শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের জামিনের মেয়াদ আগামী ২৩ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। অন্য তিনজন হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান। এ মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল নিষ্পত্তি পর্যন্ত তাঁদের জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল।
আজ মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সে আবেদনে শুনানির পর ঢাকার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) এম এ আউয়াল (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে আদেশ দেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এমাদুল হক বশির। মামলার বাদি পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী।
গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ প্রতিষ্ঠানটির চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ২০২১ সালে মামলা করেছিল কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। গত ১ জানুয়ারি ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা এ মামলার রায় দেন। রায়ে ড. ইউনূসসহ চারজনকে দোষী সাব্যস্ত করে তাঁদের প্রত্যেককে শ্রম আইনের ৩০৩ ও ৩০৭ ধারায় ৬ মাসের কারাদণ্ডের সঙ্গে ৩০ জার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে সেদিন তাঁদের জেলে যেতে হয়নি।
রায় ঘোষণার পর পরই জামিন আবেদন করা হলে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার শর্তে তাঁদের এক মাসের জামিন দেন বিচারক। এ জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন তাঁরা।
গত ২৮ জানুয়ারি ইউনূসসহ দণ্ডিতদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে তাঁদের ৩ মার্চ পর্যন্ত জামিন দেন। সেই সঙ্গে আপিল নিষ্পত্তি পর্যন্ত রায়ের কার্যকারীতা স্থগিত করেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের দণ্ড স্থগিতের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।
এ আবেদনে গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক শুনানির পর রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট। গত ২৮ জানুয়ারি শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া দণ্ড স্থগিতের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। চূড়ান্ত শুনানির পর গত ১৮ মার্চ রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন উচ্চ আদালত। তার আগে গত ৩ মার্চ জামিনের মেয়াদ ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়ে আদেশ দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। সে ধারাবাহিকতায় তাঁদের নিয়মিত জামিন চেয়ে এ আদালতে আবেদন করা হয়।
শুনানিতে আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন ড. ইউনূসসহ চার দণ্ডিতের নিয়মিত জামিন এবং তাঁদের মধ্যে একজনের বিদেশ যাওয়ার অনুমতি চান। সেই সঙ্গে শ্রম আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে তাঁদের আপিল শুনানি মুলতবি চাওয়া হয়। বাদি পক্ষের আপত্তি না থাকায় আদালত শুনারি শুলতবি করে ২৩ মে পর্যন্ত তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন।
আদেশের পর ড. ইউনূসের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইন অনুসারে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করলে নিয়মিত জামিন দেওয়া হয়। অন্য মামলায় এ বিধান অনুসরণ করা হলেও এ মামলায় তা হচ্ছে না।’ আদালত আগামী ২৩ মে পর্যন্ত জামিনের মেয়াদ বাড়িয়েছেন। সে পর্যন্ত আপিল শুনানি মুলতবি করা হয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন