ভোটার হতে অনিচ্ছুক সিলেটের হিজড়ারা!

ভোটার তালিকায় লিঙ্গ পরিচয়ের জায়গায় মহিলা ও পুরুষ লিঙ্গের পাশপাশি ২০১৯ সাল থেকে হিজড়া শব্দটিও যুক্ত করে সরকার। জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা-২০০৮ সংশোধন করে বিধানটি যুক্ত করা হয়। তবে যাদের জন্য এই আইন, এই স্বীকৃতি তারাই আগ্রহী নন এই প্রক্রিয়ায়! যুক্ত হচ্ছেন না ভোটার তালিকায়। সিলেট বিভাগে হিজড়াদের মধ্যে ভোটার মাত্র ৮ শতাংশ । বাকি ৯২ শতাংশই তালিকার বাইরে রয়েছেন। ভোটার তালিকায় যুক্ত না হওয়ায় অনেক সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন তারা। এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

 

 

সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস সূত্র জানা গেছে, সিলেট বিভাগে মোট ৮৬ লক্ষ ৬০ হাজার ৭৮৪ ভোটার রয়েছেন। এরমধ্যে ৪৪ লক্ষ ৮৮ হাজার ৮২১ জন পুরুষ আর ৪১ লাখ ৭১ হাজার ৯৬৩ জন নারী ভোটার রয়েছেন। আর পুরো বিভাগের মধ্যে হিজড়া ভোটার আছেন মাত্র ৫৫ জন।

 

এদিকে সিলেট বিভাগে হিজড়াদের সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই জানিয়ে সিলেট বিভাগীয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক নিবাস রঞ্জন দাশ সিলেটভিউকে বলেন, বাংলাদেশে হিজড়ার সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার হবে। সেই হিসেবে সিলেট বিভাগে হিজড়ার সংখ্যা প্রায় ৭ শত হবে। তবে এ সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

 

 

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকায় তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি দিয়েছে। সেই হিসেবে হিসেবে অবহেলিত, অনাদৃত ও ভাগ্যবিড়ম্বিত এই মানুষজন ভোটার না হলে একসময় সরকারি বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। এমনকি লিঙ্গের পরিচয় গোঁপন করলে সামাজিক নানা সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এমন প্রেক্ষাপটে ২ মার্চ পালিত হয়েছে জাতীয় ভোটার দিবস। দেশে প্রথম জাতীয় ভোটার দিবস পালন হয়েছিলো ২০১৯ সালের ১লা মার্চ। পরবর্তী বছরগুলোতে সরকারি নির্দেশেই ২রা মার্চ পালিত হয় এই দিবস।

 

 

সিলেট বিভাগীয় সমাজসেবা অধিদপ্তরেরর এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সিলেটভিউকে জানান, আমরা অনেক হিজড়াদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা হিজড়া হয়ে ভোটার তালিকায় যুক্ত হতে আগ্রহ দেখান না। তারা হয় পুরুষ না হয় মহিলা হিসেবে প্রায় সময় ভোটার হয়ে যান এমনটাও শুনেছি।

 

এই কর্মকর্তা জানান, তৃতীয় লিঙ্গের যে কেউ ৫০ বছরের অধিক বয়স হলে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে প্রতি মাসে ছয়শ টাকা ভাতা পাবার সুযোগ আছে।  ডাক্তারী সার্টিফিকেট নিয়ে এই ভাতার তালিকায় নাম যুক্ত করা হয়। যেহেতু নির্বাচন কমিশন এখন তাদের লিঙ্গ পরিচয় সনাক্ত করার সুযোগ দিয়েছে, ভবিষ্যতে জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রসঙ্গটি আসতেই পারে। যেভাবে যখন নির্দেশনা আসে, সমাজসেবা অধিদপ্তর সেভাবেই কাজ করে।

 

 

নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, নির্বাচন অফিস বিষয়টিকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। সামাজিকভাবে এই জনগোষ্ঠিকে ভোটার তালিকার আওতায় আনতে হবে। না দিলে ভবিষ্যতে নানা সমস্যায় পড়বেন হিজড়ারা।

 

 

সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম রাকিব সিলেটভিউকে বলেন, সিলেট বিভাগের মোট হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৫৫ জন। এই বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি। তাদের প্রত্যাককে ভোটার তালিকায় আনতে হবে। তাহলে তারা সকল ধরণের সুযোগ সুবিধা পাবেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন