জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
তুরস্কের একটি অতি-দক্ষিণপন্থী ও চরম জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো ফ্রান্স। তাদের এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরো বাড়িয়েছে।
ফরাসি সরকার বুধবার (৪ নভেম্বর) তুরস্কের ‘গ্রে উলভস’ গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো। সরকারের দাবি, এই চরমপন্থী অতি-জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী ঘৃণা ছড়াচ্ছে এবং সহিংসতায় উস্কানি দিচ্ছে। সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ফ্রান্সের অভিযোগ, এই গোষ্ঠী চরম সহিংস কাজে লিপ্ত, তারা সহিংস হুমকি দিচ্ছে এবং আর্মেনিয়দের মধ্যে ঘৃণা ছড়াচ্ছে। গত সপ্তাহে লিয়ঁ শহরে আর্মেনিয়দের একটি স্মারকের মর্যাদাহানি করা হয়েছে বলে মুখপাত্র জানিয়েছেন।
এই স্মারকটি ১৯১৫ সালে গণহত্যায় নিহত আর্মেনিয় মানুষদের স্মরণে তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে ‘গ্রে উলফ’, ‘আরটিই’ ও তুরস্কপন্থী স্লোগান লেখা হয়েছে। আরটিই হলো রেচেপ তাইয়্যিপ এর্দোয়ানের নামের অদ্যাক্ষর।
আর্মেনিয়া দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানাচ্ছে, অটোমান সাম্রাজ্যের সময় ১৯১৫ সালে নরসংহারকে গণহত্যা বলতে হবে। ফ্রান্স এই দাবি সমর্থন করে।
গ্রে উলভস কারা?
এর্দোয়ানের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভলাপমেন্ট পার্টির শরিক হলো ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টি। গ্রে উলভস-কে তাদেরই শাখা সংগঠন বলা হয়। ১৯৬০ ও ৭০-এ তুরস্কে একটি আন্দোলন শুরু হয়। তাদেরই বলা হত গ্রে উলভস। ১৯৮০-র পরের বছরগুলিতে তারা কমিউনিস্ট ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংস কার্যকলাপ চালায়।
ইতিমধ্যেই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই নিয়ে ফ্রান্স ও তুরস্কের মধ্যে লড়াই তীব্র হয়েছে। বুধবারের এই সিদ্ধান্ত তাকে আরো বাড়াতে পারে।
এরদোয়ান সম্প্রতি বলেছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর মানসিক চিকিৎসা দরকার। কারণ তিনি মহানবী(সাঃ)-র কার্টুন সমর্থন করেছেন।
শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটি ও গির্জায় ঢুকে তিনজনকে হত্যার পরই ফ্রান্স এখন চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। তা নিয়ে ফ্রান্স ও তুরস্কের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। নাগর্নো কারাবাখ নিয়েও ফ্রান্স ও তুরস্কের মধ্যে ঝগড়া সামনে এসেছে।
তুরস্কর প্রতিক্রিয়া
ফ্রান্সের এই সিদ্ধান্তের উপযুক্ত জবাব দেবে বলে জানিয়েছে তুরস্ক।তুরস্কের বিদেশমন্ত্রকের দাবি, ‘‘গ্রে উলভস বলে কোনো গোষ্ঠী নেই। ফ্রান্স মনগড়া একটি গোষ্ঠী তৈরি করেছে।’’ বিবৃতি দিয়ে বিদেশমন্ত্রক দাবি করেছে, ‘‘ফ্রান্সে তুরস্কের যে মানুষ আছেন, তাঁদের স্বাধীনতা, জমায়েতের অধিকার এবং মত প্রকাশের অধিকারকে রক্ষা করতে হবে। কিন্তু সরকার ফ্রান্সে তুরস্কের লোকেদের আক্রমণ, উস্কানি ও হুমকি নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’’
বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘‘ফরাসি সরকার এখন পুরোপুরি মার্কিন প্রভাবে কাজ করছে। তারা দুমুখো নীতি নিয়ে চলছে। কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স ফোর্স সহ অন্য গোষ্ঠীগুলিকে তাঁরা সমর্থন করছে।’’ তুরস্ক আবার কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স ফোর্সকে জঙ্গি গোষ্ঠী মনে করে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন