ব্যক্তিগত জীবনের ঝড়ঝাপটা সামলে একের পর এক নতুন কাজ নিয়ে ফিরছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমনি। এপার-ওপার দুই বাংলায় আলোচিত এই অভিনেত্রী। বর্তমানে ছেলে রাজ্যকে নিয়ে কলকাতায় আছেন পরীমনি। সেখানে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারে দীর্ঘ ২৮ মিনিটের একটি ভিডিও সাক্ষাৎকার দিয়েছেন পরী।
সেখানে ব্যক্তিগত জীবন ও বর্তমান কাজ নিয়ে কথা বলেছেন অভিনেত্রী।
পরীমনিকে প্রশ্ন করা হয় তাঁর মধ্যে খুব খামখেয়ালি আছে কি না বা তাকে কি ধরা যায় না? এই প্রশ্নের উত্তরে পরীমনি বলেন, ‘আমি খামখেয়ালি নই। আর ধরা যায় না, ব্যাপারটা একদমই এ রকম না। আমাকে খুব সহজেই ধরা যায়, পাওয়া যায়।
কিন্তু আমাকে বুঝে কাজ করাটা হয়তো একটু মুশকিল হয়ে যায়। যারা মুডি তাদের থেকে আমি দূরে থাকি। খুবই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি যারা আমার সাথে মিলেমিশে কাজ করে। আমি একদমই মুডি না।
আমি কাজকেই প্রাধান্য দিতে চাই। আমার কাছে ব্যক্তিগত এবং কাজের সম্পর্ক আলাদা।’
সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে শরিফুল রাজের প্রসঙ্গ উঠে আসে এবং উপস্থাপিকা প্রশ্ন করেন, ‘কিছুদিন আগে তোকে দেখেছিলাম কী বিমর্ষ ছিলি, যখন ছেলে অসুস্থ হয়ে কলকাতায় ভর্তি ছিল। তখন শরিফুল রাজ পদ্মের নাম নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিল। বিষয়গুলো আসলে তোর কেমন লাগে?’ এমন প্রশ্নে খুব মজার ছলে পরীমনি বলেন, ‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা স্ট্যাটাস ছিল আমার বাচ্চার জন্য এবং আমার জন্য।
কারণ এই স্ট্যাটাসটা না দিলে তো আমার বাচ্চা ভালোই হতো না। আমরা খুব উপকৃত হয়েছিলাম।’
কথার প্রসঙ্গ টেনে পরী আরো বলেন, ‘এটা খুবই ব্যক্তিগত বিষয় কিন্তু আমার মনে হয় এটা সবার জানা উচিত। যে ওন করে না কিন্তু আমার বাচ্চা বলে বেড়ায় আমি তো তাকে ছাড় দেব না। যারা মা তারা নিশ্চয় বুঝতে পারবেন আমি কোন জায়গা থেকে কথাগুলো বলছি। কখনো কোনো ফেইক সম্পর্ক বা ফেইক ইমোশনকে বাচ্চার ইস্যু করে কিছু বলতে পারবেন না। সেই জায়গা থেকে বলছি, ও এখন পর্যন্ত আমার বাচ্চার একটা খোঁজখবর নেয়নি। আমার বাচ্চার খোঁজখবর ও কেন নেবে? এটা তো আমার বাচ্চা। আমার বাচ্চার খোঁজখবর এবং দায়িত্ব প্রথম থেকে আমিই নিয়েছি এবং আমারই থাকবে। এটার জন্য আর কাউকে দরকার নেই। আমি আর কারো নামই উচ্চারণ করতে চাই না। এই নামটার সঙ্গে এখন আর আমার কোনো রাগ, ক্ষোভ, অভিমান ছাড়া কিছুই নেই। ভালোবাসা, সম্মান তো দূরের কথা, কিছুই নেই। যে মানুষটা আমার বাচ্চার বাবা তাকে আমি কোনোভাবেই অসম্মানিত করতে চাই না। কিন্তু যতটুকু অসম্মান তার প্রাপ্য সেটুকু আমি করব, সেটা থেকে তাকে বাঁচাতে পারব না। সেই অসম্মানটা পুরো দুনিয়া না, আমি তাকে করব। কারণ সে সেটা ডিজার্ভ করে।’
পরী আরো বলেন, ‘অনেক নেগেটিভিটির মধ্যেও আমি পজিটিভ ভালোবাসা পেয়েছি। আমি যখন জেল থেকে বের হয়েছি তখন অনেক মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি, যাদের সঙ্গে আমার কোনো রক্তের সম্পর্ক নেই। কেউ কেউ এসে বলেছে, কেউ গুলি করলে তোমার সামনে এসে দাঁড়াব। এগুলো নিশ্চয় আমার কাজের জন্যই। আমার কাজ ফ্লপ কিন্তু নাম আছে। তার জন্যও আমি কৃতজ্ঞ। সেটার জন্য দর্শকরাই আমার পাশে ছিল। আমার অনেক কাজ ফ্লপ হলেও একদম শুরুর যে কাজটা ওটা থেকেই আমার নামটা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে।’
একজন অভিনেত্রীর জেল জীবন, এটা নিয়ে কোনো বই লিখবে কি না এমন প্রশ্নে পরী বলেন, ‘লিখা হয়ে গেছে তখনই। আমি কাউকে খুন করিনি, জঙ্গি হামলা করিনি, বাসায় বোমা রাখিনি—তারা আমার সাথে কী করেছে? এটাও একটা ফ্যাক্ট। বাচ্চার বাবা, আমার জেল জীবন; কেন জেলে গিয়েছিলাম এসব নিয়ে আমি এখনো কোনো কথা বলিনি। এগুলোর কথা আমি তুলতেই চাই না। এই দুটো বিষয় নিয়ে ঘটা করে কথা বলতে চাই।’
এর আগে বাংলাদেশ-কলকাতার যৌথ প্রযোজনায় ‘রক্ত’ ও ‘স্বপ্নজাল’ সিনেমায় কাজ করেছেন পরীমনি। দুই বাংলাকে আলাদা করে না দেখে একই ভেবে সেখানে কাজ করতে চান তিনি। জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে কলকাতায় কিছু কাজ নিয়ে কথা চলছে। মাঝে চার-পাঁচ বছর কলকাতার সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় কাজ না করলেও তাঁরা প্রায় সময়ই পরীর খোঁজ খবর নিয়েছেন এবং তাঁকে নিয়ে কাজ করতে চান বলে আগ্রহও দেখিয়েছেন।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন