প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি এক নাগরিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম আহমেদ সেলিমক (৩৫)। দেশটির গণমাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমস তাদের খবরে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় গত বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) আহমেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ২০১৯ সালের পর দেশটিতে এটিই প্রথম ফাঁসি কার্যকর করার ঘটনা।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের গেইলংয়ের একটি হোটেলে সাবেক প্রেমিকা ইন্দোনেশিয়ার গৃহকর্মী নুরহিদায়াতি ওয়ারতোনো সুরাতাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিলেন দণ্ডপ্রাপ্ত আহমেদ। সিঙ্গাপুর প্রিজন সার্ভিসের (এসপিএস) একজন মুখপাত্র ২৮ ফেব্রুয়ারি দ্য স্ট্রেইটস টাইমসকে বলেন, ২০১৯ সালের পর থেকে দেশটিতে এই প্রথম কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো। সিঙ্গাপুর পুলিশ ফোর্স (এসপিএফ) জানিয়েছে, সেলিম দেশটির রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিলেন কিন্তু তার আবেদন ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আহমেদ এবং নিহত নুরহিদায়াতি ২০১২ সালে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন।
এরপর তারা ২০১৮ সাল বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু পরে অপর এক বাংলাদেশি শামীজুর রহমানের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন নুরহিদায়াতি। আহমেদের সন্দেহ হলে নুরহিদায়াতিকে বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন এবং নুরহিদায়াতি প্রেম করার কথা স্বীকার করেন। এরপর আহমেদ তখন তার মাকে বিয়ের পাত্রী খুঁজতে বলেন এবং ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে তাঁর বিয়ের তারিখ ঠিক হয়।
কিন্তু কয়েক মাস পর আবারা তারা যোগাযোগ শুরু করেন।
এরপর একটি হোটেলে দেখা করতে গেলে, আহমেদ ও নুরহিদায়াতির মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে আহমেদ তাঁর প্রেমিকার মুখ তোয়ালে দিয়ে চেপে ধরেন। প্রাণপণ চেষ্টা করে আহমেদের হাত থেকে সেবার মুক্তি পান ওই নারী। আহমেদের সঙ্গে ফের মিটমাট করে নেওয়ার কথা বললেও পরে ফোনে আহমেদের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেন ওই নারী।
আহমেদ তাকে সাত দিন পরে তার সঙ্গে আরেকবার দেখা করতে রাজি করান এবং তারা একটি হোটেলে মিলিত হন। এ সময় নতুন প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন না করলে নুরহিদায়াতিকে মেরে ফেলার হুমকি দেন আহমেদ। রাজি না হওয়ায় আহমদ তাকে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। আহমেদের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২ জানুয়ারি হত্যার অভিযোগ আনা হয় এবং ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন