ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, কয়েক মাসের মধ্যে গাজায় ‘সম্পূর্ণ বিজয়’ সম্ভব। ইসরায়েল সমর্থিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের জবাবে হামাস বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়েছিল। এরপরেই তিনি এ কথা জানান।
নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘হামাসের সঙ্গে আলোচনা করে কোনো কূল-কিনারা পাওয়া যাচ্ছে না এবং তাদের শর্তগুলোও উদ্ভট।’ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, ‘সম্পূর্ণ এবং চূড়ান্ত বিজয় ছাড়া অন্য কোনো সমাধান নেই।’ তিনি আরো বলেন, ‘হামাস যদি গাজায় টিকে থাকে, তবে পরবর্তী গণহত্যা শুধু সময়ের ব্যাপার।’
ইসরায়েল হামাসের পাল্টা প্রস্তাব গ্রহন করবে বলে আশা করা হয়েছিল।
কিন্তু ইসরায়েল এই প্রস্তাবের স্পষ্টভাবেই তিরস্কার করল এবং ইসরায়েলি কর্মকর্তারা হামাসের যুদ্ধ শেষ করার প্রচেষ্টাকে একেবারে অগ্রহণযোগ্য হিসেবে দেখছেন। হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, “নেতানিয়াহুর মন্তব্য ‘রাজনৈতিক সাহসিকতার একটি রূপ’ এবং তাঁর মন্তব্য থেকে এটাই বোঝা যাচ্ছে, তিনি সংঘাত চালিয়ে যেতে চান।”
একটি মিসরীয় সরকারি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, মিসর এবং কাতারের মধ্যস্থতায় নতুন করে আরেক দফা আলোচনা করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার কায়রোতে এই আলোচনা হতে পারে।
মিসর সব পক্ষকে চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য নমনীয়তা দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে বলে সূত্রটি। মঙ্গলবার হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে তাদের পাল্টা প্রস্তাব পেশ করেছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স হামাসের নথির একটি খসড়া দেখেছে এবং হামাসের এই শর্তাবলী প্রকাশ করেছে।
প্রথম পর্যায়: যুদ্ধে প্রথম ৪৫ দিনের বিরতিতে সব ইসরায়েলি নারী জিম্মি, ১৯ বছরের কম বয়সী পুরুষ, বৃদ্ধ এবং অসুস্থ ইসরায়েলিদের মুক্তি দেওয়া হবে। বিনিময়ে জেলে বন্দি ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের মুক্তি দেওয়া হবে।
এ ছাড়া গাজার জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে এবং হাসপাতাল ও শরণার্থী শিবির পুনর্গঠন শুরু করতে হবে।
দ্বিতীয় পর্যায়: বাকি ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি পুরুষ জিম্মি এবং বন্দিদের বিনিময় করা হবে। এরপর ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণরূপে গাজা ত্যাগ করবে।
তৃতীয় পর্যায়: উভয় পক্ষ দেহাবশেষ এবং মৃতদেহ বিনিময় করবে। প্রস্তাবিত চুক্তির ফলে গাজায় খাদ্য ও অন্যান্য সাহায্যের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে। যুদ্ধে ১৩৫ দিনের বিরতির শেষে যুদ্ধ শেষ করার জন্য আলোচনা শেষ হবে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলায় প্রায় এক হাজার ৩০০ মানুষ নিহত হয়। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েলি পাল্টা হামলায় ২৭ হাজার ৭০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং কমপক্ষে ৬৫ হাজার আহত হয়েছে।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন