চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ, দেশপ্রেমিক ও সুনাগরিক গড়ে তোলার লক্ষ্যে যুগোপযোগী বিজ্ঞানভিত্তিক সর্বজনীন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি আন্দোলন।
সংগঠনের আহ্বায়ক একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ সেলিম ও সদস্য সচিব রুস্তম আলী খোকন শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি তুলে ধরেন।
নেতারা বলেছেন, বায়ান্ন’র ভাষাভিত্তিক বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের কাঙিক্ষত মূল্যবোধ পরিপন্থি কোনো শিক্ষাব্যবস্থা বাংলাদেশ মেনে নেবে না। বিগত ৫০ বছরে সংবিধানের একইধারার সমতাভিত্তিক শিক্ষানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ঘোষণার বিপরীতে দেশে ১২ রকমের শিক্ষা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।
শিক্ষাকে ব্যবসায়িক ও বাণিজ্যিকীকরণ করা হয়েছে। বিকশিত হয়েছে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আবার ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভিনদেশি কারিকুলামে ধনী গোষ্ঠী আরেক ধরনের নাগরিক সৃষ্টি করছে। বিভিন্ন সময়ে সরকারগুলো তাদের খেয়াল খুশি ইচ্ছামত নানান ধরনের শিক্ষা পদ্ধতি প্রণয়নের ফলে জমজমাট হয়েছে কোচিং বাণিজ্য।
শিক্ষার্থীর জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শৈশবের সৃষ্টিশীল সময় ও সুকুমারবৃত্তি।
বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেন, ছাত্র-শিক্ষক অভিভাবকদের প্রয়োজনীয় মতামত গ্রহণ না করেই আমলাতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রচিত শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে অভিভাবক মহলে। শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ না দিয়েই প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদ্ধতির প্রণয়নের ফলে পদ্ধতিসমুহ ব্যর্থ হয়ে কোচিং ব্যবসাকেই শক্তিশালী করেছে। বিশৃঙ্খল এই পরিস্থিতির সুযোগে ধর্মীয় শিক্ষা ও ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা পদ্ধতি সাধারণ শিক্ষাকে সংকুচিত করে জণগণের ভেতর সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি আস্থাহীনতার পরিবেশ তৈরি করেছে।
এই অবস্থা পরিবর্তনে শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে বাস্তবভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গী সন্নিবেশিত করা জরুরি। অগ্রসর ও অনগ্রসর বিদ্যালয়ের ব্যবধান হ্রাস করে পর্যায়ক্রমে একটি শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
নেতারা আরো বলেন, অচিরেই জাতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি আন্দোলন বর্তমান শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে বক্তব্য দেশবাসীর সামনে তুলে ধরবে। সে লক্ষে জাতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি আন্দোলন ছাত্র শিক্ষক অভিভাবক মহলে মতবিনিময় সভা করছে। ইতোমধ্যে দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ, প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের সাথে একাধিক মতবিনিময় সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকল অংশের মতামতের ভিত্তিতে একটি সুপারিশমালা সংগঠনের পক্ষ থেকে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা হবে।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন