ছাতক সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি,
সিলেট বিভাগের ৩৯টি থানার মধ্যে শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নির্বাচিত হয়েছেন।সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার মোহাম্মদ শাহ আলম। গত মঙ্গলবার তাকে এই পুরস্কার দেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি শাহ মিজান শাফিউর রহমান বিপিএম (বার)পিপিএম-সেবা। সিলেটে মাসিক কল্যাণ ও অপরাধ পর্যালোচনা সভায় তাকে এই পুরস্কার দেয়া হয়। মূলত পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশনা মোতাবেক মান দণ্ডের বিচারে গত জানুয়ারি থেকে মার্চ তিন মাসের অপরাধ সভা পর্যালোচনায় সিলেট বিভাগের ৩৯টি থানার মধ্যে শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ শাহ আলম।
সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার ওসি মো. শাহ আলমের কর্মদক্ষতায় বদলে গেছে ছাতক থানার সার্বিক চিত্র। তিনি পেয়েছেন শ্রেষ্ঠত্বের পুরুষ্কার। উন্নতি হচ্ছে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির। সাম্প্রতি থানায় কমতে শুরু করেছে মিথ্যা মামলা রুজুর সংখ্যা। নিয়মিত অভিযানে বেড়েছে পরোয়ানাভুক্ত আসামি গ্রেপ্তারের সংখ্যা। পুলিশের কঠোর নজরদারিতে কমেছে উপজেলায় চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই ও দস্যুতার মতো অপরাধমুলক ঘটনা।
২০ ২৩ সালের ৭ আগষ্টে ছাতক থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ আলম (আইজিপি ব্যাজপ্রাপ্ত) যোগদানের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৯৫টি সাজা পরোয়ানা খারিজ করা হয়েছে ও দুর্ধর্ষ ৬জন আন্তঃজেলা ডাকাত সর্দারকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বছর ও চলতি বছরের জানুয়ারী পর্যন্ত অপরাধ পরিসংখ্যান যাচাই করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।তাছাড়াও বর্তমানে ছাতক থানা দালাল মুক্ত হওয়ায় স্থানীয়রা আইনি সেবা পেতে অনেকটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন সেবা গ্রহীতারা। যার বড় সাফল্য হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন রকমের সংঘাত ছাড়া সুষ্ঠ সুন্দর হয়।
থানার অপরাধ পরিসংখ্যান হিসাব অনুযায়ী শাহ আলমের যোগদানের পর থেকে-২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে ২৪ সালের জানুয়ারী মাস পর্যন্ত কোন ডাকাতি কিংবা দস্যুতার ঘটনা ঘটেনি। খুন ৫টি, ধর্ষণ ৬টি, গবাদি পশু চুরি ১টি, অস্ত্র আইন ৩টি, চোরাচালান ২১টি, মাদক ১২টি, ১৯টি মহিষ উদ্ধার, ২শ বোতল ভারতীয় মদ, ৩০কেজি গাজা, প্রায় ১৩শ বস্তা চিনি ও ১৪০বস্তা পেয়াঁজ জব্দ, যৌতুক,সিধেল চুরি,মোবাইল চুরি,ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন,সড়ক দুর্ঘটনা,১০টি সহ অন্যান্য আইনে ওই বছরের ৬ মাসে মোট মামলা রজু করা হয় ১৩৪টি। নিষ্পত্তি করা হয়েছে ১৭৬টি। একই সময়ে থানা পুলিশের অভিযানে মোট গ্রেপ্তার করা করেন ১৬৮ জনকে। মোট গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করা হয়েছে মোট ৮৫টি। এর মধ্যে জিআর,সিআর মামলায় ৩০টি ও সাজাপ্রাপ্ত ২৮ জন আসামি গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আদালতে মোট নন এফআইআর প্রসিকিউশন দেওয়া হয়েছে ১১০টি। এছাড়াও ভারতীয় পিয়াজ, চিনি, নাসির বিড়ি, গাজা, বিদেশী মদ ও শাড়ী জব্দ করা হয় ১কোটি ২৩লক্ষ ৩২হাজার ৭৩৫টাকার অবৈধ পন্য।
এদিকে, মামলার রুজুর বিষয়ে কঠোর যাচাই-বাছাইর কারণে ইদানিং মিথ্যা মামলা থেকেও রেহাই পাচ্ছেন স্থানীয় জনসাধারণ। পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিতই বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাইকিং এর কারনে বড় রকমের দাঙ্গা-হাঙ্গামার ঘটেনি বলে চলে এছাড়াও এলাকার বিভিন্ন হাট বাজারে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনার কারণে কমেছে হামলা মামলার প্রবণতা। সর্বশেষ চলতি মাসের ৫ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত পুলিশের বিশেষ অভিযানে ভারতীয় পণ্য পিয়াঁজ, চিনি সহ ৭জন আসামিকে গ্রেপ্তারসহ টিউবওয়েল চুরির পণ্য উদ্ধার করা হয়।
থানার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, মাদকদ্রব্য,চোরাচালান, মামলার রহস্য উদঘাটনসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখায় এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায় তাকে শ্রেষ্ঠ হিসেবে পুরুস্কৃত করা হলো। সভায় উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ সহ চার পুলিশ সুপার উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে,এর আগে তিনি রাজধানী ঢাকাস্থ ডিএমপি শাখায় কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ী মাদারীপুর জেলায়।তিনি ২০২৩ সালের (৭ আগষ্ট) ছাতক থানায় যোগদােনের পর বিভাগের শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ হিসেবে পুরুস্কৃত হয়েছেন মোহাম্মদ শাহ আলম।ওসি মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, থানার সব অফিসার ও ফোর্সদের দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই তার এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। সিলেট বিভাগের এই শ্রেষ্ঠত্বের অর্জন ছাতক থানার সকল অফিসার ও ফোর্সকে উৎসর্গ করেন তিনি।####
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন