গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি নিয়ে ‘আশাবাদী’ ব্লিনকেন

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন সোমবার বলেছেন, তিনি আশাবাদী যে জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান ধ্বংসাত্মক আক্রমণ বন্ধে হামাস একটি ‘অসাধারণ উদার’ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করবে।

রিয়াদে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্যানেলকে শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক বলেন, ‘হামাসকে অবশ্যই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যুদ্ধবিরতির জন্য অসাধারণ উদার প্রস্তাব গ্রহণ করবে কি না দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমি আশাবাদী, তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে এবং আমরা গতিশীলতায় একটি মৌলিক পরিবর্তন আনতে পারব।

 

ছয় মাসের যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের হাতে বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির জন্য নতুন কূটনৈতিক চাপের মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের মিসরীয় প্রতিনিধিদল গত শুক্রবার আলোচনার জন্য ইসরায়েলে যায়।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের নেতৃত্বাধীন হামলার পর গাজায় শুরু হওয়া সংঘাতের ফলে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। পাশাপাশি অবরুদ্ধ ভূখণ্ডের ৭৫ শতাংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

মিসর ও কাতারকে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে ব্লিনকেন বলেন, ‘আমরা অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছি, সংঘর্ষের অবসান ঘটাতে চেষ্টা করছি, এটি যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি এবং এর সবটাই একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা।

গাজা সংঘাতের অবসান ঘটানোর দ্রুততম উপায় হলো একটি যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তি পাওয়া।’

 

ব্লিনকেন বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি না করা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা ছাড়া গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহতে আসন্ন ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের মার্কিন বিরোধিতাও পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ইসরায়েল কয়েক সপ্তাহ ধরে হামাসের অবশিষ্ট বাহিনীকে ধ্বংস করতে গাজায় সর্বাত্মক আক্রমণ চালানোর হুমকি দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো এমন কোনো পরিকল্পনা দেখিনি, যা বেসামরিক নাগরিকদের কার্যকরভাবে সুরক্ষিত করার বিষয়ে আমাদের আত্মবিশ্বাস দেবে।

 

 

এদিকে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এক দিন আগে বলেছেন, রাফাহতে ইসরায়েলের দীর্ঘ শঙ্কিত আগ্রাসন ঠেকাতে ‘একমাত্র সক্ষম দেশ’ যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে বর্তমানে ১৫ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি বসবাস করছে। তিনি আরো বলেন, রাফাহতে শুধু একটি ‘ছোট হামলা’ ফিলিস্তিনি জনগণকে গাজা উপত্যকা থেকে পালাতে বাধ্য করবে এবং ‘তখন ফিলিস্তিনি জনগণের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয় ঘটবে।’

 

ব্লিনকেন বলেছিলেন, ‘গাজার জন্য নিরাপত্তা, শাসন ও প্রশাসন এবং মানবিক ও পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে যা করণীয় তা অন্তর্ভুক্ত করতে একটি পরবর্তী পরিকল্পনার জন্য প্রস্তুত হওয়া দরকার। এটি নিয়ে অনেক কাজ করা হয়েছে, আরো কাজ করা দরকার।’

এ ছাড়াও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ইরান ও হামাস—উভয়ের জন্যই একমাত্র সবচেয়ে বড় তিরস্কার হবে এই অঞ্চলের প্রতিটি দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের স্বাভাবিক সম্পর্ক এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের উপলব্ধি।

সৌদি আরব ও ইসরায়েলের (সম্পর্ক) স্বাভাবিককরণ চুক্তিতে মনযোগ দিতে ওয়াশিংটন ও রিয়াদ কয়েক মাস ধরে একসঙ্গে দৃঢ়ভাবে কাজ করেছে। আমি মনে করি, এটি সম্ভাব্যভাবে সমাপ্তির কাছাকাছি। কিন্তু স্বাভাবিককরণের জন্য এগিয়ে যেতে...দুটি জিনিসের প্রয়োজন হবে—গাজায় শান্তি ও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের দিকে একটি বিশ্বাসযোগ্য পথ।’

 

ব্লিনকেন এর আগে মার্কিন-গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের বৈঠকের উদ্বোধনে যোগ দেন। সেখানে তিনি এই অঞ্চলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বলেন, গাজায় মানবিক বিপর্যয় কমানোর সর্বোত্তম উপায় হলো একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে আলোচনা করা, যা হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তি দেবে। সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের সঙ্গে আলাদাভাবে দেখা করেছেন। তাঁরা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে যৌথ সহযোগিতা জোরদার করার উপায় পর্যালোচনা করেছেন।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন