প্রতিষ্ঠার ২ বছরেও সিলেট ওয়াসা বোর্ডের অফিস বরাদ্দ ও জনবল নিয়োগ এখনো হয়নি। শুরু হয়নি সিলেট ওয়াসার কোনো কার্যক্রম। তবে এটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তক্রমে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে ওয়াসার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয় অধ্যাপক ডা. একেএম হাফিজকে। তবে সিলেট মহানগররে এখনো পানি সরবরাহ করে আসছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। নগরবাসীর অভিযোগ চাহিদার অর্ধেক পানিও সরবরাহ করতে পারছে না সিসিক।
সিসিক সূত্রে জানা যায়, নগরীর সাবেক ২৭টি ওয়ার্ডে প্রায় ১৭ হাজার পানির গ্রাহক রয়েছেন। তাদেরই নিয়মিত পানি সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরো ১৫টি ওয়ার্ড। বর্ধিত ওয়ার্ডে আরো অন্তত অর্ধলাখ গ্রাহক রয়েছে, যারা পানি সরবরাহের আওতার বাইরে রয়েছে। বর্ধিত এলাকার অনেক মহল্লায় পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় তীব্র সংকট রয়েছে। দৈনিক পানির চাহিদা আট কোটি লিটার থাকলেও প্রায় সাড়ে চার কোটি লিটার সরবরাহ করছে সিটি করপোরেশন। সে হিসাবে চাহিদার তুলনায় ৪৭ শাতাংশের বেশি পানি ঘাটতি থাকছে প্রতিদিন।
জান যায়, পানির সমস্যা সমাধানে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রক্রিয়াধীন চেঙ্গেরখাল পানি শোধনাগার প্রকল্পটির কাজ থমকে রয়েছে বেশ কিছুদিন থেকে। আবার কুশিঘাট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের দুটি পাম্প থেকে প্রতিদিন ২ কোটি ৮০ লাখ লিটার পানি পাওয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে শোধন করা হচ্ছে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ লিটার। তাছাড়া প্রতিদিন প্রায় ২০ লাখ লিটার পানি উত্তোলন করা তোপখানার শতবর্ষী পাম্পটিও প্রায় বন্ধ রয়েছে।
২০২২ সালের ২ মার্চ নগরির পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যা নিরসনে সিলেট ওয়াসা বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার দুই বছরেও সিলেট ওয়াসার অফিস বরাদ্দ ও জনবল নিয়োগ হয়নি। এটা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন নাগরিকরা।
এ প্রসঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের পানি শাখার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর সিলেটভিউ-কে বলেন, বর্তমানে একটি শোধনাগার ও ৪১টি গভীর নলকূপ থেকে পানির সরবরাহ করা হচ্ছে। নগরীতে প্রতিদিন সাড়ে চার কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। চাহিদা অনুপাতে আমরা তা সাধ্যমতো সরবরাহের চেষ্টা করছি। সিলেট ওয়াসা প্রতিষ্ঠা হলেও ওয়াসা বোর্ড গঠন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত নগরীর পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা বর্তমানের মতো পরিচালিত হচ্ছে। ২০১৪ সালে ২৭টি ওয়ার্ডের মানুষের চাহিদার কথা বিবেচনা করে চেঙ্গেরখাল পানি শোধনাগার প্রকল্পটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। বর্তমানে সিসিকের ওয়ার্ড সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪২। পানির চাহিদাও আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।
এ ব্যাপারে সিলেট ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম হাফিজ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমাকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে ঠিকই, তবে দুই বছরে এখনো বসার জায়গাটুকু পাইনি। পানি সমস্যাটি নগরবাসীর দীর্ঘদিনের। ওয়াসাকে গতিশীল করা গেলে নাগরিকদের উপকার হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন