বর্বর ইসরায়েলি হামলায় বিপর্যস্ত ফিলিস্তিন। একের পর এক হামলায় মাটিতে মিশে গেছে মানুষের ঘর-বাড়িসহ বহু অবকাঠামো। জাতিসংঘ বলছে,গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী পুনর্গঠনের জন্য ৪০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত খরচ হতে পারে। এ ছাড়া পুনর্গঠনের জন্য আর্ন্তজাতিক সাহায্য প্রয়োজন পড়বে যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে আর দেখা যায়নি।
হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ বর্তমানে একটি সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করেছেন এবং তিনি এ বিষয়ে আশাবাদী। এমন সময়ে জাতিসংঘ ফিলিস্তিন পুনর্গঠনের সম্ভব্য খরচ সবার সামনে আনল। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে প্রায় সাত মাস ধরে ইসরায়েল সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। ফলে গাজার বেশিরভাগ অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণিত হয়েছে।
জাতিসংঘ ধারণা করছে, পুনর্গঠনের ব্যয় ৩০ বিলিয়ন থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে থাকবে।
জর্ডানের রাজধানী আম্মানে এক ব্রিফিংয়ে সহকারী সেক্রেটারি-জেনারেল আবদুল্লাহ আল-দারদারি বলেন, ‘ধ্বংসের মাত্রা বিশাল এবং নজিরবিহীন... এটি এমন কাজ যা বিশ্ব সম্প্রদায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে আর মোকাবেলা করেনি।’ তিনি আরো বলেন, ‘সব আবাসিক ভবনের ৭২ শতাংশ সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।’ গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি বলছে, “প্রতি সপ্তাহে ১০টির বেশি বিস্ফোরণ ঘটেছে।
এ ছাড়া প্রচুর পরিমাণে অবিস্ফোরিত অস্ত্রের উপস্থিতি রয়েছে সেখানে। যা পুনর্গঠন আরো কঠিন হয়ে পড়েছে।”
এ ছাড়া বিধ্বস্ত বাড়িঘর পুনর্নির্মাণে প্রায় ৮০ বছর সময় লাগতে পারে। গত বৃহস্পতিবার (২ মে) জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছিল। তবে ২০২১ সালের সর্বশেষ সংকটের তুলনায় পাঁচগুণ দ্রুত নির্মাণসামগ্রী সরবরাহ করা হলে ২০৪০ সালের মধ্যে এটি পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে।
ইউএনডিপি প্রশাসক আচিম স্টেইনার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘প্রাণহানির নজিরবিহীন মাত্রা, পুঁজির ধ্বংস এবং এত অল্প সময়ের মধ্যে দারিদ্র্যের তীব্র বৃদ্ধি গুরুতর উন্নয়ন সংকট সৃষ্টি করবে, যা আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যতকে হুমকির মুখে ফেলবে।’
ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যানের এএফপি-এর সমীক্ষা অনুসারে, ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়। ওই হামলায় ১ হাজার ১৭০ জন ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হয়। ইসরায়েল আরো জানায়, হামাস ১২৯ জনকে জিম্মি করে নিয়ে গেছে, যাদের মধ্যে ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। জবাবে ইসরায়েল পাল্টা হামলা শুরু করে গাজায় এবং ৩৪ হাজার ৫৯৬ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে। হামাস পরিচালিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুসারে, যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন