সাভারের বোট ক্লাবে মারধর ও যৌন হয়রানির মামলায় সাক্ষ্য শেষ না করে একাধিকবার সময় চাওয়ায় আসামিদের যাতায়াত ভাড়া দিতে মামলার বাদী চিত্রনায়িকা পরীমনিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২০ মার্চ) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচারক শাহানা হক সিদ্দিকা পরীমনির আইনজীবীকে এই আদেশ দেন। এদিন পরীমনির অসমাপ্ত সাক্ষ্য শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি আদালতে হাজির হননি।
তার পক্ষে আইনজীবী জয়া রাণী দাশ সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাতে সময়ের আবেদন করেন। সেখানে বলা হয়, পরীমনি সিনেমার শুটিংয়ের জন্য ভারতে থাকায় আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি।
অন্যদিকে মামলার আসামি ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদের আইনজীবী আবুল কালাম মোহাম্মদ সোহেল পরীমনির অসমাপ্ত সাক্ষ্য শেষ করার আবেদন করেন।
২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর পরীমনি সাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেন।
এরপর ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি, ৬ মার্চ ও ২৩ মে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন পরীমনি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। ২৪ জুলাই আংশিক সাক্ষ্য দেন। এরপর ১৩ সেপ্টেম্বর এবং চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি আবারও অনুপস্থিত থাকেন।
আবুল কালাম মোহাম্মদ বলেন, অবশিষ্ট সাক্ষ্য দিতে পরীমনির ‘অবহেলায়’ আদালতের সময় নষ্ট হচ্ছে।
আসামিরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। পরীমনি সাক্ষ্য শেষ না করলে বিঘ্নিত হবে। আসামিপক্ষের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক পরীমনিকে শেষবারের মতো সময় দেন। পাশাপাশি আসামিদের যাতায়াত ভাড়া হিসেবে এক হাজার টাকা করে দিতে নির্দেশ দেন পরীমনিকে।
এ মামলার তিন আসামি উত্তরা ক্লাবের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন মাহমুদ, তুহিন সিদ্দিকী অমি ও শহিদুল আলম। আবাসন ব্যবসায়ী নাসির ঢাকা বোট ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। অমি ও শহিদুল আলমও বোট ক্লাবের সদস্য ছিলেন।
২০২১ সালের ৮ জুন পরীমনি সাভারের বিরুলিয়ায় তুরাগ তীরে ওই ক্লাবে হেনস্তার শিকার হওয়ার অভিযোগ তোলেন। তাতে শোরগোল পড়ে যায়। ওই বছরের ১৩ জুন রাতে পরীমনি ফেসবুকে পোস্টে লেখেন, তিনি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাকে ‘ধর্ষণ এবং হত্যার’ চেষ্টা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চেয়ে লেখা ওই পোস্ট দ্রুত ভাইরাল হয়। পোস্টটি দেয়ার ঘণ্টাখানেক পরে ওইদিন গুলশানে নিজের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন। পরদিন ধর্ষণচেষ্টা, হত্যাচেষ্টা ও মারধরের অভিযোগে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা।
মামলা দায়েরের পর ব্যবসায়ী নাসির ও অমিকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্ত শেষে সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন ৭ সেপ্টেম্বর তিনজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এরপর ২০২২ বছরের ১৮ মে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামিদের বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন