বাংলাদেশি উইন রোজারিওকে হত্যায় অভিযুক্তদের শাস্তি দাবিতে নিউইয়র্কে বিক্ষোভ

নিউইয়র্কে মা ও ছোট ভাইয়ের সামনে পুলিশ বাংলাদেশি তরুণ উইন রোজারিওকে (১৯) গুলি করে হত্যা করায় প্রবাসীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার (২৯ মার্চ) কুইন্সের জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় জড়ো হন বিপুল সংখ্যক মানুষ। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন ‘প্রবাসী বেঙ্গলী খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন’র সাবেক সভাপতি গ্যাব্রিয়েল তাপস গমেজ, বিকাশ গমেজ, লুথারেন চার্চের প্যাস্টর জ্যামস রয়, দক্ষিণ এশিয়ান-আমেরিকানদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে কর্মরত ‘স্যাফেস্ট’র প্রধান নির্বাহী মাজেদা এ উদ্দিন, কম্যুনিটি অ্যাক্টিভিস্ট এ এফএম মেসবাহউজ্জামান প্রমুখ।

‘প্রবাসী বেঙ্গলী খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন’র র‌্যালিতে জড়ো হয়েছিলেন হিন্দু, বৌদ্ধ এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের সর্বস্তরের প্রতিনিধিত্বকারীরা। ছিলেন পেশাজীবী এবং ডেমক্র্যাটিক পার্টির নেতৃবৃন্দের সাথে গণমাধ্যম কর্মীরাও। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও প্রচণ্ড ক্ষোভ দেখায় এই র‌্যালি থেকে। র‌্যালিতে ছিলেন অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী।
তিনি জানান, উইন রোজারিওর পরিবার এই হত্যাকাণ্ডে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনী লড়াই চালানোর জন্য তার সহযোগী ফার্মকে নিযুক্ত করেছেন। ইতিমধ্যেই তারা যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করেছেন। অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের বডি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়েছে। আনুসঙ্গিক সবকিছু তাদের ফার্মের বিশেষজ্ঞরা খতিয়ে দেখবেন।

ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার অ্যাট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী আরও জানান, প্রচলিত রীতি অনুযায়ী উইন রোজারিওর হত্যাকাণ্ডের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু করেছেন স্টেট অ্যাটর্নি জেনারেল। পাশাপাশি আমাদের ফার্মও তদন্তে নেমেছে। ন্যায় বিচারের জন্য আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ে লড়ে যাবো।

১৯ বছর বয়সী বাংলাদেশি আমেরিকান উইন রোজারিওর ছবিসহ প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। প্রত্যেকে ছিলেন সরব। একই দাবিতে ১ এপ্রিল সোমবার অপরাহ্নে একইস্থানে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ‘গাজীপুর জেলা অ্যাসোসিয়েশন’।

এই সংগঠনের সেক্রেটারি ইছহাক মোল্লা বাবু এ সংবাদদাতাকে জানান, নিহত উইনের বাড়ি হচ্ছে গাজীপুর জেলার পূবাইলের হারবাইদ গ্রামে। উইনের বাবা ফ্রান্সিস রোজারিও এবং মা ইভা কোস্টা পুত্রকে এভাবে হারানোর বেদনায় কাতর।

এদিকে, নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের অস্ত্র কেড়ে নেয়া হয়েছে। তদন্তের ভিত্তিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন (বাপা)’র কর্মকর্তারা নাম গোপন রাখার শর্তে এ সংবাদদাতাকে বলেছেন, তারা অনানুষ্ঠানিকভাবে বডি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করেছেন। উইন পুলিশের দিকে কাঁচি হাতে তেড়ে আসায় আত্মরক্ষার্থে গুলি করতে বাধ্য হয়েছেন কর্তব্যরত অফিসারেরা।

যদিও উইনের মা ইভা কোস্টা বলেছেন যে, সামান্য মানসিক বিকারগ্রস্ত উইন উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় ৯১১ এ কল করা হয়েছিলো পুলিশের জরুরি সহায়তার জন্য। দ্রুত আসেন পুলিশ অফিসারেরা। তারা বাসায় ঢুকেই উইনকে নিবৃত করার চেষ্টা করেন। উইন তাতে সাঁয় দেননি। অধিকন্তু রান্না ঘরে ব্যবহৃত কাঁচি হাতে নিয়ে পুলিশকে ভয় দেখায়। সে অবস্থায় তিনি উইনকে জড়িয়ে ধরেন যাতে সে কোন অপকর্ম করতে না পারে। এমনি অবস্থায় অন্তত: ৫ রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে উইনকে হত্যা করা হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন