লড়াই। লড়াইয়ের ভাঁজে ভাঁজে আরো কত লড়াই! সাকিব আল হাসান বনাম তামিম ইকবালের ‘যুদ্ধে’র সম্ভাব্য ফল নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন সোহেল ইসলাম ও মিজানুর রহমান। রংপুর রাইডার্স ও ফরচুন বরিশালের কোচ শোরগোল ফেলে দেওয়া ব্যক্তিগত এই লড়াইয়ে ঢুকতে অনীহা প্রকাশ করেন, দলীয় লক্ষ্যের কথাই বলতে চেয়েছেন। তবু গতকাল তাঁদের কাছে মুহুর্মুহু প্রশ্ন গেছে সাকিব-তামিম দ্বৈরথ নিয়ে।
তাঁরা সামলেছেন নিজের মতো করে। তবে আজকের মহারণের পুরোটাতে যে সাকিব ও তামিম থাকবেন, তা আগাম বলে দেওয়া যায়। ভরা গ্যালারিও নিশ্চিতভাবে চেঁচাবে দুজনের পক্ষে-বিপক্ষে।
মিজানুরের এবার নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে, ‘বরিশালের মানুষ বেশি বেশি করে মাঠে আসছে।
এটা খুব ভালো ব্যাপার।’ অভাবিত ব্যাপার হলো, শুধু ঢাকায় নয়, সিলেট কিংবা চট্টগ্রামেও গ্যালারির সমর্থন বেশি পেয়েছে ফরচুন বরিশাল। সমর্থনে পিছিয়ে নেই রাইডার্সও। তার প্রমাণ, আজকের কোয়ালিফায়ার টু, প্রকারান্তরে যা বাঁচা-মরার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে, সেটির টিকিটের জন্য হত্যে দিয়ে পড়েছে জনতা।
সাকিব কিংবা তামিম দ্বৈরথ আছে, আছে দুই দলে নামি তারকার ছড়াছড়ি। প্রথম কোয়ালিফায়ারে হারলেও জিমি নিশাম ঝড় তুলে দেখিয়েছেন, বড় ম্যাচের চাপে তিনি ভাঙেন না। শেখ মেহেদী কিংবা অধিনায়ক নুরুল হাসানও রংপুর রাইডার্সের চালিকাশক্তি হতে পারেন। আর মোহাম্মদ নবী কিংবা নিকোলাস পুরান বিপিএলের পুরনো সৈনিক। অবশ্য অভিজ্ঞতায় এগিয়ে বরিশাল।
মিজানুর যেমনটা বলছিলেন, ‘তামিম, মুশফিক আর (মাহমুদ উল্লাহ) রিয়াদ আছে দলে। ওদের অভিজ্ঞতার কারণে দল গোছানোর কাজ অনেকটা সহজ হয়ে গেছে।’ মেহেদী হাসান মিরাজের অভিজ্ঞতাও কম নয়। সঙ্গে সদ্যই বরিশাল দলে যোগ দিয়েছেন ডেভিড মিলার।
তাতে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হারায় বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নামতে হওয়ায় কি চাপে রংপুর রাইডার্স? সোহেল ইসলামের কণ্ঠে চাপ আছে সেই চাপ জয় করার প্রত্যয়, ‘ক্রিকেট খেলায় চাপ থাকবে না, এটা তো হতেই পারে না। চাপ থাকবেই। সেই চাপ জয় করে খেলতে হবে।’ প্রথম কোয়ালিফায়ারে ১৮৫ রান করেও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে হার থেকে শেখার কথাই বলেছেন রাইডার্সের কোচ, ‘(কুমিল্লার বিপক্ষে) ম্যাচে যেটা হয়েছে, আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী বোলিং করতে পারিনি। তবে ওই ম্যাচ নিয়ে আর ভাবছি না। সামনে যা আছে, সেটা নিয়েই চিন্তা করছি।’
সেই চিন্তার পথ ধরেই কি ফজল হক ফারুকীকে উড়িয়ে এনেছে রংপুর? আফগানিস্তানের পেসারের কারণেই তো ২০২৩ বিশ্বকাপের আগে তামিমের ব্যাটিং পজিশন পরিবর্তনের প্রস্তাব উঠেছিল! আজ রাইডার্স যে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তামিমের জন্য ফারুকীর হাতে বল তুলে দেবে, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। মিজানুর বিষয়টিকে হালকা করে দিতে চাইলেন, ‘ফারুকীর যে ব্যাপারটা, সেটা আরো দুই বছর আগের ঘটনা। তামিমও খুব ভালো অবস্থানে আছে। এখন সেটার পুনরাবৃত্তি ঘটার কোনো কারণ দেখছি না।’
বরিশাল-রংপুর দ্বৈরথের ফলেরও পুনরাবৃত্তি হওয়ার সুযোগ নেই। রাউন্ড রবিন লিগে প্রথম দেখায় জিতেছিল তামিমের বরিশাল। ফিরতি দেখায় ‘বদলা’ নিয়েছিল সাকিবের রংপুর। তাই আজ ফাইনালের টিকিট কাটার পাশাপাশি ২-১ ব্যবধানে এগিয়েও যাবেন সাকিব নয়তো তামিম, কার্যত যা হবে রংপুর নয়তো বরিশাল। ক্রিকেটে পূর্বাভাস ঝুঁকিপূর্ণ। টি-টোয়েন্টিতে অনিশ্চয়তা আরো বেশি। মূহূর্তেই বদলে যায় ম্যাচের প্রেক্ষাপট। আর দুই দলেই আছেন একা হাতে ম্যাচের রং বদলে দেওয়ার মতো অনেক ক্রিকেটার। বরং ব্যবধান গড়ে দিতে পারে মিরপুরের উইকেট। সমান শক্তির দুই দলের ভাগ্য নির্ভর করছে এর সঠিক সদ্ব্যবহারেই।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন