রাজধানীর বনানী থানায় চিত্রনায়িকা পরীমনি ওরফে শামসুন্নাহার স্মৃতির বিরুদ্ধে মাদক মামলার বিচারকাজ চলবে। মামলাটি বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এ রায় দেন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে পরীমনির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. শাহিনুজ্জামান ও মো. শামসুজ্জুহা।
রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলায় ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সেলিম আযাদ।
আইন কর্মকর্তা সেলিম আযাদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পর্যবেক্ষণসহ রুলটি নিষ্পত্তি করেছেন হাইকোর্ট। এর মানে হচ্ছে, বিচারিক আদালতে মামলার বিচারকাজ চলবে।
’
তবে পরীমনির আইনজীবী জেড আই খান পান্নার ভাষ্য- বিচারিক আদালতে মামলা চললেও নতুন করে অভিযোগ গঠন করতে হবে। এ আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারণ এ মামলায় মূল অভিযোগ ছিল অ্যালকোহল নিয়ে। সেটি যেহেতু বাদ পড়ছে এবং এলএসডি ও আইস নামের দুটি মাদকের সংশ্লিষ্টতার কথা বলা হচ্ছে, সেহেতু নতুন করে মামলার অভিযোগ গঠন করতে হবে।’
হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাবেন কি না জানতে চাইলে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়, মামলার অভিযোগপত্র পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
’
২০২১ সালের ৪ আগস্ট চিত্রনায়িকা পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে বনানী থানার মাদক আইনের মামলায় তাকে তিন দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বনানী থানার মাদকের মামলায় পরীমনিকে দ্বিতীয় দফায় দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন গ্রহণ করেছিলেন ঢাকার মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস। পরে একই মামলায় মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম তৃতীয় দফায় আরো এক দিনের রিমান্ড দেন।
এরপর তাঁর জামিন আবেদনের শুনানি করতে অস্বাভাবিক বিলম্ব নিয়ে হাইকোর্ট প্রশ্ন তুললে হাকিম আদালত থেকে জামিন পান পরীমনি।
প্রায় এক মাস কারাগারে থাকার পর ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর মুক্তি পান তিনি। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার (সিআইডি) পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা ওই বছর ৪ অক্টোবর পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক নজরুল ইসলাম এ মামলায় পরীমনিসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ১ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ রাখেন। পরে ৩০ জানুয়ারি মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন পরীমনি।
২০২২ সালের ১ মার্চ সে আবেদনের শুনানির পর মামলার বিচারকাজে স্থগিতাদেশ দেন আদালত। সেই সঙ্গে মামলাটি বাতিল প্রশ্নে রুল দেওয়া হয়। মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। পরে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সে আবেদনে শুনানির পর ৮ মার্চ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। পরে গত বছর ৯ জানুয়ারি পরীমনির বিরুদ্ধে মাদক মামলার বিচারকাজ ছয় মাস বন্ধ রাখতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে মামলাটি বাতিল প্রশ্নে উচ্চ আদালতের রুল নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সে ধারাবাহিকতায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের এ মামলা বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে রায় দিলেন উচ্চ আদালত।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন