সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক দরপত্র ১০ মার্চ

সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে আগামী ১০ মার্চ আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। বঙ্গোপসাগরের ২৬টি ব্লক বরাদ্দ দিতে দরপত্র আহ্বান করা হবে। বিদেশি ৫৫টি কম্পানিকে এ দরপত্রে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে। পরবর্তী ছয় মাস আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলো এই দরপত্রে অংশ নিতে পারবে বলেও পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে।

 

দেশের গভীর সমুদ্রের ব্লকগুলোতে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহ দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দুই বহুজাতিক কম্পানি এক্সন মবিল ও শেভরন। সম্প্রতি এক্সন মবিলের একটি প্রতিনিধিদল তাদের প্রস্তাব নিয়ে ঢাকায় এসে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ও জ্বালানি সচিব মো. নূরুল আলমের সঙ্গে বৈঠক করে গেছে।

জ্বালানি বিভাগ ও পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরের অগভীর ও গভীর অংশকে মোট ২৬টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে অগভীর অংশে ব্লক ১১টি আর গভীর সমুদ্রে ব্লক ১৫টি।

সরকার দরপত্র ছাড়া বিশেষ বিধানের আওতায় কোনো কম্পানিকে সমুদ্রের ব্লকে কাজ দিতে আগ্রহী নয়। এক কম্পানিকে দুই থেকে চারটির বেশি ব্লক দিতে চায় না সরকার। ইতিমধ্যে সমুদ্রে ২৬টি ব্লক বরাদ্দ দিতে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের সব কাজ শেষ করেছে পেট্রোবাংলা।

 

এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার জানান, ১০ মার্চ দরপত্র উন্মুক্ত হওয়ার পরদিন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এর সব শর্ত এবং সুবিধা জানানো হবে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। 

 

এদিকে আন্তর্জাতিক কম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করতে ইতিমধ্যে উৎপাদন অংশীদারত্ব চুক্তির (পিএসসি) সংশোধন করেছে সরকার। বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে গত বছরের মার্চে প্রথম আগ্রহ প্রকাশ করে এক্সন মবিল। সে সময় তারা গভীর সমুদ্রের ১৫টি ব্লক ইজারা চেয়েছিল। গত ১৬ জুলাই আরেকটি চিঠি দেয় মার্কিন কম্পানিটি।

সেই চিঠিতে ২৫ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলার গভীর সমুদ্রে বিনিয়োগের প্রস্তাবও দেওয়া হয়।

 

পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, বিদেশি কম্পানিকে ব্লক ইজারা দেওয়ার পর তারা সেখানে গ্যাস আবিষ্কার করেও গ্যাসের মূল্য তাদের কম দিয়েছে বাংলাদেশ এই অজুহাতে তারা দেশ ছেড়েছে। অথচ এসব গ্যাস উত্তোলন করা গেলে বিদেশ থেকে অতিরিক্ত দামে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করার দরকার হতো না। এখন টিকে আছে শুধু ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ওএনজিসি বিদেশ লিমিটেড (ওভিএল)। প্রতিষ্ঠানটি অগভীর সমুদ্রের ৪ নম্বর ব্লকে কাঞ্চন নামের এলাকায় অনুসন্ধান কূপ খনন করে গ্যাস পায়নি। পরে আরেকটি কূপ খননের কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, নতুন মডেল পিএসসি অনেকটা ভিন্ন। ২০১৯ সালের মডেল পিএসসি অনুযায়ী, অগভীর ও গভীর সমুদ্রের প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম যথাক্রমে ৫ দশমিক ৬ ও ৭ দশমিক ২৫ ডলার। সংশোধিত পিএসসিতে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম ধরা হয়েছে ব্রেন্ড ক্রুডের ১০ শতাংশ দরের সমান। অর্থাৎ বিশ্ববাজারে ক্রুডের দাম ১০০ ডলার হলে গ্যাসের দাম হবে ১০ ডলার। বর্তমান পিএসসি অনুসারে অগভীর সমুদ্রে পাওয়া গ্যাসে বাংলাদেশের হিস্যা ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ এবং গভীর সমুদ্রে ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ রয়েছে। সংশোধিত পিএসসির খসড়ায় বাংলাদেশের হিস্যার অংশ অগভীর সমুদ্রে ৪০ থেকে ৬৫ শতাংশ এবং গভীর সমুদ্রে ৩৫ থেকে ৬০ শতাংশের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। পাশাপাশি রাখা হয়েছে গ্যাস রপ্তানির সুযোগ।

জিবিডেস্ক //

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন