লন্ডনে ব্রিটিশ-বাংলাদেশী সাংবাদিকদের সাথে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীর মতবিনিময়

লন্ডন:

 বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী ও সিলেটের-২ আসনের এমপি এবং জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, সাড়া বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশের প্রবাসী জনগোষ্ঠির সুবিধা-অসুবিধা দেখভাল করার দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমার মতো একজন ছোটখাটো কর্মীর উপর যে আস্থা রেখেছেন আমার নেত্রী এটিই আমার বড় পাওয়া এখানে মন্ত্রী পদ মূখ্য নয়।  শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল লন্ডনে নিজেদের পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাঙালির স্বাধিকার ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজরিত এবং বঙ্গবন্ধুর পদস্পর্শে ধন্য ঐতিহাসিক দিলচাঁদ রেষ্টুরেন্টে বিলেতের বাংলা সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় উপরোক্ত মন্তব্য করেন তিনি। প্রবাসী কল্যান প্রতিমন্ত্রী বলেন রাজনীতিতে কোন পদ পেলাম সেটি বড় কথা নয়, বড় কথা হলো দলীয় প্রধান যে আস্থা নিয়ে দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই আস্থার মর্যাদা রাখতে পারলাম কি না। ব্রিটেন প্রবাসীদের সুখ-দুঃখে দীর্ঘদিন তাদের পাশে ছিলাম বলেই হয়তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মনে করেছেন প্রবাসীদের দেখভালে আমি ভূমিকা রাখতে পারবো। আর এই বিশ্বাস থেকেই তিনি আমাকে প্রবাসী কল্যান মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি এই দায়িত্বকে মন্ত্রী পদপ্রাপ্তী হিসেবে দেখছিনা, দেখছি এক গুরু দায়িত্ব হিসেবে। আমার প্রতি নেত্রী যে আস্থা দেখিয়েছেন, সেই আস্থার মর্যাদা রাখতে আজ আমি আপনাদের সহযোগিতা প্রত্যাশি।  শফিক চৌধুরী বলেন, সরব ঐক্যবদ্ধতা না থাকলে সমস্যা সমাধান করা যায়না, আন্দোলনের একজন দীর্ঘদিনের মাটকর্মী হিসেবে এটি আমার অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম যোগানদাতা প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলা করেই এগিয়ে যেতে হচ্ছে। দেশে পৌছার পর বিমান বন্দরে হয়রানী, দেশে জায়গা জমি বেদখল ইত্যাদি সমস্যার পাশাপাশি এই বিদেশেও সমস্যা রয়েছে প্রবাসীদের। আমাদের পূর্ব প্রজন্মের দিয়ে যাওয়া কারী ইন্ডাষ্ট্রি আজ লোকবলের অভাবে ঠিকে থাকতে পারছে না। সময়ের বাস্তবতায় এদেশে জন্ম ও বেড়ে ওঠা আমাদের বর্তমান প্রজন্ম আমাদের কারী ইন্ডাষ্ট্রির হাল ধরতে পারছে না। প্রতিটি সমস্যার পাহাড় ডিঙ্গাতে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার বিকল্প নেই। নিজের শিকড়ভূমিতে সৃষ্ট সমস্যাগুলো দীর্ঘদিন যাবত অব্যাহত থাকায় তা এখন অনেক টা শক্ত পাহাড় হয়ে দাড়িয়েছে, এই পাহাড় সরিয়ে ফেলা কঠিন হলেও কাউকে না কাউকেতো কাজ শুরু করতে হবে। শফিক চৌধুরী বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশির্বাদ নিয়ে এবং দেশী-প্রবাসী সবার সহযোগিতায় আমি সেটি করতে চাই।  তিনি বলেন, শুধু দেশের সমস্যা নয়, এই ব্রিটেনে  কারী ইন্ডাষ্ট্রির সমস্যা নিয়েও আমাদের আন্দোলন করতে হবে। এই আন্দোলনেও অতীতের মত আপনাদের পাশে আমাকেও রাখবেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, কারী ইন্ডাষ্ট্রি চালু রাখতে দেশ থেকে দক্ষ জনবল নিয়ে আসার পথ সুগম করতে ব্রিটিশ সরকারের উপর আমাদের চাপ অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি জানান, এমন দক্ষ জনবল তৈরীতে কাজ করছে বাংলাদেশ সরকার। এখন পর্যন্ত ১শ ৪টি প্রশিক্ষন কেন্দ্রে তৈরী হচ্ছে এই জনবল। আরও ৫০টি প্রশিক্ষন কেন্দ্র তৈরী করা হচ্ছে। যেকোন অসংগতি, অব্যবস্থাপনা ধরিয়ে দিতে সাংবাদিকদের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রবাসী কল্যান মন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের বিবেক। তাঁরা সরকারের ভুলত্রুটিগুলো যেমন তুলে ধরবেন, ঠিক তেমনি ইতিবাচক দিকগুলোও তুলে ধরবেন, এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা। উন্নয়নসহ ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরা মানে সরকারের পক্ষ নেয়া নয়, সংশ্লিষ্টদের কাজের স্প্রীহা বাড়ানো। ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরলে সংশ্লিষ্টদের কাজের স্প্রীহা বাড়ে। এতে লাভবান হয় দেশ, দেশের জনগন। মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটেনে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। তিনি বিলেতের কমিউনিটি উন্নয়নে শফিক চৌধুরীর ভূমিকার কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বলেন, এমন একজন ব্যক্তিকে দেশের কাজে লাগিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, যিনি তৃণমূল থেকে জনগনের সেবা করে আসছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। মতবিনিময়ে উপস্থিত যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি ব্রিটিনে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান শরীফ বলেন, আজকের এই সভাকে মতবিনিময় না বলে আমরা ভালোবাসা বিনিময় বলতে পারি। কারন শফিক চৌধুরী মন্ত্রী হোন বা না হোন, লন্ডনে আসলে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজরিত তাদের এই পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডেকে এনে আমাদের ভুরিভোজ করানো তাঁর একটি নিয়মিত দায়িত্ব বলেই আমরা দেখে এসেছি। তিনি বলেন, দেশপ্রেম ও কমিউনিটি প্রেম বুকে নিয়ে কাজের মাধ্যমে তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায়ে উঠে আসা শফিক চৌধুরী সম্পর্কে আমি এই নিশ্চয়তা দিতে পারি যে, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে নিরাশ করবেন না, তিনি নিরাশ করবেন না আমাদেরকেও। দায়িত্ব পালনে আমি তাঁর সফলতা কামনা করি। যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক শাহ শামিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাই কমিশনের মিনিষ্টার (প্রেস) আশিক উন নবী চৌধুরী, কাউন্সেলর আ্যাটাশে তাহজুদ হোসেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, সহসভাপতি হরমুজ আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ চৌধুরীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।  সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউকে বাংলারিপোর্টার্স ইউনিটি ও লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের নেত্রীবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বিপুল সংখ্যক সাংবাদিক।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন