জালিয়াতির মামলা, ভিয়েতনামের শীর্ষ নারী ব্যবসায়ীর মৃত্যুদণ্ড

আর্থিক জালিয়াতির দায়ে শীর্ষ আবাসন ব্যবসায়ী ও ধনকুবের ট্রুং মাই ল্যানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ভিয়েতনামের একটি আদালত। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার এই মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। ৬৭ বছর বয়সী এই নারীর বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে ৩০৪ ট্রিলিয়ন ডং বা ২৭ বিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। যা  দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জালিয়াতির ঘটনা।

 

ভ্যান থিন ফাট নামে একটি ডেভেলপার কম্পানির প্রধান ট্রুং মাই ল্যান। বৃহস্পতিবার হো চি মিন শহরের আদালতে বিচার শেষে আত্মসাৎ, ঘুষ এবং ব্যাংকিং নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য তার আইনজীবীরা এখন ১৫ দিন সময় পেয়েছেন।

দেশটির কমিউনিস্ট পার্টির সেক্রেটারি জেনারেল নগুয়েন ফু ট্রংয়ের নেতৃত্বে ‘ব্লেজিং ফার্নেস দুর্নীতি’ বিরোধী প্রচারণার এ পর্যন্ত সবচেয়ে নাটকীয় অধ্যায় ছিল এই বিচার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার পরিবারের এক সদস্য রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।’  রায় ঘোষণার আগে তিনি বলেছিলেন, ‘ল্যান এই সাজার বিরুদ্ধে আপিল করবেন।’

 

ল্যানের আইনজীবী নগুয়েন হুই থিয়েপ রয়টার্সকে বলেছেন, ‘অর্থ আত্মসাৎ ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে লান নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।’ তিনি বলেন, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড এবং ঘুষ ও ব্যাংকিং আইন লঙ্ঘনের দুটি অভিযোগে ২০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।

 

৬৭ বছর বয়সী ল্যান ২০১২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বেআইনিভাবে সাইগন জয়েন্ট স্টক কমার্শিয়াল ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করেন। তার উদ্দেশ্য ছিল হাজারো ভৌতিক কম্পানির মাধ্যমে এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে অর্থ তুলে নেওয়া। তার জালিয়াতি করা সম্পদের মূল্য ২০২২ সালে ভিয়েতনামের জিডিপির ৩ শতাংশ।

প্রসিকিউটররা বলছেন, তারা এক হাজারেরও বেশি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছেন।

অভিযোগ অস্বীকার করার পাশাপাশি ল্যান অধস্তনদের দোষারোপ করেন। গত সপ্তাহে আদালতে চূড়ান্ত মন্তব্যে তিনি বলেন, তার আত্মহত্যার চিন্তা ছিল।

 

২০২২ সালের অক্টোবরে ল্যান গ্রেপ্তার হন। ২০১৬ সালে শুরু হওয়া দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে ধরা পড়া প্রভাবশালীদের একজন তিনি। ২০২২ সালে এ অভিযান সর্বোচ্চ সীমায় যায়। মায়ের সঙ্গে প্রসাধনীর ছোট্ট দোকান দিয়ে ট্রুং জীবন শুরু করেছিলেন। ১৯৮৬ সালে কমিউনিস্ট পার্টি অর্থনৈতিক সংস্কারের সূচনা করার পর জমি ও সম্পত্তি কেনা শুরু করেছিলেন, যা ডোই মোই নামে পরিচিত। ১৯৯০-এর দশকে তিনি একটি বড় হোটেল ও রেস্টুরেন্টের মালিক হন। ট্রুংয়ের দখলে থাকা সব জমি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন। রাষ্ট্রীয় বড় কর্মকর্তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে এসব জমি ব্যবহারের সুবিধা। অর্থ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতি বেড়ে যাওয়ায় এসব সম্পত্তি ট্রুংয়ের দখলে চলে যায়।

২০১১ সাল পর্যন্ত ট্রুং মাই ল্যান হো চি মিন সিটির সুপরিচিত ব্যবসায়ী ছিলেন। পরে তাকে তিনটি ছোট ব্যাংককে একটি বৃহত্তর সত্তায় একীভূত করার ব্যবস্থার অনুমতি দেয় সাইগন কমার্শিয়াল ব্যাংক।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন