গোটা সপ্তাহের কর্মব্যস্ত জীবনের পর ছুটির দিনগুলো যেন একটু স্বস্তি নিয়ে আসে সবার জীবনে। ছুটির দিনে বেশিরভাগ মানুষের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম সিনেমা। টিভি কিংবা বড় পর্দায়, সিনেমা বা সিরিজ দেখা এখন মানুষের নিত্যদিনের অংশ হয়ে উঠছে। আর ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় এখন সবকিছুই মানুষের হাতের মুঠোয়।
ছুটির দিনে সিনেমা দেখার মজাই যেন আলাদা! আর সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় একটা অংশ পছন্দ করেন রোমান্টিক সিনেমা। টান টান উত্তেজনাকর গল্প, একের পর এক সাসপেন্স আর রহস্যময়তা পর্দায় ধরে রাখে দর্শকদের। তাই রোমান্টিক জনরার সিনেমা সবার পছন্দের শীর্ষে।
আজ শুক্রবার।
ছুটির দিনে ঘরে বসেই দেখে নিতে পারেন, এমন ৫টি রোমান্টিক কে-ড্রামা নিয়েই আজকের প্রতিবেদন।
হুয়াটস রং উইথ সেক্রেটারি কিম
হুয়াটস রং উইথ সেক্রেটারি কিম : ২০১৮ সালের চমৎকার রোমান্টিক জনরার সিরিজটিতে দেখা যায়, লি ইয়ং জুন একটি বড় কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট। সে নিজেকে অনেকে বেশি গুরুত্ব দেয়। আশেপাশের লোকদের কোনো গুরুত্ব নেই তাঁর কাছে।
অন্যদিকে তাঁর সেক্রেটারি ‘কিম মি সু’ যে কিনা তার সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করছে প্রায় ৯ বছর ধরে। এত বছর কাজ করতে করতে কিম তাঁর কাজে দক্ষ হয়ে উঠেছে। সে অনেক পরিশ্রমী এবং কোম্পানির জন্য অনেক কিছু করেছে। কিন্তু তারপরও লি ইয়ং জুন কখনো এইসব গুরুত্ব সহকারে দেখেননি। একদিন হঠাৎ তাঁর সেক্রেটারি রিজাইন করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এরপর থেকেই শুরু হয় গল্প। অসাধারণ রোমান্স কমেডি বেইসড ড্রামাটি প্রচুর দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে।
এতে লি ইয়ং জুন চরিত্রে অভিনয় করেছেন পার্ক সিও জুন এবং কিম মি সু চরিত্রে অভিনয় করেছেন পার্ক মিন ইয়াং। ১৬ এপিসোডের কোরিয়ান ড্রামাটির আইএমডিবি’তে ৮.১ রেটিং রয়েছে।
সামথিং ইন দ্য রেইন
সামথিং ইন দ্য রেইন : ২০১৮ সালে প্রকাশিত সিরিজটি রোমান্টিক লাভারদের জন্য মাস্টওয়াচ। জিন-আহ (সন ইয়ে-জিন), যিনি মাত্র ৩০ বছর বয়সে একজন সফল ব্যবসায়ী নারী হয়ে উঠেন। কিন্তু এখনও তাঁর জীবনে প্রেমের দেখা পাননি। যখন তাঁর কাছের বন্ধুর ছোট ভাই সিও জুন-হি (জং হে-ইন) বিদেশ থেকে ফিরে আসে, তখন কীভাবে সে তাঁর প্রতি অনুভূতি তৈরি করতে শুরু করে, এ নিয়েই এগিয়ে যায় সিরিজটির গল্প। মিষ্টি প্রেমের দারুণ এক অনুভূতি পর্দায় উপস্থাপন করতে পুরোপুরি সক্ষম হন সন ইয়ে-জিন এবং জং হে-ইন।
আইএমডিবি’তে সিরিজটির ৮.১ রেটিং রয়েছে এবং এটি মুক্তির পর থেকেই দারুণ দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। সময় থাকলে দেখে নিতে পারেন সিরিজটি।
ডিসেন্ডেন্টস অফ দ্য সান
ডিসেন্ডেন্টস অফ দ্য সান : ২০১৬ সালের সেরা কোরিয়ান ড্রামার খেতাব পেয়েছে এই সিরিজ। যার ফলে এশিয়ার অনেক দেশে বেশ সুনাম পায়। কাহিনীর নায়ক একজন আর্মি অফিসার আর নায়িকা ডাক্তার। যার মানে একজন রোবটের মতো প্রাণহীন আর অপরজন প্রাণ বাঁচায়। একেবারেই বিপরীত দুই মেরুর দুজন। কিন্তু দুজনের উদ্দেশ্য একটাই, রক্ষা করা। একজন প্রাণ নিয়ে দেশ রক্ষা করেন, আরেকজন ভালোবাসা ও সেবা দিয়ে প্রাণ। পুরো সিরিজের ৮০ শতাংশ দৃশ্য জুড়েই আর্মি ক্যাম্পের দেখা মিলবে। এক কথায় আপনি সিরিজের প্রেমে পরতে বাধ্য। সিরিজ জুড়ে রয়েছে অনেক মনমুগ্ধ করা গান, যা আপনার স্মৃতিতে গেঁথে যাবে। ভালোবাসা ও মিষ্টি অনুভূতির দুর্দান্ত এক প্যাকেজ ‘ডিসেন্ডেন্টস অফ দ্য সান।’
সং জুং কি এবং সং হেই কিও অভিনীত সিরিজটির আইএমডিবি’তে ৮.২ রেটিং রয়েছে।
দ্য কিং : এটারনাল মোনার্ক
দ্য কিং : এটারনাল মোনার্ক : দুটি ভিন্ন দুনিয়ার কাহিনি, কিংডম অফ কোরিয়া ও রিপাবলিক অফ কোরিয়ার। দুই ইউনিভার্সের দুই কোরিয়া। একটি বর্তমানের আরেকটি প্রায় দেড় হাজার বছর আগেরকার। ১৯৯৪ সালে কিংডম কোরিয়ার রাজার কাছে ছিলো মায়াবী ও যাদুকরী একটি বাঁশি। এই বাঁশিটি হাসিল করার জন্য রাজার ভাই রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। একদিন রাজাকে হত্যা করে বাঁশিটি নেওয়ার জন্য যায় সে। ওখানে উপস্থিত ছিলো রাজার আট বছরের ছেলে (লি-গন)। তলোয়ার দিয়ে ওই বাঁশিটিকে দ্বি-খন্ডিত করে ফেলে সে। অর্ধেক বাঁশি নিয়ে পালিয়ে যায় রাজার ভাই। আর বাকী অর্ধেক রয়ে যায় রাজকুমারের কাছে। এখান থেকেই ড্রামাটির সূচনা। এরপর শুরু মূল কাহিনী। চাচাকে খুঁজতে জাদুর বাঁশির সাহায্যে অন্য এক ইউনিভার্সে গিয়ে এক মেয়ের প্রেমে পড়ে যায় রাজকুমার। দুজনের প্রেমের গল্প চমৎকারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে সিরিজটিতে। মোট ১৬টি পর্বের অনবদ্য একটি ফ্যান্টাসি রোমান্টিক ড্রামা এটি।
লি মিন-হো এবং কিম গো-ইয়ুন অভিনীতি ড্রামাটির আইএমডিবি’তে ৮.১ রেটিং রয়েছে। সময় থাকলে দেখে নিতে পারেন।
ক্র্যাশ ল্যান্ডিং অন ইউ
ক্র্যাশ ল্যান্ডিং অন ইউ : কোরিয়ান ইতিহাসে অন্যতম রোমান্টিক ড্রামা সিরিজ এটি। গল্পে দেখা যায়, দক্ষিণ কোরিয়ার ধনী পরিবারের মেয়ে ‘ইউন সেরি’ একদিন প্যারাগ্লাইডিং করার সময় টর্নেডোর কবলে পড়ে, যার কারণে সে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে উত্তর কোরিয়ায় ছিটকে পরে। আর উত্তর কোরিয়া-দক্ষিণ কোরিয়ার শত্রুতার গল্প সবারই জানা। দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশ করতে পারে না। কিন্তু ইউন সেরি ঘটনাক্রমে একজন মিলিটারি ক্যাপ্টেনের সামনে পড়ে যার নাম ক্যাপ্টেন ‘রি জিয়ং হিউক।’ দেশের সংবিধানের প্রতি দায়িত্বশীল হলেও সেই ক্যাপ্টেন কোরিয়ান মেয়েটিকে আটক না করে তাকে তাঁর দেশে ফেরানোর চেষ্টা করে। এই নিয়েই গল্প।
চমৎকার ভাবে সাজানো এক চিত্রনাট্যের দুর্দান্ত প্রতিফলন এই সিরিজটি। দুই দেশের ব্যাতিক্রমী কালচার অসম্ভব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ড্রামাটিতে। দেখার সময় চরিত্রগুলোর সাথে মিশে যাবেন আপনিও। প্রত্যেকের অভিনয় নিঁখুত ছিল বলা যায়। এর সিনেমাটোগ্রাফি, বিজিএম, স্টোরিলাইন এককথায় মুগ্ধ করবে আপনাকে। ড্রামার জুটি সন ইয়ে-জিন এবং হিউন বিন বাস্তব জীবনেও স্বামী স্ত্রী। তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি সন্তান রয়েছে।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন