কে এই অ্যালেক্সেই নাভালনি?

গত এক দশকে রাশিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনি মারা গেছেন। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিক জানিয়েছে, কারাগারে হাঁটাহাঁটির পর নাভালনি অসুস্থ বোধ করেন ও এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে যান। এরপর তার জ্ঞান ফেরানোর সকল চেষ্টা করা হলেও তাতে কোনো ফল আসেনি।

 

 

২০২৩ সালের আগস্টে অ্যালেক্সি নাভালনিকে উগ্রপন্থায় উস্কানি, অর্থায়ন ও একটি উগ্রপন্থি সংগঠন প্রতিষ্ঠার অভিযোগে নতুন করে ১৯ বছরের জেল দেওয়া হয়েছিল। নাভালনিকে সাইবেরিয়ার একটি কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছিল। গত বছরের শেষের দিকে নাভালনিকে বিশ্বের সবচেয়ে কঠোর কারাগার হিসেবে পরিচিত আর্কটিক পেনাল কলোনিগুলোর একটিতে স্থানান্তর করা হয়েছিল।

দেশটির রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সবচেয়ে কট্টর সমালোচক হিসেবে দেখা হতো নাভালনিকে।

সরকারের দুর্নীতি প্রকাশ করে দেওয়র মধ্যে দিয়ে রাজনীতিতে তাঁর নাম উঠে আসে। তিনি পুতিনের ইউনাইটেড রাশিয়া দলকে উল্লেখ করেছিলেন অসৎ ও চোরেদের দল হিসেবে। এজন্য বেশ কয়েকবার তাকে জেলে যেতে হয়েছে।

 

পুতিনের ইউনাইটেড রাশিয়া সংসদীয় নির্বাচনে ভোট কারচুপি করেছে বলে প্রতিবাদ করার পর, তাঁকে ২০১১ সালে ১৫ দিনের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

এরপর নাভালনিকে ২০১৩ সালের জুলাইয়ে তছরূপের অভিযোগে অল্পদিনের জন্য জেলে পাঠানো হয়। তবে নাভালনি বলেন, এই দণ্ডাদেশ ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তিনি ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু প্রতারণার দায়ে তিনি আগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন, এই কারণ দেখিয়ে তাঁকে প্রার্থিতা দেয়া হয়নি। নাভালনির মতে, এটাও ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। 

 

অনুমোদন না থাকার পরও প্রতিবাদ বিক্ষোভ করার জন্য ২০১৯ সালের  জুলাইতে নাভালনিকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়।

তখন তিনি কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসকরা তখন বলেছিলেন, ‘কোনো কিছুর স্পর্শ থেকে চামড়ার প্রদাহ হয়েছে।’ কিন্তু নাভালনি জানান, তাঁর কোনদিন কোনো কিছু থেকে অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া আগে হয়নি। এরপর তাঁর নিজের চিকিৎসক জানান, নাভালনি বিষাক্ত কোনো পদার্থের সংস্পর্শে এসেছিলেন। নাভালনিও বলেছিলেন, তাঁর ধারণা তাঁকে বিষ দেয়া হয়েছে। নাভালনির ওপর ২০১৭ সালে অ্যান্টিসেপটিক রং দিয়ে হামলা চালানো হয়েছিল, তখন তাঁর ডান চোখ রাসায়নিকে গুরুতরভাবে পুড়ে যায়।

 

গত বছর মানে ২০২২ সালে তাঁর দুর্নীতি বিরোধী ফাউন্ডেশনকে সরকারিভাবে বিদেশি গুপ্তচর সংস্থা বলে ঘোষণা করা হয়। ফলে এই সংস্থার কর্মকাণ্ডের ওপর সরকার কঠোর নজরদারি শুরু করে।

নাভালনি পুতিনের দলকে চুরি-জালিয়াতির আখড়া বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। এই প্রেসিডেন্ট ব্যবস্থাকে রাশিয়ার রক্তকে চুষে খাওয়ার সঙ্গেও তুলনা করেছিলেন। এ ছাড়া তাঁর ভাষ্যমতে সামন্তবাদী রাষ্ট্র গড়ে তোলা হয়েছে এবং তা ধ্বংস করার প্রতিশ্রুতিও ব্যক্ত করেছিলেন নাভালনি। নাভালনি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভের নেতৃত্বও দিয়েছেন। কিন্তু ব্যালট বক্সে পুতিনকে চ্যালেঞ্জ করা হয়নি তাঁর। ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নাভালনির প্রার্থিতা বাতিল করে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।

জিবিডেস্ক //

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন