রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগের মামলার রায় ফের পেছানো হয়েছে। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার রায় পেছাল।
গত ২১ জানুয়ারি রায় ঘোষণার কথা ছিল। সেদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ-১২ আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুন রায়ের তারিখ পিছিয়ে দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এ রায় রায় ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু একই কারণে আবার পেছানো হলো তারিখ। নতুন তারিখ পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মশিউর রহমান।
মামলার দুই আসামি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তখনকার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস এবং শাখা প্রধান জিনাত আক্তার জামিনে রয়েছেন।
রায় ঘোষণার তারিখ থাকায় বৃহস্পতিবার তাঁরা আদালতে হাজির হন। রায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারার এ মামলার তাঁদের সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ডের সঙ্গে অর্থদণ্ডও হতে পারে।
গত বছর ২৭ নভেম্বর বাদী ও আসামিপক্ষের চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। বিচারিক আদালতের রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে শেষ হবে মামলার বিচারকাজ।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৮ সালে ৩ ডিসেম্বর রাজধানীর শান্তিনগরের বাসায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী (১৫)। তার আগের দিন পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগে তাকে পরীক্ষা হল থেকে বের করে দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, অরিত্রী পরীক্ষায় মোবাইল ফোনে নকল নিয়ে টেবিলে রেখে লিখছিল। অন্যদিকে স্বজনদের দাবি, নকল করেনি অরিত্রী। এরপর অরিত্রীর বাবা-মাকে ডেকে নেওয়া হয় স্কুলে।
তখন অরিত্রীর সামনে তার বাবা-মাকে অপমান করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। ওই দিনই আত্মহত্যা করে সে।
এ ঘটনায় তার সহপাঠীরা বিক্ষোভে নামে। ৪ ডিসেম্বর তার বাবা দিলীপ অধিকারী আত্মহননে প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা করেন। ওই মামলায় অরিত্রীর শিক্ষকদের পুলিশ গ্রেপ্তারও করলেও পরে তাঁরা জামিন পান।
মামলার এজাহারে অরিত্রীর বাবা লেখেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়ের সামনে তাঁদের অপমান করে। ওই অপমান এবং পরীক্ষা দিতে না পারার মানসিক আঘাত সইতে না পেরে অরিত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ নাজনীন ও জিনাতকে আসামি করে মামলার অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক কামরুল হাসান তালুকদার। সেখানে বলা হয়, আসামিদের ‘নির্দয় ব্যবহার ও অশিক্ষকসুলভ আচরণ’ অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে। পরে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে নাজনীন ফেরদৌস ও জিনাত আক্তারের বিচার শুরু হয়। মামলার ১৮ সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্য নেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম। মামলার বাদী অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী, মা বিউটি অধিকারী, অরিত্রীদের বাড়ির নৈশ প্রহরী শুকদেব, অরিত্রীর বাবার সহকর্মী সনজয় অধিকারী, প্রতিবেশী মেরিনা মণ্ডল সাক্ষ্য দিয়েছেন এ মামলায়।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন