ফিলিস্তিনের কাছে বড় হার বাংলাদেশের

নিজেদের হোম ম্যাচগুলো কুয়েতে খেলে থাকে ফিলিস্তিন। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে ফিলিস্তিন স্বাগতিক দেশ হলেও ভিন্ন চিত্রই দেখা গেল এদিন। জাবের আল আহমাদ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের ৬০ হাজার ধারণক্ষমতার অধিকাংশ সমর্থকই ছিল বাংলাদেশের। জামাল-রাকিবদের পায়ে বল গেলে কুয়েতে প্রবাসী বাঙালিরা গলা ফাটিয়ে সমর্থন জুগিয়েছেন।

সুবাদে বাংলাদেশ দলও সমর্থকদের আশাজাগানিয়া নৈপুণ্য উপহার দিচ্ছিল। কিন্তু প্রথমার্ধের শেষ দিকে এসে ঝড় বইয়ে শক্তির প্রার্থক্য বুঝিয়ে দেয় ফিলিস্তিনের ফুটবলাররা। পর পর দুই গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় স্বাগতিকরা। দ্বিতীয়ার্ধে আরো তিন গোল করে ৫-০ গোলের বড় জয় তুলে নিয়েছে ফিলিস্তিন।

ওবাই দাবাঘ করেছেন হ্যাটট্রিক এবং জোড়া গোল শেহাব কুমবরের। 

 

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে 'আই' গ্রুপে তিন ম্যাচে একটি করে জয়, হার ও ড্রতে চার পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ফিলিস্তিন। আর দুটি হার ও একটি ড্রয়ে এক পয়েন্টে সবার শেষে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে শতভাগ জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া আর তিন ম্যাচে দুই ড্র ও এক হারে দুই পয়েন্টে তিনে লেবানন।

 

র‍্যাংকিংয়ে ৮৬ ধাপ এগিয়ে থাকা ফিলিস্তিনের সঙ্গে সমান তালে লড়ছিল বাংলাদেশ। মিডফিল্ডার সোহেল রানা সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট না করলে ম্যাচের চিত্র ভিন্ন রকম হতে পারত। সপ্তম মিনিটে প্রতি আক্রমণে প্রথম সুযোগ আসে বাংলাদেশের সামনে। ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে ওঠেন রাকিব হোসেন, বক্সে জায়গা নিয়েছিলেন ফয়সাল ফাহিম কিন্তু রাকিবের কাটব্যাক ফাহিমকে খুঁজে পায়নি। বল ক্লিয়ার করেন ফিলিস্তিনের এক ডিফেন্ডার।

 

 

নবম মিনিটে অল্পের জন্য গোল পায়নি ফিলিস্তিন। সতীর্থের লং পাস বিশ্বনাথ ঘোষ লাফিয়ে উঠলেও মাথা ছোঁয়াতে পারেননি। বল পেয়ে যায় অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়া ওদেই দাবাঘ। কিন্তু তাড়াহুড়ো করে ক্রসবারের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন এই ফরোয়ার্ড।

১৯ মিনিটে আবারও সেই একই দৃশ্যের মঞ্চায়ন। সতীর্থের লং বল অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে প্রথম ছোঁয়ায় নিয়ন্ত্রণে নেন ইসলাম বার্তান। পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে মিতুল পথ আগলে দাঁড়ান ফিলিস্তিনের এই ফরোয়ার্ডের। গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে বাতার্নের চিপ শট উপরের জালে গিয়ে পড়ে। তাতে আরেকদফা বেঁচে যায় বাংলাদেশ।

ডান দিক দিয়ে গতির ঝলকানি দেখিয়েছেন রাকিব হোসেন। তাকে আটকাতে ব্যস্ত ছিল ফিলিস্তিনের ডিফেন্ডাররা। তাতে তৈরি হচ্ছিল সুযোগ। সেট পিস থেকে ২৩ মিনিটে ‘হাফচান্স’ পায় বাংলাদেশ। কিন্তু ইসা ফয়সালের ক্রসে ফাহিমের হেডে ছিল না গোলরক্ষককে পরাস্ত করার মতো গতি। চার মিনিট পর আসে সুবর্ণ সুযোগ। বাঁ দিক থেকে একাধিক ডিফেন্ডারের প্রতিরোধ ভেঙে বক্সে বল বাড়ান রাকিব; ফাঁকায় থাকা সোহেল অকারণ তাড়াহুড়ো করে ক্রসবারের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন। দারুণ সুযোগ নষ্টের হতাশায় মাথায় হাত দিয়ে বসেন এই মিডফিল্ডার।

৩১ মিনিটে দাবাঘের শট কোনোমতে পা দিয়ে ঠেকিয়ে বাংলাদেশের ত্রাতা মিতুল। কিন্তু ৪২ মিনিটে আর আটকাতে পারেনি ফিলিস্তিনকে। ডান দিক থেকে আসা ক্রসে মাহমুদ আবুওয়ারদা শট নিলে তা ফিরিয়ে দেন মিতুল, ফিরতি বল পেয়েই স্লাইডিং শটে জাল খুঁজে নেন ওদাই দাবাঘ। বিরতিতে যাওয়ার আগেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফিলিস্তিন। যোগ করা সময়ে কর্নার থেকে উড়ে আসা বল জটলার মধ্য থেকে জালে পাঠান শেহাব কুমবর। 

বিরতি থেকে ফিরে আবারো বাংলাদেশের ওপর ঝড় বয়ে যায়। চার মিনিটের মধ্যে আরো দুই গোল হজম করতে হয়। ৪৯ মিনিটে কুমবর পেয়ে যান দ্বিতীয় গোল। আর ৫৩ মিনিটে  মাহমুদ ঈদের ক্রসে ছয় গজ বক্সে বাম পায়ের ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন দাবাঘ। চেয়ে চেয়ে দেখেছে বাংলাদেশের রক্ষণভাগ

একটু পরই তিনটি পরিবর্তন আনেন বাংলাদেশ কোচ। ফাহিম, সোহেল ও জনিকে তুলে রবিউল হাসান, সুমন রেজা ও চন্দন রায় নামান কাবরেরা। এ ম্যাচ দিয়েই লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেক হলো চন্দনের, যদি তিক্ত অভিজ্ঞতাই হয়েছে তার। খেলোয়াড় পরিবর্তন করেও কাজ হয়নি। ৭৭ মিনিটে পঞ্চম গোল হজম করে বাংলাদেশ। ফিলিস্তিনের ব্যবধান বাড়ানোর সঙ্গে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ওদাই দাবাঘ। বাকি সময় ব্যবধান ধরে রেখে বড় জয় নিশ্চিত করে ফিলিস্তিন।

আগামী ২৬ মার্চ ফিরতি লেগে ঢাকায় কিংস অ্যারেনায় মুখোমুখি হবে দুই দল।

জিবিডেস্ক //

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন