শিরোপা লড়াইয়ের মঞ্চর সঙ্গে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের পরিচিয় নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। বিপিএলের সবচেয়ে বেশি চার শিরোপা তারাই জিতেছে। তবে দশম আসরের ফাইনালে প্রথমবার ট্রফি জয়ের সামনে থাকা ফরচুন বরিশালের অভিজ্ঞতাই যেন পার্থক্য গড়ে দিল। আর তাতে বরিশাল যেমন প্রথমবার বিপিএল শিরোপা জেতার স্বাদ পেল, কুমিল্লা তেমনি প্রথমবার ফাইনাল হারল।
অবশেষে প্রথমবার বিপিএলের শিরোপা ছোঁয়ার সৌভাগ্য হলো মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদেরও। ভাগ্য সঙ্গী করে অবশ্য বরিশাল ফাইনালের লড়াই শুরু করেছিল। প্রথমে টস জয়, তারপর বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে কুমিল্লার শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপকে ১৫৪ রানে আটকে দেয়।
রান তাড়ায় বরিশালের জন্য যেটা দরকার ছিল, ভালো একটা শুরু।
সেটাও তারা পেয়ে যান তামিম ইকবাল ও মেহেদী হাসান মিরাজের দুরন্ত ব্যাটিংয়ে। অষ্টম ওভারের শেষ বলে তামিম ইকবাল যখন ফিরছেন, বরিশালের রান তখন ৭৬। তামিমের রান ২৬ বলে ৩৯। তাঁর ইনিংসে সমান তিনটি করে চার ও ছক্কা মার রয়েছে।
তামিমের আউটের পর বেশিক্ষণ টেকেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। তিনি আউট হয়েছেন ২৬ বলে দুই ছক্কা ও এক চারে ২৯ রান করে। তবে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে বরিশালকে পথ হারাতে দেননি কাইল মায়ার্স। দুজনের ৫৯ রানের জুটি। ৪৬ রানে কাইল মায়ার্সকে মুস্তাফিজুর রহমান ফেরালে এই জুটি ভাঙে।
মায়ার্সের পর দ্রুতই আউট হন মুশফিক। ৬ উইকেটে জয়ের বাকি আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন মাহমুদউল্লাহ ও ডেভিড মিলার।
এর আগে শুরু থেকে রানের জন্য সংগ্রাম করেছেন কুমিল্লার ব্যাটাররা। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে আউট হন সুনীল নারিন। ওবেদ ম্যাককয়ের দুর্দান্ত এক ক্যাচের শিকার হয়েছেন তিনি। ইনিংস শুরু করেও বড় করতে না পারার দোষে দুষ্ট তাওহিদ হৃদয়, লিটন দাস ও জনসন চালর্স।
১৬ রান করা লিটন জেমস ফুলারকে আপার কাট করতে গিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। কুমিল্লার অধিনায়কের আগে ফুলারের শিকার বনেছেন তাওহিদও। ফিল্ডারও একই। মাহমুদউল্লাহ। ৩ চারে ১৫ রান করেছেন তাওহিদ। চালর্স আউট হয়েছেন ম্যাককয়ের বলে তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ দিয়ে। তাঁর ১৭ বলের ইনিংসে দুটি ছক্কার মার রয়েছে। ৬৫ রানে পাঁচ উইকেটের পর দলের চাহিদা মেটাতে পারেননি মঈন আলিও। মেহেদী হাসান মিরাজের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়েছেন ইংলিশ অলরাউন্ডার।
এরপর ষষ্ঠ উইকেটে মাইদুল ইসলাম অংকনের সঙ্গে ৩৬ রানের জুটি। টি-টোয়েন্টির চাহিদা মেটানোর চেয়ে বরং দলের বিপর্যয় সামাল দিতেই ব্যস্ত ছিলেন দুজন। ১৭তম ওভারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে মাইদুল ৩৮ রানে আউট হলে এই জুটি ভাঙে। তাঁর ৩৫ বলের ইনিংসটি সাজানো ২ চার ও ২ ছক্কায়। ১৬.৪ ওভারে ৬ উইকেটে কুমিল্লার সংগ্রহ তখন ১১৫ রান। এখান থেকে আর কতো যাবে কুমিল্লার সংগ্রহ? আন্দ্রে রাসেল কি ঝড় বইয়ে দিতে পারবেন? এই আলোচনা যখন চলমান, তখন রাসেল দ্বিতীয়টাই বেছে নেন। তাঁর ১৪ বলে ২৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে ১৫৪ রানে থেমেছে কুমিল্লার ইনিংস।
কুমিল্লার সংগ্রহটা যে আরো বড় হয়নি, তার কৃতিত্ব প্রাপ্য মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের। শেষ ওভারে একের পর এক ইয়র্কারের রাসেল ঝড় তো থামিয়েছেনই, সঙ্গে শেষদিকে হারিয়ে ফেলা মোমেন্টামটা আবার ফিরিয়ে আনেন তাঁর দলের জন্য। শেষ ওভারে তিন ওয়াইড, এক নো বলের পরও মাত্র সাতরান দেন সাইফউদ্দিন। বরিশালের শিরোপা জয়ে সাইফউদ্দিনের ওভারের ভূমিকাও ওপরের দিকেই থাকবে।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন