জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত দুর্ভিক্ষ এড়াতে ইসরায়েলকে গাজায় নিরবচ্ছিন্ন ত্রাণ সরবরাহের পথ খুলে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া কয়েক সপ্তাহের মধ্যে গাজায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলেও আদালত সতর্ক করেছেন। যদিও আইসিজে-এর জারি করা আদেশগুলো প্রয়োগের ক্ষমতা নেই আদালতের নেই।
ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস (আইসিজে) বলেছে, ‘ইসরায়েলকে অবশ্যই বিলম্ব না করে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় মৌলিক পরিষেবা এবং মানবিক সহায়তার ব্যবস্থা...করতে হবে।
’ তবে ইসরায়েল সাহায্য বন্ধ করার অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তারা দক্ষিণ আফ্রিকা কর্তৃক আইসিজে-তে দায়ের করা গণহত্যার অভিযোগও অস্বীকার করেছে এবং ত্রাণ সরবরাহে সমস্যার জন্য উল্টো জাতিসংঘকে দায়ী করেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে মিসর থেকে গাজায় প্রবেশের অপেক্ষায় সাহায্যকারী ট্রাকের দীর্ঘ সারি তৈরি হতে দেখা গেছে। কোনো ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতে পারছে না।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, চেক পয়েন্টে ট্রাকগুলো থামিয়ে দীর্ঘ সময় নিয়ে চেক করা হচ্ছে। ইসরায়েলে বলছে, হামাস গাজায় প্রবেশ করা সাহায্যের বেশিরভাগই নিয়ে নেয় এবং জাতিসংঘও বেসামরিক জনগণের জন্য যা অবশিষ্ট থাকে, তা বিতরণ করতে ব্যর্থ।
জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত তাদের রায়ে বলেছেন, “গাজা এখন আর শুধু দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির সম্মুখীন নয় বরং দুর্ভিক্ষ শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকদের মতে, ২৭ জন শিশুসহ ৩১ জন ইতিমধ্যেই অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে মারা গেছে।
” আদালত মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের মন্তব্যও উল্লেখ করেছেন। তিনি গত সপ্তাহে বলেছিলেন, “ক্ষুধা, অনাহার এবং দুর্ভিক্ষের এই পরিস্থিতি ইসরায়েলের মানবিক সহায়তা এবং বাণিজ্যিক পণ্যের প্রবেশ ও বিতরণের ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞার ফল। অধিকাংশ জনগণ বাস্তুচ্যুত হয়েছে সেইসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।”
আদালত বলেছেন, ‘ইসরায়েলকে অবশ্যই বিলম্ব না করে জাতিসংঘের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা, নিরবচ্ছিন্ন ত্রাণ সরবরাহ... জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় মৌলিক পরিষেবা নিশ্চিত করার জন্য সকল প্রয়োজনীয় এবং কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।’ রায়ে আরো বলা হয়, “ইসরায়েলকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে তার সামরিক বাহিনী যেন গাজায় ফিলিস্তিনিদের অধিকার লঙ্ঘন না করে।
”
গত সপ্তাহে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এবং অন্যদের পরিচালিত ‘ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ’-এর একটি প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, গাজায় বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। গাজার ২.২ মিলিয়ন মানুষের সবাই তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন এবং সেই দুর্ভিক্ষ আগামী মে মাসের শেষে ভূখণ্ডের উত্তরে আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন