দেশের শিক্ষাঙ্গনসহ সব কর্ম ক্ষেত্রে নারীদের যৌন নিপীড়ন ও যৌন হয়রানি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ৬৬টি সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। নিপীড়ন ও হয়রানি বন্ধে তারা আইনের কঠোর বাস্তবায়ন, আদালতে নির্দেশ অনুযায়ী অবিলম্বে সব ক্ষেত্রে যৌন হয়রানি-নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটির গড়ে তোলা, কমিটির কার্যক্রম নিশ্চিত করা, কমিটিতে নারী সদস্যসহ নারী অধিকার আদায়ে বিভিন্ন সংগঠনের অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করার প্রতি গুরুত্ত্বারোপ করেন। একই সঙ্গে লিখিত আকারের ২৩টি সুপারিশ জানান।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দুপুর ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে ‘যৌন হয়রানি ও যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে' সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়।
’
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্বকালে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘গত এক বছরে ৬৭ জন নারী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের মাধ্যমে এ তথ্য জানা যায়। এর বাইরে বিশাল একটি সংখ্যা অজানা রয়ে গেছে। যৌন হয়রানি একটি ফৌজদারি অপরাধ।
এর কঠোর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। যৌন নিপীড়ন রোধে কমিটি গঠনের যে আইন আছে তা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব কর্মস্থলে বাস্তবায়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ বিষয়ে সর্বপ্রথম সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সহ দপ্তর-অধিদপ্তর কর্মকর্তাদের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’ লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক একটি বড় বাধা আছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. সালমা আলী বলেন, ‘নারী নির্যাতন ও যৌন হয়রানীর মতো অপরাধ একের পর এক ঘটেই যাচ্ছে। রাস্তাঘাটে নারী উত্যক্ত করাকে এক সময় হালকাভাবে দেখা হতো। এখন একজন শিক্ষার্থী যৌন নিপীড়নের শিকার হলে অন্য শিক্ষার্থীরা ভয়ে মুখ খোলে না। মামলা করতে পরিবার থেকেও সাপোর্ট পায় না। অনেক সরকারি চাকরিজীবী আছেন যারা চাকরি হারানোর ভয়েও প্রতিবাদ করেন না।
’
কর্মজীবী নারীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিরীন আখতার বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) এ ধরনের ঘটনা নতুন না। এর আগেও বহুবার এমন ঘটনা ঘটেছে। শুধু জবি না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই নারীরা যৌন হয়রানির শিকার। মাদরাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও একই অবস্থা দেখতে পাই। এর প্রতিবাদে আমাদের সম্মিলিতভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে, তবে নিরাপত্তার ব্যবস্থা এখনো নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকলেও যৌন প্রতিরোধ কমিটিতে কারা থাকবে, কি উদ্যোগ নিতে হবে, এ নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কোনো ধারণাও নাই।’
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নারী প্রগতির সংঘ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও অ্যাকশন এইট বাংলাদেশসহ নারীদের অধিকার আদায়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের শীর্ষ নেতারা।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন