গাজাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বশেষ হামলায় এক দিনেই শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা গতকাল বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। গাজা সিটির পশ্চিমাঞ্চলে আল-মিনা এলাকার একটি বাড়িতে ইসরায়েলি গোলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে। এ ছাড়া গাজা সিটির পশ্চিমাঞ্চলে শাতি শিবিরের আরেকটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছে।
মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ শহরের একটি বাড়িতে বোমা হামলায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি বাড়িতে বোমা হামলায় ৯ জন নিহত হয়েছে। ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৩১ হাজার ৯৮৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭৪ হাজার ১৮৮ জন আহত হয়েছে।
গাজার ৩৫ শতাংশ ভবন ধ্বংস
জাতিসংঘের স্যাটেলাইট সেন্টার ইউএনওএসএটি ২৯ ফেব্রুয়ারি স্যাটেলাইট থেকে তোলা সংঘর্ষ শুরু হওয়ার আগে ও পরের ছবির তুলনা করেছে।
সেখানে দেখা গেছে, গাজার ৮৮ হাজার ৮৬৮টি ভবনের মধ্যে ৩১ হাজার ১৯৮টি ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ১৬ হাজার ৯০৮টি ভবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৪০ হাজার ৭৬২টি ভবন মধ্যম মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অর্থাৎ গাজার ৩৫ শতাংশ ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে।
এখনো অবরুদ্ধ আল-শিফা হাসপাতাল
আল-শিফা হাসপাতালে চতুর্থ দিনের মতো ইসরায়েলের অভিযান চলছে।
হাসপাতালটি ইসরায়েলি সেনারা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। আলজাজিরার প্রতিবেদক জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনী হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ পরিচর্যাকেন্দ্র পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। এই ভবনটি একেবারে নতুন। এখানে ফিলিস্তিনিদের অস্ত্রোপচার করা হতো। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হাসপাতালের ভেতর থেকে চিকিৎসাকর্মী, রোগীসহ সবাইকে অবিলম্বে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
পুরো হাসপাতালটিই উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে তারা। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বিবৃতিতে জানিয়েছে, আল-শিফার ভেতরে কমপক্ষে ১৪০ জন নিহত হয়েছে। তবে নিহতরা হামাস সদস্য বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। অবশ্য তাদের দাবির বিষয়টি যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
এছাড়া হাসপাতালের আশপাশে ভয়াবহ বোমা হামলাও অব্যাহত রয়েছে। আরো আবাসিক ভবনগুলো লক্ষ্যবস্তু ও ধ্বংস করা হচ্ছে। ওই সব ভবনে বেসামরিক নাগরিকরা আটকা পড়েছে। তাদের নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে না আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে তোড়জোড় ব্লিনকেনের
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু করেছেন। সৌদি আরবে গতকাল ব্লিনকেন বলেন, তাঁর বিশ্বাস, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি ‘একেবারেই সম্ভব’। কারণ তাদের অব্যাহত আলোচনার মধ্যে ‘ফাঁকগুলো কমে যাচ্ছে’।
যুদ্ধবিরতি আলোচনা নিয়ে হতাশা হামাসের
কাতারে চলমান যুদ্ধবিরতির আলোচনা নিয়ে হতাশ হামাস। হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ওসামা হামদান বলেছেন, তাঁদের দেওয়া গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া ‘নেতিবাচক’। তাই কাতারে আলোচনা আবারও চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন