বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি পেমেন্টের কারণে দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হচ্ছে। অযৌক্তিক ক্যাপাসিটি পেমেন্ট সমন্বয় করা গেলে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির দরকার হতো না। এটা সরকারের প্রথম অগ্রাধিকারে থাকা দরকার। কিন্তু সরকার ধাপে ধাপে আরো মূল্যবৃদ্ধির কথা বলছে।
সেটা হলে ভোক্তার জন্য আরো বড় নাভিশ্বাস তৈরি করবে। ‘সাম্প্রতিক বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, ভর্তুকি সমন্বয়ে অন্য বিকল্প আছে কী’ শীর্ষক এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
গতকাল রাজধানীর ধানমণ্ডিতে সংস্থার নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত ওই ব্রিফিংয়ে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, এর প্রভাব, বিকল্প উপায় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, সরকার বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করে এটিকে সমন্বয় বলছে।
বাস্তবতা হলো এটি মূল্যবৃদ্ধি। ভর্তুকি সমন্বয়ের নামে এই মূল্য বৃদ্ধি করেছে সরকার। এর ফলে ভোক্তার ব্যয় বেড়েছে। সিপিডির গবেষণা পরিচালক বলেন, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে পাশ কাটিয়ে সরকারের নির্বাহী আদেশে মূল্যবৃদ্ধির কারণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির জায়গাগুলো ধীরে ধীরে ক্ষয়িষ্ণু হয়ে আসছে।
এটা দুর্ভাগ্যজনক।
গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ক্যাপাসিটি চার্জের পাশাপাশি বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে উচ্চমূল্যে বিদ্যুত্ কেনা, এলএনজি ও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দিকে ঝোঁক এবং বিদ্যুত্ কেনায় প্রতিযোগিতার অভাব। বিশেষ ক্ষমতা আইনে বিদ্যুত্ কেনার চুক্তির কারণে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক আরো জানান, সর্বশেষ বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রতি পরিবারে মাসিক ব্যয় গড়ে ৯.৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র শিল্পে ৯.১২ শতাংশ, ব্যবসা ও অফিসে ৯.৭১ শতাংশ, শিল্পে ১০ শতাংশ এবং সেচে ১.০২ শতাংশ বিদ্যুত্ বিল বেড়েছে। পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও এর সঙ্গে বেড়েছে।
সিপিডির এই অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয়, ভর্তুকি সমন্বয়ের জন্য সরকারের হাতে চারটি বিকল্প রয়েছে। এগুলো হলো সময়মতো বিভিন্ন জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করা, বেসরকারি খাতে নতুন বিদ্যুত্ কিনতে নো ইলেকট্রিসিটি নো পেমেন্ট শর্তে বিদ্যুত্ কেনার চুক্তি করা, নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো এবং প্রয়োজনে খুবই সামান্য পরিমাণে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করা।
এগুলো বাস্তবায়ন করলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এ খাতে আর ভর্তুকির প্রয়োজন পড়বে না। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গবেষণা সহযোগী হেলেন মাশিয়াত প্রিয়তি, মাশফিক আহসান হৃদয়, প্রগ্রাম সহযোগী ফয়সাল কাইয়ুম প্রমুখ।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন