নিজের ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের নাম পরিবর্তন করে কিয়েভপন্থী স্লোগান রাখায় মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীকে ১০ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। ওই ছাত্র নেটওয়ার্কের নাম রেখেছিল, ‘স্লাভা ইউক্রেনি’ যার অর্থ ‘ইউক্রেনের গৌরব।’ গত বৃহস্পতিবার মস্কোর একটি আদালত ওই ছাত্রকে ‘চরমপন্থী সংগঠনের প্রতীক’ প্রদর্শনের জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছে।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেন আক্রমণের সমালোচনাকারী বা সমর্থনকারী হাজারের বেশি রুশ নাগরিকে জেল বা জরিমানা করেছে দেশটি।
গত বুধবার সকালে মস্কোর একজন পুলিশ অফিসার কর্তৃপক্ষকে নেটওয়ার্কের নাম জানানোর পর ওই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতের নথি অনুসারে, পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ওই শিক্ষার্থীর কক্ষে যায় এবং তার ব্যক্তিগত কম্পিউটার ও ওয়াই-ফাই রাউটার খুঁজে পায়।
আদালত বলেছে, “তিনি ‘স্লাভা ইউক্রেনি’ স্লোগানটি নিজের নেটওয়ার্ক হিসেবে ব্যবহার করে ওয়াই-ফাই রেঞ্জের মধ্যে থাকা অসংখ্য ব্যবহারকারীর মাঝে প্রচার চালিয়েছে। তাই ওই শিক্ষার্থীকে জনসম্মুখে নাৎসি প্রতীক প্রদর্শনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত।
তার রাউটারটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।”
‘স্লাভা ইউক্রেইনি’ ইউক্রেনের সমর্থকদের জন্য বেশ জনপ্রিয় একটি স্লোগান। রাশিয়া উইক্রেনে আক্রমণ চালানোর পর প্রতিবাদ জানাতে এই স্লোগান নিয়মিত শোনা যায়, যেটি চালু হয়েছিল ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২সালে।
বিবিসি বলছে, কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ছাত্রটিকে ‘নাৎসি প্রতীকবাদের প্রকাশ্য প্রদর্শন... বা চরমপন্থী সংগঠনের প্রতীক’ এর জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বারবার ইউক্রেনের বর্তমান সরকারকে একটি ‘নব্য-নাৎসি শাসন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং এটি বলেই ইউক্রেনে তার আক্রমণকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই সংঘাতকে রাশিয়ায় ‘যুদ্ধ’ বলাও অনুমোদিত নয়। এটিকে অবশ্যই ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ হিসেবে উল্লেখ করতে হবে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে গত বছর ২১ হাজারের বেশি রুশ নাগরিক এই যুদ্ধের প্রতিবাদ করায় দমনমূলক আইনের শিকার হয়েছিল। মানবাধিকার গোষ্ঠীটি বলেছে, ‘তাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।
সমালোচকদের মুখ বন্ধ করার জন্য কারাদণ্ডের শাস্তি এবং মোটা জরিমানার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।’
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন