ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ে তিনি অর্থায়ন করবেন না। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান রবিবার এ মন্তব্য করেছেন।
২০২৪ সালের মার্কিন নির্বাচনে অরবান তাঁর এই দীর্ঘমেয়াদি মিত্রকে প্রকাশ্যে সমর্থন করছেন। ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের পর রক্ষণশীল এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে তিনি (ট্রাম্প) একটি পয়সাও দেবেন না।
এ কারণেই যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবে।’ সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট পুনরায় নির্বাচিত হলে ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে’ যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত আর কিছু বলেননি।
অরবান রবিবার দিনের শেষের দিকে হাঙ্গেরির এম১ টিভি চ্যানেলকে বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে ইউক্রেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না।
যদি আমেরিকানরা ইউরোপীয়দের সঙ্গে অর্থ ও অস্ত্র না দেয়, তাহলে যুদ্ধ শেষ। যদি আমেরিকানরা অর্থ না দেয়, তবে ইউরোপীয়রা একা এই যুদ্ধে অর্থায়ন করতে অক্ষম। তারপর যুদ্ধ শেষ হবে।’
তিনি আরো বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কিভাবে শেষ করা যায় সে সম্পর্কে ট্রাম্পের ‘বেশ বিশদ পরিকল্পনা’ রয়েছে।
তবে তিনি এ নিয়ে কোনো বিশদ বিবরণ দেননি।
এদিকে অরবানের টিভি সাক্ষাৎকারের বিষয়ে ট্রাম্প প্রকাশ্যে মন্তব্য করেননি। তবে ট্রাম্পের মার-এ-লাগো প্রাসাদে তাঁদের শুক্রবারের বৈঠকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর অতিথির প্রশংসা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘ভিক্টর অরবানের চেয়ে ভালো, স্মার্ট বা ভালো নেতা আর কেউ নেই। তিনি অসাধারণ।
’
এদিকে মার্কিন সফরের সময় অরবান বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দেখা করেননি। বাইডেন নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রেসিডেন্টম নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। একজন সফররত বিদেশি নেতার পক্ষে বর্তমান নেতৃত্বকে ডাকা ছাড়াই সাবেক প্রতিপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করা অত্যন্ত অস্বাভাবিক।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সহকর্মী ইইউ নেতাদের কাছ থেকে বারবার কঠোর সমালোচনার শিকার হয়েছেন। অরবান তাঁর প্রতিবেশী ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠাতেও অস্বীকার করেছেন। তিনি বারবার বলেছেন, পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাশিয়ার বিরুদ্ধে কিয়েভ জিততে অক্ষম।
ইইউ নেতারাও ক্রমবর্ধমানভাবে উদ্বিগ্ন, ট্রাম্প দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হলে ইউক্রেন ও ন্যাটো সামরিক জোটে দেশটির সামরিক ও আর্থিক সহায়তা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। রিপাবলিকান বিরোধিতার কারণে মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের জন্য ৬০ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তাসহ ৯৫ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক সহায়তা বিল স্থগিত করা হয়েছে।
রুশ বাহিনীও সম্প্রতি পূর্ব ইউক্রেনে সাফল্য অর্জন করেছে। কারণ কিয়েভ গোলাবারুদের তীব্র ঘাটতিতে রয়েছে। ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা মিত্রদের অস্ত্রের ওপর নির্ভরশীল।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন