পাঁচটি ভূমধ্যসাগরীয় দেশের মন্ত্রীরা শনিবার যেসব দেশ থেকে অভিবাসী আসে, তাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ‘গভীর’ করার আহ্বান জানিয়েছেন। অভিবাসনের মূল কারণগুলো মোকাবেলায় তহবিল বাড়ানোর আহ্বানও জানিয়েছেন তাঁরা।
গ্রান কানারিয়া দ্বীপে আয়োজিত এই বৈঠকে ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোর জোট মেড-ফাইভের দেশ—সাইপ্রাস, গ্রিস, ইতালি, মাল্টা ও স্পেনের এর স্বরাষ্ট্র ও অভিবাসী বিষয়ক মন্ত্রীরা ১১ এপ্রিল ইইউ পার্লামেন্টে গৃহীত নতুন অভিবাসন ও আশ্রয় চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেন। কয়েক বছর ধরে আলোচনার পর অবশেষে অভিন্ন অভিবাসন নীতির এই চুক্তিতে ব্যাপক সংস্কার আনা হয়।
জোটের ২৭টি দেশের অভিবাসীদের দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়া এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনা আরো কঠোর করার ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে এই চুক্তিতে।
এই চুক্তির ফলে এবার থেকে শুধু গ্রিস ও ইতালির মতো দেশকে শরণার্থীদের ঢল আর একা সামলাতে হবে না। শরণার্থীরাও আর বিচ্ছিন্ন আশ্রয় নীতির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ইইউর একাধিক সদস্য দেশে স্বীকৃতির চেষ্টা চালাতে পারবেন না।
এর আগে ইইউর অধিকাংশ সদস্য দেশের সরকার সেই প্রস্তাব অনুমোদন করেছিল।
ইউরোপীয় কমিশন সেই সব আইন কার্যকর করার উপায় বাতলে দেওয়ার পর ২০২৬ সাল থেকে সেই উদ্যোগ কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে।
চুক্তিটিকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে স্পেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফার্নান্দো গ্রান্দে-মারলাস্কা বলেছেন, ‘এখনো অনেক দীর্ঘ পথ যেতে হবে’ এবং এর সমাধান অভিবাসনের মূল কারণগুলোকে ‘উৎসেই’ মোকাবেলা করতে হবে। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘অভিবাসন ব্যবস্থাপনার মূল চাবিকাঠি দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার মধ্যে নিহিত।’ অনিয়মিত অভিবাসীদের প্রবাহ রোধ করতে ‘তৃতীয় দেশের সঙ্গে অংশীদারি ও চুক্তি আরো গভীর ও প্রসারিত করতে’ তিনি ইউরোপীয় কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বর্তমান নিয়ম অনুসারে অভিবাসীরা প্রথম যে দেশে যান, সেই দেশকেই তাদের আশ্রয় দেওয়ার দায়িত্ব নিতে হয়। তাদের আশ্রয় প্রার্থনার আবেদন যাচাই ও তা অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হলে অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর দায়িত্বও সেই দেশকেই বহন করতে হয়। এই নিয়মের ফলে গ্রিস ও ইতালির মতো ভূমধ্যসাগর পাড়ের দেশগুলোকে বিপুলসংখ্যক অভিবাসীর ঢল মোকাবেলা করতে হচ্ছে। এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে বাড়ছে অভিবাসীবিরোধী ডানপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তাও।
নতুন চুক্তিতে আশ্রয়প্রার্থীদের সীমান্তেই রাখার জন্য সীমান্তকেন্দ্র নির্মাণ ও তাদের কাউকে কাউকে ইইউর বাইরের ‘নিরাপদ’ দেশে ফেরত পাঠানোর নিয়মও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
অভিবাসীবিষয়ক দাতব্য সংস্থা ও এনজিওগুলো এই নিয়মের নিন্দা জানিয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সতর্ক করেছে, নতুন এই আইন ‘বৃহত্তর মানবিক দুর্ভোগ’ সৃষ্টি করতে পারে।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন