সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে এভাবে ভেঙে পড়ল স্বাগতিকরা

বাংলাদেশ ম্যাচ থেকে ততক্ষণে প্রায় ছিটকে গেছে। নুয়ান থুসারার বোলিং তোপ বাংলাদেশ দলের মতো স্তব্ধ করে দিয়েছিল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের কানায় কানায় পূর্ণ গ্যালারিও। পিনপতন নীরব গ্যালারিতে জোয়ার তুলল রিশাদ হোসেনের ব্যাট। তাঁর একেকটি ছক্কায় দর্শকের কলরব জোরালো থেকে জোরালো হয়েছে।

সঙ্গে যেনও আক্ষেপও বাড়িয়েছে।

 

কে জানে, শুরুর ব্যাটিং অর্ডার অমনভাবে মাথা নুইয়ে না পড়লে হয়তো ভিন্ন কিছু হতে পারতো! বাংলাদেশের সামনে সুযোগ ছিল প্রথমবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের। সেই চাপেই কি না সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে এভাবে ভেঙে পড়ল স্বাগতিকরা! নিয়ন্ত্রনহীন বোলিংয়ের পর শ্রীলঙ্কান বোলারদের সামনে লড়াই করতে ব্যর্থ ব্যাটাররা। সফরকারীদের ১৭৪ রান তাড়ায় যা একটু লড়াই করলেন রিশাদ ও তাসকিন আহমেদ।

 

তবু বাংলাদেশ ম্যাচ হেরেছে ২৮ রানে। শ্রীলঙ্কার লক্ষ্য তাড়ায় ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। আসলে ছিটকে দেন থুসারা। প্রথম দুই ম্যাচে একাদশে জায়গা হয়নি তাঁর।

মাথিশা পাতিরানা চোটে না পড়লে আজও হয়তো বেঞ্চ গরম করতে হতো। সুযোগ পেয়েই বাংলাদেশকে কাঁপিয়ে দিলেন থুসারা। বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন এক উইকেট হারিয়ে ১৫ রান। লিটন দাসকে ফেরান ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। চতুর্থ ওভারে আক্রমণে আসেন থুসারা।

তাঁর প্রথম বল থেকে কোনো রান নিতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত।

 

পরের তিন বলে যেন স্বপ্নের ওপর চড়েন থুসারা। প্রথমে নাজমুল এরপর তাওহিদ হৃদয় এবং হ্যাটট্রিকের বলে তাঁর শিকার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মাহমুদ রিভিউ নিলেও 'আম্পায়ার্স কলে' আউট হয়েছেন। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো বোলারের এটি ষষ্ঠ হ্যাটট্রিক। আর কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে পঞ্চম শ্রীলঙ্কান বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করেন থুসারা।

ওই ওভারের পর ম্যাচে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। দাঁড়াবে কীভাবে? দ্রুতই ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন সৌম্য সরকার, জাকের আলি অনিক। ৩২ রানে ৬ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে এই সংস্করণে নিজেদের সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়া থেকে বাঁচিয়েছেন রিশাদ ও শেখ মেহেদী হাসানের ৪৪ রানের সপ্তম উইকেট জুটি। মেহেদী ১৯ রানে আউট হওয়ার পর রিশাদের সঙ্গে লড়াইয়ে যোগ দেন তাসকিন। দুজনের ৪১ রানের জুটি। ৩০ বলে সাত ছক্কায় রিশাদ ৫৩ রানে আউট হলে এই জুটি ভাঙে। তাসকিন ২০ বলে ৩১ রান করে শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হন। বাংলাদেশ অলআউট হয় ১৪৬ রানে।

এর আগে প্রথম দুই ম্যাচের মতো টস জিতে এদিনও শ্রীলঙ্কাকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ। শুরুটা বেশ আঁটসাঁট করলেও সেটা ধরে রাখতে পারেননি স্বাগতিক বোলাররা। প্রথম তিন ওভার থেকে লঙ্কানরা তুলতে পেরেছিল মাত্র ১৮ রান। পরের ওভারে তাসকিন আহমেদ দেন ১২ রান। একটি বাই চারসহ শেষ দুই বলে তাঁকে দুটি চার মারেন কামিন্দু মেন্ডিস। এই ওভারের প্রথম বলে অবশ্য বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন তাসকিন। ফেরান ৮ রান করা ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে।

কামিন্দু মেন্ডিসও অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১২ রানে তাঁকে শরিফুল ইসলামের ক্যাচ বানিয়ে ফিরিয়েছেন রিশাদ হোসেন। তবে একপ্রান্তে আরেকবার 'প্রিয় প্রতিপক্ষ' বাংলাদেশের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যান কুশল মেন্ডিস। তাঁর ৮৬ রানের ইনিংসেই মূলত বড় সংগ্রহ পায় শ্রীলঙ্কা। তৃতীয় উইকেটে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে নিয়ে যোগ করেন ৫৯ রান।  হাসারাঙ্গা ১৩ বলে এক চার ও এক ছক্কায় ১৫ রান করে আউট হন মুস্তাফিজুর রহমানের বলে।

এরপর চারিথ আসালাঙ্কা বেশি সুবিধা করতে পারেননি। তাঁকে আউট করেন শরিফুল ইসলাম। সবচেয়ে বড় বাধা কুশলকে শিকার বানিয়েছেন তাসকিন। তাঁর ৫৫ বলের ইনিংসটি সাজানো সমান ৬ চার ও ৬ ছক্কায়। শেষ দিকে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের ১০ ও দাসুন শানাকার ঝোড়ো ১৮ রানের ইনিংসে ১৭০ ছাড়িয়েছে শ্রীলঙ্কা। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন ও রিশাদ।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন