দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়যাত্রা সম্পর্কে তাঁর শিবিরে তেমন কোনো সংশয় নেই। রিপাবলিকান দলের বাকি প্রার্থীদের পেছনে ফেলে ট্রাম্প আগামী নভেম্বর মাসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন পেয়ে যাবেন—সে বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত। তবে সেই পথে এখনো বাধা সৃষ্টি করে চলেছেন ট্রাম্পের একমাত্র অবশিষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বী নিকি হ্যালি। শনিবার নিজের রাজ্য সাউথ ক্যারোলাইনাতে ট্রাম্পের কাছে হেরে গিয়েও তিনি সংগ্রাম থেকে পিছু হটতে রাজি নন।
নিকি হ্যালির এমন নাছোড়বান্দা মনোভাব নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। ট্রাম্পের মতো ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থীর বিরুদ্ধে টিকে থাকার পেছনে তাঁর কোন হিসাব কাজ করছে, তার একাধিক মূল্যায়নের কথা শোনা যাচ্ছে। রিপাবলিকান দলের মধ্যে বিশাল সমর্থন সত্ত্বেও একাধিক মামলায় জর্জরিত ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত আদৌ নির্বাচনে লড়ার আইনি সুযোগ পাবেন কি না—সে বিষয়েও সংশয় কাটছে না। এমনটা ঘটলে দল বাধ্য হয়ে একমাত্র অবশিষ্ট প্রার্থী হিসেবে হ্যালিকেই মনোনয়ন দেবে বলে হ্যালির টিম আশা করছে।
শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প সেই সুযোগ পেলেও ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হ্যালি আবার মনোনয়নের দৌড়ে ফিরে আসতে পারেন—এমন সম্ভাবনাও রয়েছে।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রার্থী হ্যালি দুই অশীতিপর প্রার্থীর তুলনায় নিজেকে তরুণ হিসেবে তুলে ধরেও সমর্থন পাওয়ার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। ৮১ বছর বয়সী বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ৭৭ বছর বয়সী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বয়সের কারণে আবার দেশের হাল ধরতে কতটা যোগ্য, ৫২ বছর বয়সী হ্যালি বারবার সেই প্রশ্ন তুলছেন।
ট্রাম্পের জয়যাত্রা সত্ত্বেও রিপাবলিকান দলের মনোনয়নের দৌড় যে এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি, হ্যালির প্রচার অভিযানের জন্য চাঁদার অঙ্ক তা আরো স্পষ্ট করে দিচ্ছে।
কচ ব্রাদার্সের মতো প্রভাবশালী সমর্থক রবিবার চাঁদা দেওয়া বন্ধ করেছে বলে মার্কিন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হলেও হ্যালির টিম ‘তৃণমূল’ সমর্থকদের কাছ থেকে ২৪ ঘণ্টায় ১০ লাখ ডলার পেয়েছে বলে জানিয়েছে। যত দিন এমন চাঁদা আসতে থাকবে, তত দিন নিকি হ্যালি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মনোনয়নের দৌড়ে টিকে থাকতে পারবেন বলে অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন।
আরেকটি বিষয় হ্যালি ও তাঁর সমর্থকদের আশা জিইয়ে রেখেছে। এক জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, ট্রাম্প কোনো অপরাধের দায়ে আদালতে শাস্তি পেলে রিপাবলিকান দলের সমর্থকদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ তাঁকে আর সমর্থন করবেন না। তাঁর বিরুদ্ধে চারটি মামলায় এমন রায়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ছাড়া ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত আইনি বাধা বা স্বাস্থ্যের কারণে মনোনয়নের দৌড় থেকে সরে যেতে বাধ্য হলে রিপাবলিকান দলের মধ্যে অরাজকতার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বদলি প্রার্থী হিসেবে নিকি হ্যালি যথেষ্টসংখ্যক ডেলিগেটের সমর্থন না পেলে জটিলতা সৃষ্টি হবে। জুলাই মাসে রিপাবলিকান দলের সম্মেলনে ট্রাম্প শিবির নিকি হ্যালিকে যতটা সম্ভব অপদস্থ করার চেষ্টা চালাবে—এমন সংকেত এখনই পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে ‘সুপার টিউজডে’ বলে পরিচিত দিনে ট্রাম্প অন্যান্য কয়েকটি রাজ্যে জয়ের মুখ দেখলে ট্রাম্প শিবির হ্যালির বিরুদ্ধে আরো প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠতে পারে। যদিও বর্তমানে তারা জো বাইডেনকেই প্রতিপক্ষ হিসেবে তুলে ধরে হ্যালিকে অবজ্ঞার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন