বেইলি রোডে বৈদ্যুতিক তারের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে আগুন

রাজধানীর বেইলি রোডে সাততলা ভবনে লাগা আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বৈদ্যুতিক তারের মাধ্যমে। ধোঁয়া বেরোতে না পারায় গোটা ভবনটি গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়। সেই গ্যাসে দম বদ্ধ হয়ে ও আগুনে পুড়ে মারা যায় ৪৬ জন। আহত হয় অর্ধশতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু।

ভবনটিতে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। পুলিশের বোমা নিষ্ক্রীয়করণ দল প্রাথমিক তদন্তে এসব তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে।

 

জানতে চাইলে পুলিশের বোমা নিষ্ক্রীয়করণ দলের প্রধান (ডিসি) রহমত উল্লাহ চৌধুরী গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, আগুনের পরপরই ভবনটিতে অনুসন্ধান চালিয়ে নানা তথ্য পান তাঁরা। বিশেষ করে ভবনটির বৈদ্যুতিক লাইন আগে থেকেই দুর্বল হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল।

সেখানে আগুন লাগার পর বৈদ্যুতিক তারের মাধ্যমে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুন গোটা ভবনে ছড়িয়ে পড়লে এটি গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়। তখন ধোঁয়া বের হওয়ার মতো জায়গা ছিল না।

 

তিনি বলেন, ভবনটিতে আগুন নেভানোর পর ধ্বংসস্তূপ থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন তাঁরা।

সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কোনো তথ্য পাননি তাঁরা।

 

এদিকে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী, নিচতলার চুমুক নামের দোকানের একটি ইলেকট্রিক কেটলি থেকে আগুন লাগে। এ ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চারজনের মধ্যে দুজনের কাছ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

রমনা থানার মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, চুমুকের মালিক আনোয়ারুল হক ও শফিকুর রহমান রিমন রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য দিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে তাঁরা জানান,  কেটলিটিতে লাগা আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

পুরো দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়লে তাঁরা নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন।

 

তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্যের পাশাপাশি তাঁরা আগুনের আরো অনেক তথ্য দেন। বিশেষ করে চুমুকের আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণ হতে পারে বৈদ্যুতিক তার। এ ছাড়া দোকানটিতে থাকা গ্যাসের চুলা, দোকানের পাশের দরজা ও সিঁড়ির কাছে থাকা সিলিন্ডার থেকে বের হওয়া গ্যাসে আগুন আরো ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশ জানায়, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে কাচ্চি ভাইয়ের ম্যানেজার জেইন উদ্দিন বলেন, আগুন লাগার আগে তাঁদের রেস্তোরাঁয় অনেক ভিড় ছিল। লিপইয়ারের কারণে খাবারের ওপর ছাড় দেওয়া হলে ক্রেতা বাড়ে। এ সময় তিনি ক্রেতাদের সেবায় ব্যস্ত ছিলেন। নিচতলায় হঠাৎ লাগা আগুনে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। চিৎকার করে সবাই ছোটাছুটি করতে শুরু করেন। এ সময় তিনি দ্রুত ভবনটির ছাদে চলে যান। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করেন।

প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে ফায়ার সার্ভিস জানায়, ভবনটিতে আগুন যেভাবেই লাগুন, তা ছড়ানোর মতো যথেষ্ট দাহ্য উপাদান ওই ভবনে ছিল। এ সময় ভবনটিতে আটকে পড়া লোকজন আটকে পড়া ওই কালো ধোঁয়ায় শ্বাসনালি পুড়ে মারা যান।

মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে গত বৃহস্পতিবার থেকে সিআইডি কাজ শুরু করেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ঘটনাস্থল থেকে ১৫টির বেশি আলামত সংগ্রহ করেছে সিআইডির ফরেনসিক টিম।

জিবিডেস্ক //

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন