স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের আশ্বাসে দেশব্যাপী কর্মবিরতি আন্দোলন স্থগিত করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের নেতারা। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দেশব্যাপী আন্দোলনরত ইন্টার্নি চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধি দাবির প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ সভা শেষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এই ঘোষণা দেন।
সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন মিটফোর্ড হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি আন্দোলন প্রসঙ্গে সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘ইন্টার্ন চিকিৎসকরাই একটি হাসপাতালের প্রাণ।
তারা খেয়ে না খেয়ে হাসপাতালের রোগীদের সেবা করেন। সিনিয়র চিকিৎসকরা রাউন্ড দিয়ে চলে গেলে এই ইন্টার্ন চিকিৎসকরাই রোগীদের নানা রকম অসুবিধাগুলোর দেখভাল করেন। কাজেই তাদের দাবিগুলোর যৌক্তিকতা বুঝে আমি নিজে ফাইল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কথা বলেছি। প্রধানমন্ত্রী ফাইল গ্রহণ করেছেন এবং অতি দ্রুত দেশের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের জন্য ভাতা বৃদ্ধির সুরাহা করতে উদ্যোগ নেবেন।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বলতে চাই, আপনারা আন্দোলন না করে চিকিৎসা শিক্ষার কাজে মনোযোগ দিন। প্রধানমন্ত্রী আপনাদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল।’
এর আগে দুপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ সভায় আন্দোলনের বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, সচিব, মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, অধ্যক্ষ, পরিচালকসহ পেশাজীবী চিকিৎসক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
সভায় আলোচনা করেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব ওয়াহেদুজ্জামান, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএসএমএমইউর নবনিযুক্ত ভিসি ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন চৌধুরী, স্বাচিপ মহাসচিব ডা. কামরুল হাসান মিলন, বিসিপিএস সভাপতি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ্সহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সভায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ, কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজসহ অন্যান্য বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের নেতাদের দাবিগুলোর মধ্যে বর্তমানে ভাতা ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার টাকা, প্রতিবছর এক হাজার টাকা করে ভাতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা রাখা, হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা, চিকিৎসকদের ঝুঁকিভাতা রাখা, বকেয়া ভাতা পরিশোধ করাসহ অন্যান্য দাবি তুলে ধরেন।
সভায় পেশাজীবী চিকিৎসক নেতরা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলনে তুলে নিতে অনুরোধ করেন। পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আন্দোলনরত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবি পূরণে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস দিলে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের নেতারা একযোগে আন্দোলন প্রত্যাহারে একমত হন।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন