সবকিছু বাইডেনের অনুকূলে কোর্টে গেলে ট্রাম্পের

মোঃ নাসির, নিউ জার্সি, আমেরিকা থেকে -আগামী ৩ নভেম্বর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। বিশ্বব্যাপী আলোচিত এই নির্বাচনের আর মাত্র ত্রকদিন বাকী । নির্বাচন নিয়ে আগাম কথা বলা কঠিন। অনেক সময় বিস্ময়কর অনেক কিছু অপেক্ষা করে। আগাম কি ঘটবে তা বলা কঠিন। তবে এখন পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে যা দেখতে পাচ্ছি, তাতে করে এখনো পর্যন্ত সব কিছু ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অনুকূলে রয়েছে। অন্য দিকে রিপাবলিকান পার্টি চেষ্টা করবে সুইং স্টেটগুলোর ফলাফল নিয়ে বিতর্ক সৃষ্ট করে সেটিকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যেতে। আর সুপ্রিম কোর্টে গেলেই ফলাফল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুকূলে যাবে ।                                  

সামগ্রিকভাবে এখনো সব কিছু সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অনুকূলেই রয়েছে। তবে জো বাইডেনের জয়লাভ করার ক্ষেত্রে দুটো বিপদ রয়েছে। প্রথমত, শেষ পর্যন্ত তিনি সুইং স্টেট পেনসিলভেনিয়ায় জয়লাভ করতে পারবেন কি না।    পেনসিলভেনিয়ায় জয়লাভ করলে জো বাইডেনের জন্য বড় ভূমিকা পালন করবে। দ্বিতীয়ত, মেইলিং ভোটগুলোর গণনার জন্য আমাদের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে কি না। জো বাইডেনকে জয়লাভ করতে হলে ২০১৬ সালের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটন যেসব স্টেটগুলো জয়লাভ করেছেন, সেইসব স্টেটগুলো জো বাইডেনকে জয়লাভ করতে হবে। সেই সাথে পেনসিলভেনিয়া, মিশিগান এবং উইনসকনসিন পুনরুদ্ধার করতে হবে। তবে আপত দৃষ্টিতে যা দেখা যাচ্ছে, তাতে করে পেনসিলভেনিয়ায় জো বাইডেনকে অবশ্যই জয়ী হতে হবে। যদিও এখনো পর্যন্ত জরিপে জো বাইডেন সুইং স্টেট পেনসিলভেনিয়া, মিশিগান, ফ্লোরিডা, নর্থ ক্যারোলিনা এবং ওহাইও এগিয়ে রয়েছে। তবে পেনসিলভেনিয়ায় জয়লাভ করলে সব কিছুই সহজ হবে। কথা হলো. জো বাইডেনের হোয়াইট হাউজে যাওয়ার একমাত্র সহজ পথ হচ্ছে পেনসিলভেনিয়ায় জয়লাভ করা। অন্য সুইং স্টেটগুলোতে হারলেও কোনো অসুবিধা নেই। অন্য দিকে এবারের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পুনরায় জয়লাভ করা কঠিন হবে। কারণ তিনি নিজ দলের মধ্যেই যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছেন।                                                      

আমেরিকার মানুষ পরিবর্তন চায়।যখনই পরিবর্তন হয় তখনই মানুষ ব্যাপাক হারে ভোট দেন। ২০০৮ সালেও বেশি ভোট পড়েছিল, যা দেখা যায়নি ২০১২ ও ২০১৬ সালে।মানুষ পরিবর্তনের আশাতেই দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে কষ্ট করে ভোট দিচ্ছেন। আর বেশি ভোট দেয়ার মানেই হচ্ছে পরিবর্তন। এটা ভালো লক্ষণ। আর যা যাবে জো বাইডেনের অনুকূলেই। কি কারণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পরাজিত হতে পারেন ।মহামারী করোনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরাজয়ের অন্যতম কারণ হতে পারে। করোনা মহামারীতে আমেরিকার প্রতিটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেউ মৃত্যুবরণ করেছেন, কেউবা অসুস্থ হয়েছেন, কেউবা চিকিৎসাও পাননি। অন্য দিকে অর্থনৈতিক মন্দার বিষয়টিও রয়েছে। একটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে ফেডারেল সরকার যেভাবে সহযোগিতা করা দরকার, ট্রাম্প প্রশাসন তা করেনি। সহযোগিতা নিয়ে আবার তারা রাজনীতি করেছেন। যে কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ফেডারেল অর্থ পাচ্ছেন না। যার প্রত্যক্ষ এবং পরক্ষো প্রভাব পড়বে নির্বাচনের উপর। এটাই ট্রাম্পের জন্য বিপদ। ২০১৬ সালের নির্বাচনেও জনমত জরিপে হিলারি এগিয়ে ছিলেন, শেষ পর্যন্ত তিনি পরাজিত হয়েছেন, এই রকম একটি ভীতি মানুষের মধ্যে এবার লক্ষ্য করা যাচ্ছে-l এটা সত্যি যে এই রকম একটি ভীতি মানুষের মধ্যে রয়েছে। তবে আমি বলতে পারি . ন্যাশনাল জরিপ ২০১৬ সালে ভুল প্রমাণিত হয়নি। ন্যাশনাল জরিপে দেখানো হয়েছে হিলারি ২ শতাংশ এগিয়ে ছিলেন। নির্বাচনে তা প্রমাণিত হয়েছে। তবে পদ্ধতিগত সমস্যা ছিল, যে করণে হিলারি ইলেকট্রোরাল ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। বড় কথা হচ্ছে মানুষ ভোট দেয়ার আগে যা বলে অনেক ক্ষেত্রে ভোট দিতে গিয়ে তা রক্ষা করেন না। সেটি অবশ্য আরেকটি সমস্যা। তবে যে প্রেসিডেন্ট দিনে প্রায় ৫০টি মিথ্যা কথা বলেন, তার ক্ষেত্রে এবার তা কাজ নাও করতে পারে।   এবারের নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি সুইং স্টেটের ভোট নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করবে এবং তারা তা সুপ্রীম কোর্টে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। আর ফলাফল যদি রিপাবলিকানরা সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যেতে পারে সে ক্ষেত্রে ফলাফল ট্রাম্পের অনুকূলে যাবে। কারণ বর্তমান সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতির অবস্থান হচ্ছে ৬-৩।আমি ডেমোক্র্যাটিক দলের সমর্থক হিসেবে জো বাইডেনকে ভোট দেবো। ডেমোক্র্যাটিক দল আমেরিকার ইতিহাস ঐতিহ্য ফিরিয়ে এনেছে।   ডেমোক্র্যাটিক দলLocal6 হোটেল ট্রেডস কাউন্সিলের  জন্য ভালো ।Local6 ইউনিয়নের সভাপতি রিচ মারোকো ডেমোক্র্যাটিক দলের সমর্থক হিসেবে জো বাইডেনকে ভোট দেবো।ডেমোক্র্যাটিক দল সবসময় ইমিগ্রান্টদের জন্য লিবারেল থাকে।অপর দিকে ট্রাম্প মিথ্যাচার করে। ট্রাম্পের আচারআচরণ, কথা-বার্তায় কোনো শালীনতা ও সম্মানবোধ নেই।আমি মনে করি বর্তমান বিশ্ব রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এবং আন্তর্জাতিক বিশ্ব বাজারে নেতৃত্ব দেয়ার মতো যোগ্য ব্যক্তি জো বাইডেনের দরকার।করোনাকালে আমেরিকার জনগণের প্রতি দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেট্রাম্প।যারা তাকে ভোট দিয়েছে, তারা মনে করেন নাই যে ট্রাম্প দেশের জন্য ক্ষতিকর ব্যক্তি হবেন।আমি দেখিছি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অর্থনীতি শক্তিশালী বলে যে স্লোগান দিচ্ছেন, তাও সঠিক নয়। আসলে আমেরিকার অর্থনীতি ভালো নয়। অর্থ দিয়ে তিনি শেয়ারবাজার ধরে রেখেছেন। শেয়ার বাজার দিয়ে আমেরিকার অর্র্থনীতির ভালমন্দ বিচার করা যায় না।প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন ভালো প্রার্থী এবং ডেমোক্র্যাটিক দল সবসময়ই ইমিগ্রেশন অথবা ইমিগ্রান্টদেও প্রতি সহানুভুতিশীল। ত্রছাড়া, জো বাইডেন ঘোষণা করেছেন, তিনি নির্বাচিত হলে এক কোটি ১০ লাখ কাগজপত্র বিহীন লোকের নাগরিকত্ব দিবেন।  অপরদিকে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদমর্যাদার অযোগ্য। কথা বার্তায় অপরের প্রতি রয়েছে তার ঘৃণা ও তিরস্কার। অপরকে সম্মান না দেওয়া লোক আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হবে তা হতে পারে না। জো বাইডেন ঠিক তার বিপরীত। জো বাইডেন ভদ্র, নম্র ও আত্মসম্মান বোধসম্পন্ন।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন