যুদ্ধবিরতি আলোচনা নতুন করে শুরু করতে এবং হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের ইসরায়েলে ফেরত নেওয়ার অংশ হিসেবে ইসরায়েলে সফর করছে মিসরের একটি প্রতিনিধিদল। ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরায়েলের সর্বশেষ পাল্টা প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে তারা।
বর্তমানে কাতারে অবস্থিত হামাসের ডেপুটি গাজা প্রধান খলিল আল-হাইয়া এপ্রিলে মিসরীয় ও কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের কাছে পেশ করা প্রস্তাব সম্পর্কে বলেন, ‘এই প্রস্তাব পর্যালোচনা করা হবে। সব কিছু খতিয়ে দেখে তারপর প্রতিক্রিয়া জমা দেওয়া হবে।
’
হামাস যদিও এর আগে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পেশ করেছিল। সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েল। গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের ছয় মাসের বেশি সময় পরও অচলাবস্থা কাটেনি। অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির নয়, চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হবে—এই দাবিতে অনড় হামাস।
মধ্যস্থতাকারী মিসর
স্থগিত হয়ে যাওয়া শান্তি প্রক্রিয়া নতুন করে শুরুর চেষ্টা করছে মিসর। মিসরীয় প্রতিনিধিদল আলোচনা ফের শুরু করতে এবং অবশিষ্ট জিম্মিদের উদ্ধারের চেষ্টার অংশ হিসেবে ইসরায়েলে পৌঁছেছেন।
ইসরায়েলের অনুমান, গাজায় হামাস ১৩০ জনকে জিম্মি করে রেখেছে। এদের মধ্যে ৩৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানায় দেশটির সামরিক বাহিনী।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানায়, মিসরীয় প্রতিনিধিদলের সফরের আগে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির বিকল্পগুলো নিয়ে আলোচনা করেছে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। গণমাধ্যমে ওই কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
এদিকে শুক্রবার হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান জানান, এ যুদ্ধ শেষ করতে এবং বাকি জিম্মিদের ফিরিয়ে নেওয়ার আলোচনায় নতুন মাত্রা দেখেছেন তিনি।
জার্মানি, যু্ক্তরাষ্ট্রসহ অন্তত ১৫টি দেশ চলমান সংঘাত অবসানের পথ হিসেবে বাকি জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
রাফাহ ঘিরে সামরিক পরিকল্পনা
যুদ্ধবিরতি আলোচনা ফের শুরু করার চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহতে ইসরায়েলি বিমান হামলার কথা জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী।
হামাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গাজি হামাদ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, এ ধরনের যেকোনো অভিযান ‘নিঃসন্দেহে আলোচনাকে হুমকির মুখে ফেলবে’। তিনি আরো বলেন, ‘ইসরায়েল যুদ্ধ চালিয়ে যেতে আগ্রহী।’
রাফাহতে আশ্রয় নেওয়া কয়েক হাজার বাস্তুচ্যুত বেসামরিক নাগরিকের উপস্থিতির কারণে এই পরিকল্পনা ঘিরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধিতা রয়েছে।
দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এই হামলায় এক হাজার ২০০ জন মানুষ নিহত হয় এবং প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি করা হয়।
গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, ইসরায়েলের পাল্টা সামরিক অভিযানের ফলে গাজায় কমপক্ষে ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, গাজার বিস্তীর্ণ এলাকা এখন প্রায় তিন কোটি ৭০ লাখ টন ধ্বংসাবশেষে আচ্ছাদিত, যা অপসারণ করতে কয়েক বছর সময় লাগবে।
আর বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বলেছে, গাজায় দুর্ভিক্ষ একটি বাস্তবতা। এটা বিপজ্জনক হুমকি।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন