এ নিয়ে অন্তত তৃতীয়বার বোর্ড আধিকারিকদের নিজের সব কথা বলেছেন তামিম ইকবাল। তবু সবশেষ বোর্ড সভার পর সভাপতি নাজমুল হাসান জানিয়েছিলেন যে, তামিমের সঙ্গে বসে সাবেক অধিনায়কের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেই সভা গতকাল রবিবার রাতে হয়েছে, যেখানে তামিম তার আগের কথাই নতুন করে বলেছেন।
রবিবার রাতে বিসিবির সিনিয়র পরিচালক এনায়েত হোসেন সিরাজ ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের সঙ্গে দীর্ঘ সভা হয়েছে, যা দ্রুততম সময়ে বোর্ড সভাপতিকে অবহিত করবেন সিরাজ ও জালাল।
কি কথা হয়েছে এই সভায়? এমন প্রশ্নে বিস্ময় প্রকাশ করে তামিম বলেন, ‘এটা আপনি কি করে জানলেন?’ তবে সভার বিষয়টি অস্বীকারও করেননি তামিম, ‘আমার তো নতুন করে কিছু বলার নেই। আগে যা বলেছি, এবারও তাই বলেছি। এর বেশি কিছু বলব না। কারণ, বিসিবি আমার অভিভাবক।
সময় হলে তারাই জানাবেন।’
তবে গতরাতেই বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলকে তামিম জানিয়েছেন, ‘আমার জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা খুব ডিফিকাল্ট।’
কেন ‘ডিফিকাল্ট’, সেই ইঙ্গিত বিপিএল ফাইনালের পরই অবশ্য দিয়েছিলেন তামিম। বলেছিলেন, ফেরার আগে অনেক কিছু ঠিক হতে হবে।
সেই ঠিক হওয়া কোন কোন বিষয়ে, তা তিনি বলেননি। তবে বোর্ড সভাপতি থেকে শুরু করে তিন সদস্যের বিশ্বকাপ পারফরম্যান্স মূল্যায়ন কমিটি থেকে শুরু করে রবিবার রাতে এনায়েত হোসেন ও জালাল ইউনুসকে পুরনো অভিযোগের কথাই নাকি আবার বলেছেন তামিম।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিসিবির ঊর্ধ্বতনরা তামিমকে ফেরাতে উদ্যোগী। তবে এই উদ্যোগে পূর্ণ আস্থা স্থাপনের মতো অবস্থা তৈরি হয়নি বলে এনায়েত এবং জালালকে জানিয়ে দিয়েছেন। আর নিজের বলা ‘অনেক কিছু ঠিক হতে হবে’ যে আদৌ হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান তামিম।
তাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাঁহাতি এই ওপেনারের ফেরার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
যদিও বিপিএলে টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার পর ২০২৫ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে চোখ রেখেছিলেন। কিন্তু বিপিএল শেষ হওয়ার পর দিন পেরিয়ে গেলেও মূল্যায়ন প্রতিবেদন অপ্রকাশিত থাকা এবং মূল্যায়ন প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে কোনো পদক্ষেপ দৃশ্যমান না হওয়ায় ওই প্রতিবেদন নিয়ে জনমনেই সংশয় তৈরি হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে তামিমের আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার কোনো ইচ্ছাই নেই বলে জানিয়েছে তার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র। ‘দীর্ঘ ক্যারিয়ারে যা কিছু অর্জন এবং ক্রিকেটে যেভাবে উজার করে দিয়েছে, তাতে অবহেলার দাগ পরতে দিতে চায় না তামিম।’
অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া যে স্রেফ অভিমান থেকে নয়, সেটা আগেই খোলাসা করেছেন তামিম। তবে ইনজুরি নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে যে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা বিরক্ত এবং হতাশ করেছে তামিমকে।
আপাতদৃষ্টিতে যা মনে হচ্ছে, তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেবেন না। সেটা তিনি বাংলাদেশের জার্সি গায়ে আবার খেলুন কি না খেলুন। তবে খেলার সম্ভাবনা তিনি নিজে অন্তত দেখছেন না বলেই নাকি জানিয়ে দিয়েছেন রবিবারের সভায়। আর খেলছেন না যখন, তখন অবসরের ঘোষণা দিয়ে নাটকীয় কিছু করার পক্ষপাতি নন তিনি।
অবশ্য আফগানিস্তান সিরিজের মাঝপথে আচমকা অবসর ঘোষণার পর নিজেই বলেছিলেন, একবার অবসর নিয়েছি। আর কত? আর অবসর নেব না।
মাশরাফি বিন মর্তুজার মতো ক্রিকেটার অবসর ঘোষণা না করে একরকম প্রতিবাদই করেছেন। এবার যুক্ত হতে পারেন তামিম ইকবাল, দেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক রান করা ক্রিকেটার।
অভিমান নাকি দেশীয় ক্রিকেটের সিস্টেমেই কোনো গলদ আছে- এটা ভাবা অত্যন্ত জরুরি।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন