কাজাখস্তানের সাবেক এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে উঠেছে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। গত বছরের ৯ নভেম্বর দেশটির একটি রেস্তোরাঁয় এই রোমহর্ষক ঘটনা ঘটে।
কাজাখাস্তানের সবচেয়ে বড় শহর আলমাতির একটি রেস্তোরাঁয় দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী বিশিমবায়েভের স্ত্রী ৩১ বছর বয়সী সালতানাত নুকেনোভার মরদেহ পাওয়া যায়।
রেস্তোরাঁটি ছিল বিশিমবায়েভের এক আত্মীয়ের মালিকানাধীন। মারা যাওয়ার আগে স্বামী-স্ত্রী সেখানে একদিন সময় কাটিয়েছিলেন। এর পরেই ওই সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর মৃতদেহ পাওয়া যায়। তবে রেস্তোরাঁর সিসিটিভি ফুটেছে ধরা পড়েছে অনেক কিছু।
এই মামলার শুনানিতে আদালতে পেশ করা হয়েছে সেই সিসিটিভি ফুটেজ। সালতানাতকে তার স্বামীর মারধরের আট ঘণ্টার দীর্ঘ ওই ভিডিও দেখানো হয় আদালতে। সেখানে দেখা যায়, ৪৪ বছর বয়সী কাজাখ অর্থমন্ত্রী বিশিমবায়েভ তার স্ত্রীকে বারবার লাথি ও ঘুষি মারছেন। ভিডিওতে স্ত্রীকে চুল ধরে টেনে অন্য একটি রুমেও নিয়ে যেতে দেখা যায়।
আদালতে সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, স্বামীর হাত থেকে বাঁচতে শৌচালয়ে গিয়ে লুকিয়েছিলেন সালতানাত। দরজা ভেঙে তাকে সেখান থেকে বের করে এনে মারধর শুরু করেন সাবেক মন্ত্রী।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন সালতানাত। কয়েক ঘণ্টা ধরে সে অজ্ঞান ছিল। অবশেষে একটি অ্যাম্বুলেন্স ও মেডিক্যাল কর্মীরা ১২ ঘন্টা পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং পরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে লেখা হয়েছে, সালতানাত মস্তিষ্কের আঘাতের কারণে মারা গেছেন। নাকের হাড় ভেঙে যায় তার। এ ছাড়া তার মুখে, মাথায়, বাহু ও হাতে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
বিশিমবায়েভের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে এবং তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। হত্যার পুরো বিচার সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ দেখানো হয়েছে। যা জনসাধারণের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
অনেকে বিশিমবায়েভকে দেশের ধনী শাসক গোষ্ঠীর একজন সাধারণ সদস্য হিসেবে দেখেন। দোষী সাব্যস্ত হলেও তিনি কোনোভাবে তার শাস্তি এড়িয়ে যেতে পারেন। এর আগেও বিশিমবায়েভকে ঘুষের অভিযোগে ২০১৭ সালে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং ১০ বছরের কারাদণ্ডও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিন বছরেরও কম সময়ের মধ্যে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন