্থান আরো জোরালো করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠছে।
এ ছাড়া গত কয়েক মাসে কিম চীনের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের আরো ঘন ঘন আমন্ত্রণ জানিয়ে সে দেশের সঙ্গেও সম্পর্ক নিবিড় করতে চাইছেন। সেই সঙ্গে একের পর এক অস্ত্র পরীক্ষা করে কোরীয় উপদ্বীপেও উত্তেজনা বাড়িয়ে চলেছেন তিনি।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে রাশিয়া ও চীন মার্কিন উদ্যোগে উত্তর কোরিয়ার ওপর আরো কড়া নিষেধাজ্ঞা চাপানোর বিরোধিতা করে আসছে।
শুধু উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে নয়, তাইওয়ানের প্রশ্নেও চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। চীনের তর্জনগর্জনের মাঝে তাইওয়ান বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণের মেয়াদ চার মাস থেকে এক বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে। বৃহস্পতিবারই প্রথম দফায় সেই প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। জনসাধারণের একটা বড় অংশ দীর্ঘ সামরিক প্রশিক্ষণ পেলে চীনের সম্ভাব্য হামলার মুখে তাইওয়ান আরো জোরালো প্রতিরোধ করতে পারবে বলে সে দেশের সরকার আশা করছে।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন