সুনামগঞ্জে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ৩০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন আমেরিকান প্রবাসী নজরুল আহমদ। মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থেকে তাহিরপুর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষক তাহেরা আক্তারের বিরুদ্ধে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী আমেরিকান প্রবাসী নজরুল ইসলাম বলেন, আমি আমেরিকান প্রবাসী, আমি ২০ বছর ধরে আমেরিকার একটি শহরে বসবাস করি। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের পুরান বারুংকা গ্রামের বাসিন্দা ও রাছিনগর মাহমুদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা তাহেরা আক্তার (৩০) আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক করে বিভিন্ন অজুহাতে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা, আইফোন, লেপটপ, স্বর্ণালঙ্কার সহ মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেয়। এই শিক্ষিকার দ্বারা আমি মারাত্মক ভাবে প্রতারিত হই। এতে সঠিক বিচার ও প্রতারক শিক্ষিকার শাস্তির দাবি জানাই।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালে আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে মোবাইলে পরিচয় হয় স্কুল শিক্ষিকা তাহেরা আক্তারের সাথে। মোবাইলে কথা বলতে বলতে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে তার সাথে। এর সূত্র ধরে তার পরিবারের সকল সদস্যের সাথেও আন্তরিকতা তৈরি হয়। এরই মধ্যে তাহেরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করতে থাকে আমার সাথে। কিছুদিনের মধ্যেই বিয়ের প্রস্তাব দেয় সে। আমি সরল মনে রাজি হই এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তার মোবাইল ফোন থেকে আমাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে তার আপত্তিকর ছবি, ভিডিও দেয়। এতে আমি তার প্রতি মারাত্মকভাবে দুর্বল হই। তাহেরা নানাভাবে ম্যানেজ করে তার জন্য টাকার কথা বলে। আমি নিজের ইনকাম থেকে কষ্ট করে তার জন্য টাকা পাঠাই। সে আমার টাকায় নিজ বাড়িতে ১৫-২০ লাখ টাকা ব্যয়ে বিশাল প্রাসাদ নির্মাণ করে। তার দুই বোনের সরকারী চাকুরী ও বিয়ের জন্য আমার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেয়। আমি তার আপত্তিকর ভিডিও, ছবিতে দূর্বল হয়ে তাকে বিয়ে করার মানসিকতায় সরল চিন্তা থেকে ব্যাংক মারফত এবং বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে দফায় দফায় প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা পাঠাই। এর বাইরেও তাহেরা আমাকে বিয়ের প্রলোভনে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে মাসে মাসে হাত খরচের টাকা সহ আইফোন, লেপটপ, স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান জিনিসপত্র নেয় আমার কাছ থেকে।
তিনি বলেন, আমি দেশে আসতে চাইলে তাহেরা বাঁধা দিতো, সে নিজে চাকুরী ছেড়ে উন্নত জীবনের জন্য আমেরিকায় আমার কাছে আসার ইচ্ছা ব্যক্ত করে। তাহেরাও আমেরিকায় আসতে মরিয়া হয়ে ওঠে। আমেরিকায় আসার জন্য সরকারী ছুটিতে আমার টাকায় ব্রিটিশ কাউন্সিল থেকে আই এল টি এস সম্পন্ন করেন। এছাড়াও সরকারি চাকরিজীবি হয়েও সে নিজের পেশাগত পরিচয় আড়াল করে সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে একটি এবং সরকারি চাকুরীজীবি হিসেবে আরও একটি পাসপোর্ট বানায় । একটা সময় পর্যন্ত সবই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু সে আমার সাথে সম্পর্ক চলাকালে একাধিক ছেলের সাথেও অনৈতিক সম্পর্ক তৈরী করে। যা প্রথমে আমি জানতাম না। পরে আসতে আসতে বিভিন্ন মারফৎ ও তার আচরণে বুঝতে পারি। আইইএলটিএস করা কালে তাহেরা একটি ছেলের সাথে সম্পর্কে লিপ্ত হয় এবং তখন থেকে আমার সাথে তার দূরত্ব বাড়তে থাকে। সম্প্রতি দু'এক মাস আগে তাহেরা গোপনে তার থেকে বয়সে ছোট সেই ছেলে কে বিয়ে করে নেয়। সে আমাকে বিয়ের কথা বলে আমার কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আমার সাথে প্রতারণা করেছে। তার এমন আচরণে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। সে আমাকে এই বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে নারী নির্যাতনের মামলা দেবে বলে হুমকি দিচ্ছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন