এম এ জলিল ||
৩ মে ২০২৪ বিশ্বের গণমাধ্যম মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি বিশ্বের ও সকল দেশের গণমাধ্যমের প্রতিষ্ঠান এবং সংগঠকরা আলোকিত ভাবে সাফল্যের সাথে পালন করে চলছে। গণমাধ্যমকে বিশে^র মানবতাবাদি মানবিক গণতান্ত্রিক আইনের শাসন ও সম্প্রীতির সংগঠন। প্রতিষ্ঠান গুলোকে সমাজ দেশ ও বিশ^ যাতে ভালভাবে পরিচালিত হয় বিশেষ ভাবে সমাজ দেশ ও বিশ^ যে সব জনতা স্বদেশের ও বিশে^র নিয়মনীতি ভোগ করতে পারে তার পক্ষে কাজ করে থাকে গণমাধ্যম। আর এই নিয়মনীতি না মেনে দেশ ও বিশ^ পরিচালনা করে যে সব সরকার ও সন্ত্রাসীরা সাধারণ নিরিহ অসহায় লোকদের তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে তার আধুনিক বিশে^র কলংক মানবতা মানবিক বিরোধী তাদের বিরুদ্ধে গণমাধ্যম কাজ করে থাকে সাহসীকতার সাথে জীবন বাজি রেখে। কিন্তু বাংলাদেশের বাঙালিদের গণমাধ্যম নিয়া একটি বড় অভিজ্ঞতা আছে। সেটি হলো সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেতৃত্ব দিয়া ১৯৭০ সালের সংসদ নির্বাচনে পাকিস্তানের ৩শত আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসনে জয়যুক্ত হয়েছে। কিন্তু বাঙালিদের নেতা বঙ্গবন্ধুর কাছে ক্ষমতা না দিয়া তখনকার পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ইয়াহিয়া খান বাঙালিদের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয় অন্যায়ভাবে। বিশে^র চিরচরিত্র গণতন্ত্র নিয়মনীতি নির্বাচন ও নির্বাচনের ফল না মেনে যুদ্ধ চাপিয়ে দেই। সেই মূহুর্তে গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের সকল গণমাধ্যম এবং বিশে^র গণমাধ্যম বিশেষভাবে জীবন বাজি রেখে বিবিসির সাংবাদিক সাইমুম ড্রিংস পালিয়ে পালিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করে বিবিসিতে প্রচার করে এই সংবাদের মাধ্যমে বিশে^র মানবতাবাদি মানবিক দেশ সহ বিশ^বাসী জানতে পারে বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ কালো রাতে কি হয়েছে কি ঘটেছে তা জানতে পায়। এর পরই বিশ^বাসী বিশেষভাবে মানবিক ভারত ও রাশিয়ার সরকার বাংলাদেশের পক্ষ অবলম্বন করে। করার পর ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলার সময় স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ৪ ডিসেম্বর ভূটান ও ৬ ডিসেম্বর ভারত ও রাশিয়া বাংলাদেশের পক্ষে ৩ বার ভেটো দেয়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ও পাকিস্তানের সামরিক শাসকদের বর্বরতার বিরুদ্ধে। এই সবের পিছনে ছিল গণমাধ্যম। বিশেষভাবে ভারতের আকাশবাণি ও বিবিসি সহ বিশে^র মানবিক গণমাধ্যমগুলো। বাঙালিদের মাতৃভাষা রক্ষা ও বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে দৈনিক আজাদ পত্রিকা বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে। ১৯৪৬, ৪৭, ৪৮, ৪৯, ৫০,৫১ ও ৫২ সালে বাঙালিদের জাগরণের পক্ষে বিশেষ ভূমিকা রাখে দৈনিক ইত্তেফাক। ১৯৫৪ সালে হক ভাসানী সোহরাওয়ার্দী যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে। যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের মাধ্যমে শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী হন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী হইয়া বাঙালিদের বর্ষ গণনার প্রথম মাস বৈশাখ মাসের ১ লা বৈশাখ ও বাঙালিদের ভাষা শহীদ দিবস ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারী সরকারী ছুটি ঘোষণা এবং বাংলা ভাষা বিরোধী নূরুল আমিনের সরকারি বাসভবন বর্ধমান হাউসকে বাংলা একাডেমি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বাঙালিদের জাগরণ ঠেকাতে না পেরে সেই জাগরণ ঠেকানোর জন্য ইসকান্দর মির্জা ও আউয়ুব খান ষড়যন্ত্র শুরু করেন। ইসকান্দর মির্জাকে ব্যবহার করে পরে ইসকান্দর মির্জাকে তাড়িয়ে আউয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করেন এবং অন্যায়ভাবে নির্বাচন গণতন্ত্রকে উপেক্ষা করে সামরিক শাসন জারী করে বাঙালিদের জননন্দিত নেতা ভাসানীকে কারাগারে নেন। আউয়ুব এর সামরিক শাসন বিরোধী এবং দেশের গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনের জন্য আন্দোলন শুরু করেন বাঙালিদের প্রিয় নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। সামরিক জান্তার শাসক আউব এর শিক্ষানীতির প্রতিবাদ করেন বাঙালিদের অন্যতম নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬২ সালে এবং শিক্ষা আন্দোলনে দৈনিক ইত্তেফাকের বিশেষ ভূমিকা ছিল। পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পূর্বে বাংলার যে সব নেতা বিশেষ ভূমিকা পালন করে তারা হলো শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক, আবুল হাসেম, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানাী ও যুবনেতা শেখ মুজিবুর রহমান এইসব নেতাদের মূল্যায়ন না করে অন্যায় ভাবে শাষন শোষন নির্যাতন করে, দেশ পরিচালনা করছিল মৌলিক গণতন্ত্রের মাধ্যমে সামরিক জান্তা আউব শাহীী সেই মূহুর্তে বাঙালিদের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালিরদের মুক্তির সনদ ৬ দফা ঘোষণা করেন। এই ৬ দফার পক্ষ নেন গণমাধ্যমে একটি বিশেষ পত্রিকা দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ও দৈনিক ইত্তেফাক। এই সমর্থনের মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি জাতির ঐক্য হয়। দৈনিক ইত্তেফাকের প্রচারের মাধ্যমে ৬৯ গণঅভ্যুত্থান, ৭০ নির্বাচন, ৭১ মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন। ইহার পিছনে দৈনিক ইত্তেফাকের ভূমিকা অনন্য। বর্তমানে বাংলাদেশে ৩ হাজার পত্রিকা আছে। কিন্তু জাতি ও জনগণের দূর্ভাগ্য ১৯৯০সাল পর্যন্ত যেভাবে জনগণের চাহিদা পূরণ করেছে গণমাধ্যম, সেভাবে এখন আর সেই সংবাদ বা সেবা পাচ্ছে না
গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে। আমরা জনগণ সামাজিক সংগঠন রাজনৈতিক সংগঠন ডাক যোগে পত্রিকা অফিসে সংগঠন বিভিন্ন সমিতি ও রাজনৈতিক সংগঠনের সংবাদ পাঠিয়েছি তা সেই পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। আজ আমরা ই—মেইল পাঠালেও ছাপ হয় না। পূর্বে প্রতিটি পত্রিকায় দুইটি কলাম থাকতো একটি আজকের ঢাকা বা সারা বাংলাদেশের কোন অনুষ্ঠান হবে তার সংবাদ এবং সেই সব সংগঠনের সাংবাদ প্রচারিত হতো। বাঙালি জাতিকে জাগরিত করেছে শেরে বাংলা তার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী অনুষ্ঠান সংবাদ ও প্রচার হয় না এটা জাতি ও দেশের দুঃর্ভাগ্য। তার পরও আমরা গণমাধ্যমের কাছে কৃতজ্ঞ। গণমাধ্যম সমাজ দেশের ও বিশে^র সকল অন্যায় অত্যাচারের ঘটনা গুলো প্রচার করে জনগণকে জাগরিত করে। দেশের সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ দুর্নীতি ঘুষ মাদক পলিথিন পয়ঃবর্জ মাদকমুক্ত করার জন্য সাহসী ভুমিকা পালন করে, নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নতুন নেতা নির্বাচিত হয়, এই জন্যই জনগণ গণমাধ্যমের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আসুন আমরা গণমাধ্যমের এমন স্বাধীনতা দেই যার মাধ্যমে জনগণ তাদের অধিকার পায় এবং মৌলিক অধিকার ভোগ করতে পারে অসহায় গরীব জনগণ যাতে সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পায়।
যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলার জনগণ দেখেছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন